ঝিঙ্গা বা ঝিঙা-এর হচ্ছে সারা বিশ্বে আবাদকৃত একটি সবজি

সবজি

ঝিঙ্গা

mbellata Klein ex Willd. (1805). ইংরেজি নাম: Angled Loofah, Ridged Gourd, Sinkwa Towelsponge. স্থানীয় নাম: ঝিঙ্গা বা খোসা লতা। গণের বৈজ্ঞানিক নাম: Luffa Mill., Gard. Dict. ed. 4 (1754).
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস 
জগৎ/রাজ্য: Plantae – Plants শ্রেণী: Eudicots, উপশ্রেণি: Rosids, বর্গ:  Cucurbitales, পরিবার: Cucurbitaceae, উপপরিবার: Cucurbitoideae, গণ: Luffa Mill. প্রজাতি: Luffa acutangula (L.)

ঝিঙ্গা বা ঝিঙা-এর বর্ণনা:

ঝিঙ্গা বা ঝিঙা বা খোসা লতা ( Luffa acutangula ) হচ্ছে কিউকারবিটাসি (শসা লাউ) পরিবারের লাফা গণের একটি বর্ষজীবী আরোহী বীরুৎ। কান্ড ৫ কোণাকৃতি, খাজের স্থান অমসৃণ। আকর্ষ দৃঢ়, প্রায়শ ৩-খন্ডিত, রোমশ। পত্র অর্ধগোলাকার, ঝিল্লিযুক্ত, ১৫-২০ x ১৫-২০ সেমি, প্রায়শ ৫-৭ খন্ডিত, মধ্যম খন্ড প্রশস্ত ত্রিকোণাকার, পার্শ্বীয় খন্ড ক্ষুদ্রতর, শীর্ষ সূক্ষ্মাগ্র বা দীর্ঘাগ্র, প্রান্ত দপ্তর, পত্র খন্ডকীয় খাজ অর্ধগোলাকার, উভয় পৃষ্ঠ রোমশ, বৃন্ত ৮১২ সেমি লম্বা, অমসৃণ। উদ্ভিদ সহবাসী।

পুংপুস্প: রেসিম, মঞ্জরীদন্ডের শীর্ষে ১৭-২০ পুষ্প বিশিষ্ট, মঞ্জরীদন্ড ১০-১৫ সেমি লম্বা, পুষ্পবৃন্ত ১-৪ সেমি লম্বা, সাদা রোমশ, মঞ্জরীপত্র ৩-৭ x ২-৪ মিমি, রসালো সবুজ, ডিম্বাকার, ৩১০টি চকচকে গ্রন্থিযুক্ত, বৃতিন ঘন্টাকার, খন্ড ভল্লাকার, ৪-৬ x ২-৩ সেমি, শীর্ষ দীর্ঘা, সামান্য বক্র, ঘন সাদা রোমযুক্ত, ১-শিরাল, দলমন্ডল ফ্যাকাশে হলুদ, খন্ড অর্ধতাম্বুলাকার, ১৫-২৫ x ১০-২০ মিমি, উভয় পৃষ্ঠ অর্ধরোমশ, পুংকেশর ৩টি, মুক্ত, ১টি ১ প্রকোষ্ঠী, ২টি ২প্রকোষ্ঠী, পুংদন্ড ৩-৪ মিমি লম্বা, মূলীয় অংশ গুচ্ছ রোমশ, পরাগধানী অণুরোমশ।

স্ত্রী পুষ্প: মঞ্জরীদন্ড ৫-১০ সেমি লম্বা, গর্ভাশয় প্রসারিত, ১০ কোণাকার, শীর্ষ সংকুচিত, গর্ভদন্ড খাটো, গর্ভমুন্ড ৩টি, প্রসারিত, ২ খন্ডিত। ফল মুষলাকৃতি দীর্ঘায়ত, তীক্ষ্ম, ১০ কোণাকার, শীর্ষ স্থূলা বা সামান্য সূক্ষ্মাগ্র। বীজ ডিম্বাকার, গুটিকাকার, ১০-১২ x ৭-৮ মিমি, ২ মিমি পুরু, কালো। ফুল ও ফল ধারণ ঘটে এপ্রিল থেকে অক্টোবর মাসে।

ক্রোমোসোম সংখ্যা: 2n = ২৬ (McKay, 1930).

চাষ পদ্ধতি ও আবাসস্থল:

জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ সুনিষ্কিাশিত উর্বর মাটি যার PH ৬-৭-৭.৫। বীজে বংশ বিস্তার ঘটে।

আরো পড়ুন:  মিষ্টি আলু ও লতা-এর নানাবিধ ভেষজ গুণাগুণ

ঝিঙ্গা বা ঝিঙা-এর বিস্তৃতি:

চীন, ভারত ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, মায়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, রাশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলংকা ও আমেরিকা। আদিনিবাস ভারত। ভারতে এখনও এদের বন্য প্রজাতি দেখা যায়। বাংলাদেশের সর্বত্র চাষাবাদ করা হয়।

অর্থনৈতিক ব্যবহার ও গুরুত্ব:

কচি অবস্থার ঝিঙ্গার ফল সবজিরূপে খাওয়া হয়। পাতা দিয়ে প্লীহা ও কুষ্ঠ রোগাক্রান্ত স্থানে সেক দেয়া হয়। পরিপক্ক বীজ কটু স্বাদ যুক্ত এবং বমনোদ্রেক কারী ও রেচক ওষুধ রূপে ব্যবহৃত। কম্বোডিয়ায় দাদ নিরাময়ের জন্য পাতা ব্যবহার করা হয়। ভারতে শিশুদের চোখের পীড়ায় পাতার রস প্রয়োগ করা হয়।

ঝিঙ্গা বা ঝিঙা-এর অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ৭ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) ঝিঙ্গা প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে শীঘ্র সংরক্ষণের পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজন নেই।

তথ্যসূত্রঃ

১. এম অলিউর রহমান, (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস”  আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ৭ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৩১৭-৩১৮। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

Leave a Comment

error: Content is protected !!