
ভূমিকা: খিরনি বা খির খেজুর বা খিলুনি (বৈজ্ঞানিক নাম: Manilkara hexandra) হচ্ছে সাপোটাসি পরিবারের মানিলকারা গণের সপুষ্পক একটি বৃক্ষ। এটি ফলজ উদ্ভিদ হিসাবে বাগানে, পুকুরের পাড়ে, রাস্তার ধারে লাগানো হয়ে থাকে।
বর্ণনা: খিরনি বৃহৎ চিরহরিৎ বৃক্ষ, দুধসদৃশ আঠাযুক্ত, বাকল ধূসর-বাদামী, অগ্রস্থ অংশ ছড়ানো। পত্র সরল, একান্তর, বৃন্তক, শাখাপ্রশাখার শেষ প্রান্তে গুচ্ছাকার, বিডিম্বাকার আয়তাকার, ১১-১৭ x ৫-৮ সেমি, অখন্ডিত, অগ্রস্ত অংশ খুঁজযুক্ত, গৌণ শিরা অসংখ্য।
পুষ্প কাক্ষিক গুচ্ছাকার, বৃন্তক, উভলিঙ্গ, ফিকে হলুদ, প্রায় ১ সেমি চওড়া। বৃতি ৬ বৃত্যংশক, বৃত্যংশ মুক্ত। দলমন্ডল খন্ডক (পাপড়ি) ১৮টি, ২-সারি, বাহিরের ১২টি রেখাকার, অভ্যন্তরীণ ৬টি বৃহৎ।
পুংকেশর ৬টি, ৬টি বন্ধ্যা পুংকেশরের সাথে একান্তর। গর্ভাশয় ১২-কোষী, রোমশ, গর্ভদন্ড এবং গর্ভমুন্ড ১টি। ফল বেরী, ১.৫ সেমি লম্বা, জলপাই-আকৃতির, রোমহীন, পাকলে লাল। বীজ সাধারণত ১টি, কদাচিৎ ২টি। ফুল ও ফল ধারণ ঘটে নভেম্বর থেকে জুলাই মাসে।
ক্রোমোসোম সংখ্যা: 2n = ২৪ (Kumar and Subramaniam, 1986).
আবাসস্থল ও চাষাবাদ: খির খেজুর শুষ্ক অঞ্চলের উদ্ভিদ কিন্তু পলি মৃত্তিকায় ভালো জন্মে।
বিস্তৃতি: ভারত এবং শ্রীলংকা (শ্রীলংকার স্বদেশী)। বাংলাদেশে কদাচিৎ গ্রাম্য গ্রুভ এবং ধার্মিক ব্যক্তির কবরের পার্শ্বে দেখা যায় (Khan and Alam, 1996).
অর্থনৈতিক ব্যবহার ও গুরুত্ব: কাঠ খুবই শক্ত, ভারী, সুন্দর পলিশ নেয়, সাধারণত প্যানেল এ আসাবাবপত্র তৈরীতে ব্যবহৃত হয়। কখনো ভক্ষণীয় ফলের জন্য এবং রাজপথের দুই পার্শ্বে লাগানো হয়।
অন্যান্য তথ্য: বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ১০ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) খির খেজুর প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের সংকটের কারণ দেখা যায় যে পুনরায় লাগানো ছাড়া স্বল্প উদ্ভূত উদ্ভিদ ধ্বংস করা। এবং বাংলাদেশে এটি তথ্য গৃহীত হয় নি। বাংলাদেশে খির খেজুর সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে বর্তমানে আবাসভূমির বন এবং শহরের রাস্তার দুই পাশে লাগানোর বৃহত্তর উদ্যোগ গ্রহণ প্রয়োজন।[১]
তথ্যসূত্র:
১. এম. আহসান হাবীব (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ১০ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ২২৪। আইএসবিএন 984-30000-0286-0