পুরাতন পুরুষ

চিপতে চিপতে গলে যায় আইসকৃম

হয়ে যায় জলের শরবত,

তবুও চিপিস কেন,

কেন তোর ভয়

না চিপলে জীবন পূর্ণ হবার নয়?

আমি দেখি প্রতিদিনই ছাদের দড়িতে শুকায় সেই একই কাপড়,

প্রতিদিন রাতে তবে কোন নদীর কোন পাড় ভাঙে,

কোন নদে জোয়ারের শব্দে ভোর হয়,

কার খালি কলসি কোন গাঙে ভরে যায় টইটুম্বুর,

কার কলসি খালি হয় কোন মোহনায়?

কোন পাখি কার ঘরে যায়, কার ডিমে তা দেয়,

কোন বালক কার মৌচাকে ঢিল মারে আর কার মধু খায়?

তারা কী জানে না আইসকৃম ধীরে গরম হয়?

 

ভোরের পৃথিবী দেখে নড়েচড়ে

বসে জীববিজ্ঞানের জীব, প্রাকটিক্যাল ক্লাসে সেই

পুরোনো একঘেয়েমি, পুরোনো ফাইল চালাচালি,

হঠাৎ কোনোদিন নদীর প্রশস্ত মোহনায় বৈশাখের পূর্ণ ঘূর্ণিঝড়,

তর্জনী মধ্যমা অনামিকা কনিষ্ঠার গোলপোস্টে

আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণ;

বৃদ্ধ বৃদ্ধা হিসেব মেলায় বার বার গুনেগুনে,

পুরোনো দিনের গানে শোনা যায় একই হাঁস-ফাঁস,

পুরোনো টিনের চালে টিপটিপ জল পড়ে ভেঙে যায় কালিক সুবাস,

প্রতিরাতেই শীত আসে কাছের দোকান থেকে,

গরম কাপড়ে মুড়ে কবরে নামাতে হয় দেহ,

বিশালাকার ভয়

কবে জন্ম হয়

শরবতের প্রাকৃতিক পুকুর।

অন্যত্র যাবার একটা রুটিন পেলে খুব ভালো হত;

গাড়ির ছাদে বসে দেখাতাম তোমাদের বিশাল আকাশ,

জানালায় হাত রেখে দেখাতাম দূরের কুয়াশা,

কাছাকাছি কোথাও পাওয়া যেত বিনোদন বাড়ি;

এমন পুরুষ সব তর সয় না,

নারীরা তোদের কাছে শরবতের চেয়েও শতগুণ বেশি মিঠা হয়।

 

২০.০১.২০০২; ইংরেজি বিভাগ সেমিনার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

চিত্রের ইতিহাস: কবিতায় ব্যবহৃত অংকিত চিত্রটি ম্যাক্স স্লেভোগের (১৮৬৮-১৯৩২) আঁকা চিত্র ‘ছাগমানুষ এবং এক বালিকা(Faun and a girl.)। শিল্পী চিত্রটি আঁকেন ১৯০৫ সালের পূর্বে। এখানে চিত্রটিকে নিচে কিছুটা ছেঁটে এবং বাঁয়ে ও ডানে সামান্য যুক্ত করে ব্যবহার করা হয়েছে।

আরো পড়ুন:  নোনা শ্রমিক

Leave a Comment

error: Content is protected !!