নেপালে মহাবিপন্ন প্রজাতিগুলোর সংখ্যা বাড়ছে

যখন গত শতকে সারা দুনিয়ার চমৎকার স্তন্যপায়ি প্রাণী যেমন, গণ্ডার, হাতি, বাঘ, সিংহের পরিমাণ কমেছে তখন প্রাণি রক্ষার উজ্জ্বল জায়গাগুলো খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। একমাত্র নেপাল এর ব্যতিক্রম।

গণ্ডার শিকারের জন্য পৃথিবীতে ২০১৩ সাল ছিলো গত দশকের সবচেয়ে বাজে বছর। কিন্তু গত বছরে নেপালে এশিয় এক শৃঙ্গি গণ্ডারের ক্ষেত্রে একটিও শিকারের ঘটনা ঘটেনি এবং তাদের সংখ্যা বেড়েছে। যেখানে বাঘ শিকার পৃথিবীতে তাদের হাড়ের কারণে বাড়ছে সেখানে নেপালে বাঘের সংখ্যা বাড়ছে। পৃথিবীর মহাবিপন্ন অনেক প্রজাতিই নেপালে ধীরে ধীরে সংরক্ষণের কারণে সংখ্যায় বৃদ্ধি পাচ্ছে। যেখানে সারা দুনিয়ায় গণ্ডারের শিকার বেড়েছে এবং সব দেশেই গণ্ডার কমছে সেখানে গত বছর নেপালে মাত্র ১টি গণ্ডারকে শিকারিরা মারতে পেরেছে। নেপালে চিতাবাঘ, বাংলা বাঘ এবং এশিয় হাতির সংখ্যা বেড়েছে এবং মানুষ এসব প্রাণির দ্বারা আক্রান্তও হচ্ছে ইদানিং।

নেপালে মহাবিপন্ন প্রাণীগুলোকে মানুষ-প্রাণি মিথস্ক্রিয়া বেড়েছে, বাঘ, গণ্ডার, হাতি, চিতার সংখ্যা বেড়েছে এবং ফলে তাদের ভেতরে সংঘাতও বাড়ছে। এর ভেতরেই চিতাবাঘ রক্ষাকারি ব্যক্তিবর্গ আশা করছেন সংরক্ষিত অঞ্চলের পার্শ্বব র্তি এলাকা থেকে জনগণকে সরিয়ে ফেলার চিন্তা করছেন। নেপালি বন মন্ত্রণালয়ের মুখপত্র কৃষ্ণ আচার্য বিবিসিকে জানিয়েছেন বন্যপ্রাণির দ্বারা আক্রান্ত হয়ে বছরে ৩০ জন মারা গেলেও গত কয়েক বছরে মৃত্যুর হার বেড়েছে।
আনন্দের সংবাদ হচ্ছে নেপাল প্রাণবৈচিত্র্য সংরক্ষণকে গুরুত্বের সাথে নিয়েছে এবং তারা সফলতার মুখ দেখেছে। নেপাল পারছে তার প্রাণবৈচিত্রের সমৃদ্ধিতে অবদান রাখতে। জীবের বিলুপ্তির অন্যতম কারণ হচ্ছে বিচরণভূমি কমে যাওয়া। তাই বন্যপ্রাণির জন্য বনভূমি রক্ষায় মূল কথা। আর বনভূমি বাঁচাতে পারলেই বন্যপ্রাণি বাঁচবে। খবর মাদারবোর্ড ভাইসডটকমের

এছাড়া নেপালের বিজ্ঞানীরা লক্ষ্য করেছেন যে বাঘরা তাদের টেরিটোরিতে মানুষের আনাগোনা বেড়ে যাওয়ায় নিজেদের আচরণে পরিবর্তন আনতে শুরু করেছে। সাধারণত বাঘরা দিনে রাতে নিজেদের টেরিটোরিতে শিকার করে ও টহল দিয়ে বেড়ায়। চিতওয়ান ন্যাশনাল পার্কে দেখা গেছে বাঘেরা ক্রমাগত নিশাচর হয়ে পড়ছে। মানুষের সাথে কোনো সংঘর্ষ যাতে না বাধে সে জন্য তারা দিনে বের হওয়া প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে। কোনো পক্ষের বড় কোনো ক্ষতিসাধন ছাড়া বাঘ ও মানুষ এক এলাকায় থাকতে পারে না।

আরো পড়ুন:  ভারতে ২০১২ সালের প্রথম ৯ মাসে ৬৯ বাঘ ও ৩৯ গণ্ডারের মৃত্যু

অন্য এক খবরে জানা যাচ্ছে নেপালে শতকরা ৬৩.৬ ভাগ বেড়েছে বাংলা বাঘের সংখ্যা। টাইমস অফ ইণ্ডিয়ার ৩১ জুলাই ২০১৩ থেকে জানা যায় বন্য রাজকীয় বাংলা বাঘের সংখ্যা ১৯৮টিতে উন্নীত হয়েছে। এই গণনা বাংলা বাঘের বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার ক্ষেত্রে আশাবাদ জাগায়।

জীববৈচিত্র বাঁচাতে নেপাল পারে, আমরা কী ভাবছি আমাদের বাংলাদেশ পারে না কেন?

রচনাকালঃ ১৯ জানুয়ারি, ২০১৩, প্রথম প্রকাশ প্রাণকাকলিতে।

Leave a Comment

error: Content is protected !!