বিশ্ব হচ্ছে গ্রহ পৃথিবী এবং এটিতে অবস্থানরত মানব সভ্যতাসহ সমস্ত জীবন

বিশ্ব বা জগত বা সংসার (ইংরেজি: World) হলো গ্রহ পৃথিবী এবং এটিতে অবস্থানরত মানব সভ্যতাসহ সমস্ত জীবনদার্শনিক কথাপ্রসঙ্গে, “বিশ্ব” হচ্ছে পুরো ভৌত মহাবিশ্ব, বা একটি সত্ত্বাতাত্ত্বিক বিশ্ব (একজন ব্যক্তির “বিশ্ব”)। অর্থাৎ বিশ্ব হলো পৃথিবীতে বিরাজমান সকল কিছুর পদার্থবিদ্যাগত আলোচ্য বিষয়।

বিশ্বের ইতিহাস সাধারণত প্রথম সভ্যতা থেকে বর্তমান অবধি প্রায় পাঁচ সহস্রাব্দের বৃহত ভূ-রাজনৈতিক বিকাশের বিস্তৃতি হিসাবে ধরা হয়। বিশ্ব ধর্ম, বিশ্ব ভাষা, বিশ্ব সরকার এবং বিশ্বযুদ্ধের মতো শব্দগুলো দ্বারা বিশ্বের প্রতিটি অংশের অংশগ্রহণকে প্রভাবিত না করেই একটি আন্তর্জাতিক বা আন্তঃমহাদেশীয় সম্পর্কসমূহকে উপস্থাপন করে।

বিশ্বের জনসংখ্যা যে কোনও সময়ের সমস্ত মানুষের জনসংখ্যার যোগফল; একইভাবে, বিশ্ব অর্থনীতি হলো বিশেষত বিশ্বায়নের প্রেক্ষাপটে সমস্ত সমাজগুলি বা দেশগুলির অর্থনীতির যোগফল। “বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ”, “স্থুল বিশ্ব উৎপাদিত দ্রব্য” এবং “বিশ্ব পতাকাসমূহ” এর মতো পদগুলি সমস্ত সার্বভৌম রাষ্ট্রের সমষ্টি বা সংমিশ্রণকে বোঝায়।

বিশ্ব সম্পর্কে দার্শনিক ধারণা

দর্শনে, বিশ্ব শব্দটির বেশ কয়েকটি সম্ভাব্য অর্থ রয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে, এটি বাস্তবতা বা ভৌত মহাবিশ্বকে তৈরিকারী এমন সমস্ত কিছুকে বোঝায়। অন্য ক্ষেত্রে, বিশ্ব অর্থ একটি নির্দিষ্ট সত্ত্বাতত্ত্বগত বোধ থাকতে পারে। বিশ্বের ধারণাটি স্পষ্টরূপে প্রতিভাত করার কাজ পশ্চিমা দর্শনের মূল কাজগুলির মধ্যে বরাবরই ছিল, এই মূলভাবটি বিংশ শতাব্দীর শুরুতেই সুস্পষ্টভাবে উত্থাপিত হয়েছিল এবং ধারাবাহিক বিতর্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ব কী তা কোনওভাবেই নিষ্পত্তি হয় নি।

মাও সেতুং বিশ্বদৃষ্টিভঙ্গি বলতে মানুষের ভাববাদী ও বস্তুবাদী দুই বিশ্বদৃষ্টিভঙ্গিকে বুঝিয়েছেন, তাঁর মতে, “মানুষের জ্ঞানের ইতিহাসে বিশ্ব বিকাশের নিয়ম সম্পর্কে চিরকালই দুটি ধারণা চলে এসেছে, আধিবিদ্যক ধারণা এবং দ্বন্দ্ববাদী ধারণা, যেগুলো দুটি পরস্পর বিরোধী বিশ্বদৃষ্টি সৃষ্টি করে।”[১]

বিশ্ব সম্পর্কে রাজনৈতিক ধারণা

রাজনীতিতে, পুঁজিবাদী বিশ্ব, সমাজতান্ত্রিক বিশ্ব এবং উন্নয়নশীল বিশ্বকে সাম্রাজ্যবাদী প্রচারমাধ্যমে যথাক্রমে প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বিশ্ব বলে অনবরত উল্লেখ করে। বিশেষভাবে স্নায়ুযুদ্ধের সময়ে এটি বেশি করা হতো। পুঁজিবাদী বিশ্ব পুঁজিবাদী, ধনী বা অর্থনৈতিকভাবে উন্নত সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্রগুলোকে বলা হয়, সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সমাজতন্ত্র অভিমুখী কমিউনিস্টদের দ্বারা শাসিত দেশগুলো হচ্ছে সমাজতান্ত্রিক বিশ্ব এবং জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের ফলে সুবিধাবাদী দেশগুলো তৃতীয় বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলিকে একত্রিত করে, যেগুলোর বেশিরভাগ দরিদ্র, উন্নয়নশীল বা অনুন্নত। এমনকি চতুর্থ বিশ্ব শব্দটি এমন দেশগুলিকে বোঝাতে ব্যবহৃত হয় যেখানে দারিদ্র্য চরম।

আরো পড়ুন:  সরকার হলো ব্যবস্থা বা গোষ্ঠী যা সংগঠিত সম্প্রদায়, প্রায়শই একটি রাষ্ট্রকে পরিচালনা করে

তথ্যসূত্র:

১. মাও সেতুং, দ্বন্দ্ব সম্পর্কে, ১৯৩৮।

Leave a Comment

error: Content is protected !!