কূটনীতি হচ্ছে বিভিন্ন রাষ্ট্রের পারস্পরিক স্বার্থে সাহায্য ও সহযোগিতার নীতি

কূটনীতি (ইংরেজি: Diplomacy) বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে পারস্পরিক স্বার্থে সাহায্য ও সহযােগিতার সম্পর্ককে বলে। কূটনীতির সঙ্গে পররাষ্ট্রনীতির সম্পর্ক নিবিড়। নিজ নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উন্নতি ও অন্যান্য প্রয়ােজনে প্রতিটি রাষ্ট্র আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে বৈদেশিক নীতি প্রণয়ন করে। কুটনীতির মাধ্যমে সেই নীতি রূপায়িত হয়।

প্রাচীন গ্রিসের বিভিন্ন নগররাষ্ট্রের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক বিরাজ করত। প্রয়ােজনে সেইসব নগররাষ্ট্রের মধ্যে দূত বিনিময় হতো। প্রাচীন ও মধ্যযুগে ভারতেও দূত বিনিময়ের রীতিনীতি প্রচলিত ছিল। পঞ্চদশ শতক থেকে বিভিন্ন রাষ্ট্র অন্য রাষ্ট্রে দূতাবাস স্থাপন শুরু করে। কংগ্রেস অব ভিয়েনা চুক্তি অনুযায়ী পারস্পরিক আচরণ বিধি ও সুযােগসুবিধা-দানের নিয়মাবলি প্রবর্তিত হয়। কূটনৈতিক ধারায় প্রচলিত সুযােগসুবিধাগুলি হলো দূতাবাসে ধর্মানুষ্ঠান পালনের অধিকার, স্থানীয় পুলিশের এখতিয়ারভুক্ত না হওয়া, স্থানীয় প্রশাসন ও করধার্যের আওতায় অন্তর্ভুক্ত না হওয়া ইত্যাদির সুবিধা দূতাবাস সমূহ ভােগ করে। অবশ্য উক্ত কূটনৈতিক দায়মুক্তি সম্পর্কে বিতর্ক দেখা যায়।

দুটি দেশের মধ্যে শান্তিপূর্ণ উপায়ে এবং আন্তর্জাতিক আইন প্রয়ােগ ব্যতিরেকে বিবাদ ও বিরােধের মীমাংসাই হলো কূটনীতির প্রধান কাজ। আন্তর্জাতিক সালিশি নিয়মিত প্রযুক্ত হলে কূটনীতির দায়দায়িত্ব হ্রাস পায়। অপর রাষ্ট্রকে আন্তর্জাতিক আইন অনুসরণে প্রবৃত্ত করা কূটনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। বর্তমান কালে নানা ধরনের আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সাহায্যে এবং রাষ্ট্রনায়কেরা স্বয়ং মিলিত হয়ে আলাপ আলােচনার মধ্যে দিয়ে কূটনীতির কার্যনির্বাহ করেন।

তথ্যসূত্র:

১. গঙ্গোপাধ্যায়, সৌরেন্দ্রমোহন. রাজনীতির অভিধান, আনন্দ পাবলিশার্স প্রা. লি. কলকাতা, তৃতীয় মুদ্রণ, জুলাই ২০১৩, পৃষ্ঠা ৮২।

Leave a Comment

error: Content is protected !!