বৈজ্ঞানিক নাম: Calophyllum polyanthum
সমনাম: Calophyllum williamsianum Craib; Calophyllum smilesianum var. lutea Craib; Calophyllum smilesianum Craib; Calophyllum elatum Beddome; Calophyllum angustifolium Dalz. & Gibs.; Calophyllum amoenum Wall. ex Choisy.
বাংলা ও স্থানীয় নাম: কামদেব (চট্টগ্রাম), চান্দুয়া, তৈলো (সিলেট), কিরোলি, ক্যান, জইতো, পুনাগ, কারাইডোন বা কেরেংডুয়া (মগ)
ইংরেজি নাম:
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae – Plants
উপশ্রেণি: Rosids
বর্গ: Malpighiales
পরিবার: Calophyllaceae
গণ: Calophyllum
প্রজাতি: Calophyllum polyanthum Wall. ex Choisy
বিবরণ: কামদেব মাঝারি থেকে বড় আকৃতির চিরসবুজ বৃক্ষ, উচ্চতায় ৪৫ মিটার পর্যন্ত হয়। এদের গুঁড়ি বা কাণ্ড সরল, সোজা, সিলিন্ডাকৃতি এবং বাকল অমসৃণ, বাদামি বা কালো বর্ণের ও বহিরাবরণ লম্বালম্বি খাঁজযুক্ত। বাকল থেকে হলুদাভ কষ পাওয়া যায় যা এরোমেটিক গামে পরিণত হয়। এর ডালপালাগুলো চার-কোণা বিশিষ্ট। এই বৃক্ষের পাতা পুরু, লম্বায় ৬-১২ সেন্টিমিটার, কিনারা মসৃণ এবং আগা সূচালো। এই গাছে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে লম্বাটে শাখা বিশিষ্ট পুষ্পবিন্যাসে অসংখ্য সুগন্ধি ফুল ফোটে। এদের ফল ড্রুপ জাতীয়, লম্বায় প্রায় ২.৫ সেন্টিমিটার, ঝুলন্ত ও রসালো এবং খাওয়ার উপযোগী। জুন-জুলাই মাসে ফল পাকে। বীজ ডিম্বাকৃতি ও বাদামি বর্ণ।
ভৌগোলিক বিস্তৃতি: বাংলাদেশ, ভারত, থাইল্যান্ড ও চীনে কামদেব বৃক্ষ পাওয়া যায়।
বাংলাদেশে অস্তিত্বমূলক অবস্থা: বাংলাদেশে কামদেব একটি মহাবিপন্ন (Critically Endangered) দেশিয় প্রজাতির বিরল গাছ। ২০১২ সালের প্রণীত বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে কামদেব গাছ রক্ষিত উদ্ভিদ (Protected Plant) হিসেবে বিবেচিত।
বাংলাদেশে বিস্তৃতি ও প্রাপ্তিস্থান: আমদের দেশে কামদেব গাছ ইদানীং খুব একটা দেখা যায় না। চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও সিলেট অঞ্চলের স্থানীয় গাছ। এ সকল বনাঞ্চলে প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো অল্প কিছু গাছ বিক্ষিপ্তভাবে দেখা যায়। ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানে লাগানো কামদেবের তিনটি গাছ রয়েছে। তবে কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের ঈদগড় রেঞ্জের বাইশারি বিট অফিসের পাশে প্রায় ৪৫ ফুট লম্ভা এবং ৫ ফুট বেড়ের একটি কামদেব গাছ আছে। গাছটি অফিস কতৃক সংরক্ষিত ও সুরক্ষিত আছে।।
প্রজনন ও বংশবিস্তার: বন এলাকায় প্রাকৃতিকভাবে কামদেবের বীজ থেকে চারা ও গাছ জন্মায়। এ ছাড়া ডালপালা কাটিং করে চারা করা যায়। জুন-জুলাই মাসে সংগৃহীত বীজ পলিব্যাগে বপন করে চারা উৎপাদন করা যায়। চারা গজানো বা বীজের অঙ্কুরোদগমের হার শতকরা প্রায় ৭০-৮৫ ভাগ। চারা গজাতে সময় লাগে ১০-১৫ দিন।
দারুবৃক্ষ হিসেবে গুরুত্ব ও ব্যবহার: কামদেবের কাঠ মাঝারি ভারি ও শক্ত, গ্রথন মাঝারি, বুনন জড়ানো। কাঠ লালচে বাদামি বর্ণের, বেশ শক্ত, মজবুত এবং টেকসই। নৌকা ও জাহাজের মাস্তলসহ ঘরের বিভিন্ন ব্যবহারিক জিনিসপত্র তৈরিতে কাঠ ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় ঘাটের ব্রীজ তৈরিতে কাঠ ব্যবহার করা হয়। নির্মাণকাজে, রেলের স্লিপার ও আসবাবপত্র তৈরিতে এর ব্যবহার আছে।
সংরক্ষণের জন্য গৃহীত পদক্ষেপ: ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের ৯ নম্বর সেকশনে লাগানো কামদেবের তিনটি গাছ সংরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।