সিঙ্গাপুরি কাঠগোলাপ দক্ষিণ এশিয়ার সাদাটে-হলদে রঙের সুগন্ধি ফুল বিশিষ্ট বৃক্ষ

সুগন্ধি ফুল

সিঙ্গাপুরি কাঠগোলাপ

বৈজ্ঞানিক নাম: Plumeria obtusa L., Sp. Pl.: 210 (1753). সমনাম: জানা নেই। ইংরেজি নাম: Pagoda Tree, Singapore Plumeria, Frangipani. স্থানীয় নাম: গুরুর-চম্পা, চম্পা, গুলাচিন।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae বিভাগ: Angiosperms বর্গ: Gentianales পরিবার: Asparagaceae গণ: Plumeria প্রজাতি: Plumeria obtuse

ভূমিকা: সিঙ্গাপুরি কাঠগোলাপ, গুরু-চম্পা, চম্পা, গুলাচীন (বৈজ্ঞানিক নাম: Plumeria obtusa, ইংরেজি নাম: Pagoda Tree, Singapore Plumeria, Frangipani) হচ্ছে এ্যাসপারাগাসি পরিবারের প্লুমেরিয়া গণের সপুষ্পক উদ্ভিদ। সাদাটে- হলদে রঙের সুগন্ধি ফুল বিশিষ্ট ছোট বৃক্ষ এটি।

বর্ণনা: ছোট বৃক্ষ, বাকল অমসৃণ, শাখা পুরু, বেলনাকার, মসৃণ। পত্র গাঢ় সবুজ ও উপরে চকচকে, পত্রবৃন্ত অনূর্ধ্ব ৩.৮ সেমি লম্বা, অণুরোমশ, পত্রফলক ২৪-৩৪ x ৬-৯ সেমি, বিডিম্বাকার থেকে বিডিম্বাকার-আয়তাকার, শীর্ষ স্থূলা বা গোলাকার, অঙ্কীয় পৃষ্ঠ রোমশ, পুরুভাবে চর্মবৎ, মধ্যশিরা স্পষ্ট ও পুরু, পার্শ্ব শিরা বহু সংখ্যক, প্রগৌণ শিরা দৃশ্যমানভাবে স্পষ্ট। সাইম প্রান্তীয়, পুষ্পদন্ড অনূর্ধ্ব ৩৫ সেমি লম্বা। পুষ্প হলুদ গলদেশ বিশিষ্ট সাদা, লাল আভাযুক্ত, সুগন্ধী। বৃতি ক্ষুদ্র, খন্ড খর্ব, গোলাকার। দলমণ্ডল থলিকাকার, খন্ড পরিব্যাপ্ত ও ঈষৎ, পশ্চাদমুখী বক্র। পুংকেশর ৫টি। গর্ভকেশর ২টি। ফলিক্যাল অনূর্ধ্ব ১৫ সেমি লম্বা, বেলনাকার। ফুল ও ফল ধারণ ও মেসেপ্টেম্বর।

ক্রোমোসোম সংখ্যা: জানা নেই।

আবাসস্থল ও চাষাবাদ: শোভাবর্ধনকারী গাছ হিসেবে বাগানে চাষ করা হয়। এটি শক্ত মাটিতে জন্মে। গাছের কাণ্ড অঙ্গজ প্রজনন ও বীজ দ্বারাও বংশ বিস্তার ঘটে।

বিস্তৃতি: ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের দেশজ, সাধারণত বাংলাদেশ, ভারত, মায়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলংকার বাগানে আবাদ করা হয়। বাংলাদেশে ইহা একটি প্রবর্তিত গাছ, বর্তমানে প্রাকৃতিককরণকৃত।

অর্থনৈতিক ব্যবহার ও গুরুত্ব: সুগন্ধ ও সুন্দর ফুলের জন্য ইহা বাগানে ও মন্দিরের আশে পাশে লাগানো হয়। উদ্ভিদটি রোগ উপশমকারী।

জাতিতাত্বিক ব্যবহার: বাকল, পত্র, পুষ্প মুকুল ও তরুক্ষীর ভেষজ ঔষধে ব্যবহার করা হয় (Rahman et al., 2000)।

আরো পড়ুন:  গোলাপ ফুলের জাতগুলো চাষের জন্য কলম চারা তৈরি ও পরিচর্যা পদ্ধতি

অন্যান্য তথ্য: বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ৬তম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) সিঙ্গাপুরি কাঠগোলাপ প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে সিঙ্গাপুরি কাঠগোলাপ সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির বর্তমানে সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই।[১]

তথ্যসূত্র:

১. এম আতিকুর রহমান (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ৬ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ২০৩। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

Leave a Comment

error: Content is protected !!