সক্রিয়তাবাদ বা আন্দোলন কর্মকাণ্ড কাকে বলে

সক্রিয়তাবাদ বা আন্দোলন কর্মকাণ্ড (ইংরেজি: Activism) বলতে সমাজেররাষ্ট্রের উন্নতির উদ্দেশ্যে কোনও সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক বা পরিবেশগত সংস্কারকে সমর্থন, বাধাদান বা দিক নির্দেশনার প্রচেষ্টাকে বোঝায়। যারা এই প্রচেষ্টায় অংশ নেন, তাদেরকে সক্রিয়তাবাদী বা আন্দোলনকর্মী বা কার্যবাদী (ইংরেজি: Activist) বলে।

রাজনৈতিক দলের বা সামাজিক সংগঠনের মধ্যে লক্ষ্য সাধনের ক্ষেত্রে মতামতের পার্থক্যের উদ্ভব হয়। এরূপ ক্ষেত্রে মতামতের পার্থক্যের জন্য কোনো উপদল দল বা সংগঠনের লক্ষ্য সাধনের জন্য প্রত্যক্ষ সংগ্রাম বা কার্যের উপর অধিক জোর দেয়।[১] অর্থাৎ কোনো উদ্দেশ্য সাধনের নিমিত্তে কোনো সংগঠন বা উপদল পত্রিকাতে বা রাজনীতিবিদদের উদ্দেশ্যে চিঠি লেখা থেকে শুরু করে বিশাল রাজনৈতিক সমাবেশ পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের আন্দোলন কর্মকাণ্ডের ডাক হতে পারে। অর্থনৈতিক আন্দোলন কর্মকাণ্ডের উদাহরণ হিসেবে বয়কট অথবা স্বদেশী আন্দোলনকে বিবেচনা করা যেতে পারে। তাছাডা ধর্মঘট, হরতাল, অনশন ইত্যাদিও সক্রিয়তাবাদের বিভিন্ন উদাহরণ।

সক্রিয়তাবাদ বা আন্দোলন কর্মকাণ্ডকে বিভিন্ন শিল্পরূপ হিসেবেও বিবেচনা করা যেতে পারে। এমনকি দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডও আন্দোলন কর্মকাণ্ড হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। যেমন বিশেষ কোন প্রতিষ্ঠানের পণ্য ক্রয় করা থেকে নিজেকে বিরত রাখা। কারণ তারা তাদের শ্রমিকদের ন্যায্য দাবী মেনে নিচ্ছে না। এভাবে প্রত্যেকেই তার স্ব-স্ব অবস্থানে থেকে আন্দোলন কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারে। বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো কিভাবে নাগরিক বিষয়সমূহে সম্পৃক্ত হচ্ছে তা নিয়েও গবেষণা শুরু হয়ে গিয়েছে।

সক্রিয়তাবাদীরা সার্বজনীন আধিকারিকের ভূমিকাতে সক্রিয় হতে পারে। একে বৈচারিক আন্দোলন কর্মকাণ্ড বলা যায়। লেখক জে আর শ্লেজিঙার সর্বপ্রথম ১৯৪৬ সালে ফরচুন ম্যগাজিনে তার নিবন্ধ “The Supreme Court: 1947” এর মাধ্যমে আমদেরকে “বৈচারিক আন্দোলন কর্মকাণ্ডের” সাথে পরিচয় করিয়ে দেন।

আলোকচিত্র: প্যারিস কমিউনের ব্যারিকেড।

তথ্যসূত্র:

১. সরদার ফজলুল করিম; দর্শনকোষ; প্যাপিরাস, ঢাকা; ৫ম মুদ্রণ জানুয়ারি, ২০১২; পৃষ্ঠা ২৪।

Leave a Comment

error: Content is protected !!