সলিল চৌধুরী (নভেম্বর ১৯, ১৯২৫ – সেপ্টেম্বর ৬, ১৯৯৫) একজন ভারতীয় সঙ্গীত পরিচালক, গীতিকার, সুরকার এবং গল্পকার। তিনি জন্মেছেন ১৯২৩ সালের ১৯ নভেম্বর সোনারপুরে।
সলিল চৌধুরীর বাবা জ্ঞানেন্দ্র চৌধুরী ছিলেন বৃত্তিতে চিকিৎসক কিন্তু তার ধ্যানজ্ঞান ছিল গান। দাদা নিখিল চৌধুরীর ‘মিলন পরিষদ’ নামে ছিল এক ঐক্যবাদন দল। বাড়িতে ছিল অজস্র সিম্ফনি অর্কেস্ট্রার রেকর্ড। সলিল এই সুরের রাজ্যে মানুষ হয়েছেন। ছোটবেলা থেকেই বাবা আর দাদার প্রেরণা তাকে নতুন কিছু করার দিকে টেনেছে। সবচেয়ে ভালোবাসতেন বাঁশি বাজাতে। সব সময়ের সঙ্গী ছিল বাঁশি। এখনও তার সুর করা গানের ইন্টারডে নানা অঙ্গের বাঁশি বাজে শৈশবস্মৃতির মতো। পিয়ানো বাজনাতেও তিনি দীর্ঘ অনুশীলিত।
তার সংগীতজীবনে যুগান্তর আসে কলকাতায় কলেজে আর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসে। তখন দিকে দিকে দুর্বার গণআন্দোলন আর প্রগতিপন্থার অলঙ্ঘনীয় আহ্বান। সলিল তাতে সাড়া দিয়ে খাদ্য আন্দোলন, কৃষক আন্দোলন আর গণনাট্য আন্দোলনের শরিক হন। প্রথমে ছিল তাঁর গানের দলে বাঁশি বাজাবার কাজে। ধীরে ধীরে এসে যায় গানের বাণী ও সুর। প্রতিবাদের ভাষা আর প্রতিরোধের আগুন তার সব গণমুখী গানে ঝলসে ওঠে। গানগুলিকে তিনি বলেন ঘুমভাঙার গান ।
পঞ্চাশ দশকে সলিল চৌধুরীর গান সব অর্থেই বাংলা গানের ঘুম ভাঙায়, তৈরি করে জনজাগৃতি আর গানের গভীর প্রত্যাশা। নতুন বাণী আর নতুনতর সুরে তার গান হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ও দেবব্রত বিশ্বাসের কণ্ঠবদনে নবতরঙ্গ তোলে। এবারে শুরু হয় তাঁর নিরীক্ষা, বিষয় ও সুরে। দেশি-বিদেশি সুরের চমৎকার সমঞ্জসতায় ভরে ওঠে তার গান। গাঁয়ের বধু’, ‘রানার’ আর ‘পাল্কীর গান’ আধুনিক গানের জগতে বিষয়গত দিক থেকেও রবীন্দ্রোত্তর যুগের সূচনা করে।
চলচ্চিত্রে ও রেকর্ডে তার গান আধুনিক কালের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। তার প্রতিভার সামর্থ্যে ভারতীয় চলচ্চিত্রও প্রাণ পায়। তিনি হন বোম্বাই প্রবাসী। দুই দশক পরে আবার ফিরে আসেন বাংলায়। গানের সূত্রে ঘোরেন দেশেবিদেশে। চৌষট্টি বছরের এই সৃজনশীল মানুষটিকে এখনও আমরা পাই প্রগতির পক্ষে, মানুষের শপথে, শান্তি ও সংগ্রামে। তার লেখা ও সুর-করা গান এখনও ঢের অভিনবত্বে চমকে দেয় । প্রকাশিত গীত-সংকলন : ‘প্রান্তরের গান’, ‘সলিল চৌধুরীর গান।
তথ্যসূত্র:
১. সুধীর চক্রবর্তী সম্পাদিত আধুনিক বাংলা গান, প্যাপিরাস, কলকাতা, প্রথম প্রকাশ ১ বৈশাখ ১৩৯৪, পৃষ্ঠা, ১৮২-১৮৩।
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।