শ্রী অরবিন্দ বা অরবিন্দ ঘোষ (ইংরেজি: Sri Aurobindo বা Aurobindo Ghose; ১৫ই আগস্ট, ১৮৭২ – ৫ই ডিসেম্বর, ১৯৫০) ছিলেন বিশিষ্ট বাঙালি চিন্তাবিদ, এককালের রাজনৈতিক নেতা। শেষ বয়সে যোগী শিক্ষাজীবনের পর অরবিন্দ স্বদেশের মুক্তি আন্দোলনে যোগদান করেন। ১৯০৮ সালে তিনি বৈপ্লবিক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার এবং বে-আইনিভাবে বোমা তৈরির অভিযোগে গ্রেপ্তার হন। অরবিন্দ এবং অন্যান্য গোপন বিপ্লবীর বিরুদ্ধে, ‘আলীপুর বোমার মামলা’ বলে বিখ্যাত মামলা দায়ের করা হয়।
বোমার মামলা থেকে মুক্ত হয়ে অরবিন্দ রাজনীতি পরিত্যাগ করে ধর্ম-সাধনায় মনোনিবেশ করেন। তাঁর ধর্মীয় ও ব্যক্তিগত দার্শনিক ধারণা প্রচারের জন্য অরবিন্দ দক্ষিণ ভারতরে পণ্ডিচেরিতে একটি আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। অরবিন্দ বেদান্ত দর্শনের নতুন ব্যাখ্যাদানের চেষ্টা করেন। তাঁর ব্যাখ্যাকে সমন্বিত বেদান্ত দর্শন বলা হয়। তাঁর এই ব্যাখ্যার প্রাচীন ভারতের বেদান্ত দর্শন এবং ইউরোপীয় আধুনিক দর্শন, বিশেষ করে হেগেল, ব্রাডলে, আলেকজাণ্ডার প্রমুখ ভাববাদী দার্শনিকদের ভাবসমূহের মিশ্রণ দেখা যায়।
অরবিন্দ মানুষের ইতিহাসকে চেতনার স্তর-ক্রমিক বিকাশ বলে বর্ণনা করতে চেয়েছেন। তাঁর মতে অর্ধ-চেতন, এবং অতি-চেতন মানুষের চেতনা এইরূপ বিভিন্ন পর্যায়ের মাধ্যমে বিকাশ লাভ করেছে। সামাজিক বিকাশে পুঁজিবাদ বা সমাজতন্ত্র কোনোটাকে শ্রেয় মনে করতে না পেরে অরবিন্দ বিকাশের এক তৃতীয় পথের কল্পনা করেন। অরবিন্দের দর্শন প্রধানত ভাববাদী।
তথ্যসূত্র:
১. সরদার ফজলুল করিম; দর্শনকোষ; প্যাপিরাস, ঢাকা; জুলাই, ২০০৬; পৃষ্ঠা ১৮১।