চুক্তি কাকে বলে

বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে সম্পাদিত সম্মতিবা সংবিদা (agreement) কথাটির নানা সমার্থক শব্দ আছে: সন্ধি, প্রচল, অঙ্গীকার, বিধি, ঘােষণা, পররাষ্ট্রীয় আচরণবিধি। এই সব শব্দের কোনও বাঁধাধরা অর্থ নেই। কিন্তু চুক্তি শব্দটির মধ্যে দিয়ে একটি আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পাদিত সংবিদা প্রকাশ পায়। অন্য শব্দগুলি সে তুলনায় কম অথবা সীমিত আনুষ্ঠানিকতা জ্ঞাপন করে। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী চুক্তিপত্র (ইংরেজি: Treaty) রচনার নির্দিষ্ট কোনও আইন নেই। কিন্তু আন্তর্জাতিক আইনের নানাবিধ উৎসের অন্যতম হলো চুক্তি।

চুক্তি-র সাধারণত দুটি পর্যায় থাকে। এক, সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের পূর্ণক্ষমতাপ্রাপ্ত দূতের (plenipotentiary) স্বাক্ষর; এবং দুই, রাষ্ট্রগুলির অনুমােদন। গণতান্ত্রিক দেশ চুক্তি-সম্পাদনের পূর্বে অনুকূল জনমত নির্ণয় করে থাকে। সময়বিশেষে চুক্তি হয় শর্তসাপেক্ষ এবং সে কারণে রূপায়ণেও ব্যত্যয় ঘটে।

রাষ্ট্রসংঘ যে সনদের ভিত্তিতে পরিচালিত হয় তার ১০২ ধারা অনুযায়ী সদস্যদের মধ্যে যাবতীয় আন্তর্জাতিক চুক্তি রাষ্ট্রসংঘের সেক্রেটারিয়েটে রেজিস্ট্রিকরণ বিধেয়। যুদ্ধ বেধে গেলে চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া সম্পর্কে দ্বিমত আছে।

চুক্তির সমাপ্তি সম্পর্কে নানা মতামত ও জটিলতা কম নয়। তাতে দুটি প্রশ্ন ওঠে: এক, কোনও এক পক্ষ অপর পক্ষের সম্মতি ব্যতিরেকে চুক্তিটি ভঙ্গ করতে পারে কি না; দুই, অন্য কোনও আইনের বলে চুক্তির সমাপ্ত করা যায় কি না। বর্তমান সমস্যা ও প্রয়ােজনের তাগিদে চুক্তিকে সম্পাদিত হয়ে থাকে। সেই চুক্তি পরবর্তীকালের শাসকদের কাছে গ্রহণযােগ্য না হলে অনেক আইনবিদের মতে সেই চুক্তির পরিমার্জনার প্রশ্ন বিবেচিত হতে পারে ।

দ্রষ্টব্য: আইন

তথ্যসূত্র:

১. গঙ্গোপাধ্যায়, সৌরেন্দ্রমোহন. রাজনীতির অভিধান, আনন্দ পাবলিশার্স প্রা. লি. কলকাতা, তৃতীয় মুদ্রণ, জুলাই ২০১৩, পৃষ্ঠা ১০৬।

Leave a Comment

error: Content is protected !!