নেত্রকোনায় অন্তরাশ্রম আয়োজিত কবিতা সন্ধ্যা ও কবিতা বিষয়ক আলোচনা অনুষ্ঠিত

অন্তরাশ্রম আয়োজিত ‘অনন্ত জীবনের গান গাই’ নামক কবিতা সন্ধ্যা ও কবিতা বিষয়ক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে গত ২২ অক্টোবর ২০১৯ তারিখ সন্ধ্যায়। নেত্রকোনার জেলা উদীচী কার্যালয়ে সাংস্কৃতিক সংগঠন অন্তরাশ্রম দুই বাংলার কবিদের নিয়ে জমিয়েছিল এই তুমুল আড্ডা। সাইফুল্লাহ ইমরানের অসাধারণ সঞ্চালনায় নেত্রকোণার কবি, সাহিত্যিক ও সংস্কৃতিকর্মীগণ অজান্তেই আত্মমগ্ন ছিলেন আড্ডায়।

সেদিন মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে শুরু হয় কবিতায় কবিতায় কথা বলা। সবার অজান্তে সন্ধ্যা গড়িয়ে গেল রাত্রির দিকে। নান্দনিক উপস্থাপনা এবং চলমান আলোচনায় মুগ্ধ ছিলেন সকল আড্ডারু। আয়োজক এনামূল হক পলাশের সভাপতিত্বে কবিতা পাঠ করেন কুচবিহার থেকে আগত কবি সুবীর সরকার, আলিপুর দুয়ার থেকে আগত কবি ও শব্দবাউল এর সম্পাদক শৌভিক বণিক, কুচবিহার থেকে নীলাদ্রি দেব।

অন্তরাশ্রমের আয়োজনে আয়োজক এনামূল হক পলাশ সভাপতির আলোচনায় বলেন ‘অন্তরাশ্রম একটি সামগ্রিক চেতনা নির্মাণের প্রয়াস। আমি বিশ্বাস করি, সকল শিল্পের ভাষা এক। এই অনুষ্ঠানে যারা অতিথি হিসেবে এসেছেন এবং আয়োজনে যারা সহায়তা করেছেন তাদের সকলের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ’।

অনুষ্ঠানের শুরুর দিকে আলোচনা করেন কবি, প্রাবন্ধিক অনুপ সাদি। তিনি দুই বাংলার কবিতার বাঁকবদলের প্রেক্ষিত আলোচনা করতে গিয়ে দেশভাগ, মানবিকতা প্রতিষ্ঠার লড়াই ও আসামের এনআরসি প্রসঙ্গকে সামনে আনেন। আলোচনায় তিনি বলেন ‘কবিতা অস্ত্রের চেয়ে দুর্বল, কবিতা ক্রসফায়ার থামাতে পারে না, কবিতা দাঙ্গা থামাতে পারে না। তদুপরি কবিতাও একই ধরনের অস্ত্র যা জনগণের হয়ে সংগ্রাম করে।’

অন্যান্য আলোচকগণ যেসব প্রশ্ন তুলে ধরেন তার ভেতরে আছে, কবিতা কতখানি ধরতে পারছে বৈশ্বিক বিবর্তনকে, কিংবা জীবন কতটুকু সান্নিধ্য দিতে পারছে কবিতাকে, কেমন আছে দুই বাংলার বাংলা ভাষাভাষী মানুষেরা, শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাওয়া ভূমি কেন পায় না তিস্তার ছোঁয়া ইতাদি। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জীবনানন্দ, বিভূতিভূষণ, বায়ান্ন থেকে একাত্তর ইত্যাদি বহুবিধ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে উপস্থিত বোদ্ধারা মেতে উঠেছিলেন আড্ডায়।

আরো পড়ুন:  পরিকল্পনা ও উন্নয়ন একাডেমী আয়োজিত প্রথম আন্তর্জাতিক কনফারেন্স অনুষ্ঠিত

অনুষ্ঠানে এছাড়াও কবিতা পাঠ করেন নেত্রকোনার স্বপন পাল, পূরবী সম্মানিত, তরুময় বিশ্বাস পাভেল, মুস্তাফিজুর রহমান, প্রদীপ চক্রবর্তী, সোহরাব উদ্দিন আকন্দ, পহেলি দে, শৌনক দত্ত তনু, শোখরান খান ও সালামসহ অনেকে। আবৃত্তি, গান, অনুভূতি প্রকাশে মুখোরিত আড্ডা যেন শেষ হতে চাচ্ছিল না। তবু অব্যক্ত ভাষার অনিঃশেষ অতৃপ্তি নিয়ে সেদিন অন্তরাশ্রমের প্রথমবারের আয়োজিত আড্ডা শেষ হয়েছিল রাত দশটায়।

Leave a Comment

error: Content is protected !!