[otw_shortcode_info_box border_type=”bordered” border_color_class=”otw-red-border” border_style=”bordered” shadow=”shadow-inner” rounded_corners=”rounded-10″]দ্বিপদ নাম: Alcedo atthis সমনাম: Corvus benghalensis Linnaeus, 1758 বাংলা নাম: পাতি মাছরাঙা, ছোট মাছরাঙা (আই) ইংরেজি নাম: Common Kingfisher. জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস জগৎ/রাজ্য Kingdom: Animalia বিভাগ/Phylum: Chordata শ্রেণী/Class: Aves পরিবার/Family: alcedinidae গণ/Genus: Alcedo, Linnaeus, 1758; প্রজাতি/Species: Alcedo atthis (Linnaeus, 1758)[/otw_shortcode_info_box]
ভূমিকা: বাংলাদেশের পাখির তালিকায় Alcedo গণে বাংলাদেশে রয়েছে এর ৩টি প্রজাতি এবং পৃথিবীতে ১৫টি প্রজাতি। বাংলাদেশে প্রাপ্ত প্রজাতি ৩টি হচ্ছে ১. পাতি মাছরাঙা, ২. ব্লাইদের মাছরাঙা ও ৩. নীলকান মাছরাঙা, আমাদের আলোচ্য প্রজাতিটির নাম হচ্ছে নীলকান মাছরাঙা।
বর্ণনা: পাতি মাছরাঙা কমলা পেট ও নীল পিঠওয়ালা খুদে মাছ শিকারি (দৈর্ঘ্য ১৮ সেমি, ওজন ২৫ গ্রাম, ডানা ৭.২ সেমি, ঠোঁট ৪.৪ সেমি, পা ১ সেমি, লেজ ৩.৩ সেমি)। প্রাপ্তবয়ষ্ক পাখির পিঠ সবুজাভ নীল ও দেহতল কমলা; মাথার চাঁদি, কাঁধ-ঢাকনি ও ডানা ফ্যাকাসে সবুজাভ-নীল; পিঠের নিচ, পাছা ও লেজ বরাবর নীল টান নেমে গেছে; গলা সাদা এবং চোখের উপরে ও ঘাড়ের পাশে সাদা ফুটকি রয়েছে; কান-ঢাকনির রঙ লালচে ও চোখ পিঙ্গল-বাদামি; পা ও পায়ের পাতা প্রবাল-লাল। ছেলেপাখির ঠোঁট সম্পূর্ণভাবে কালচে-শিঙ রঙের, কিন্তু মেয়েপাখির ঠোঁটের নিচের পাটির গোড়া ও ঠোঁটের সঙ্গমস্থল স্যামন-লাল। অপ্রাপ্তবয়ষ্ক পাখির পিঠ বেশ সবুজ ও অনুজ্জ্বল এবং বুকে কালো আঁইশের দাগ থাকে; অনেক সময় তরুণ ছেলেপাখির ঠোঁটের রঙ পূর্ণবয়স্ক মেয়েপাখির মত। ৭টি উপ-প্রজাতির মধ্যে A. a. bengalensis বাংলাদেশে রয়েছে।
স্বভাব: পাতি মাছরাঙা খাল, বিল, পুকুর, ডোবা, নর্দমা, নদী, প্যারাবন, বেলাভূমি এবং সব ধরনের জলাভূমিতে বিচরণ করে; সাধারণত একা বা জোড়ায় থাকে।পানির সামান্য উপরের ডাল অথবা খুঁটিতে এরা বসে থাকে এবং হঠাৎ ঝাঁপ দিয়েপানির ভিতরে গিয়ে শিকার ধরে; খাদ্যতালিকায় রয়েছে ছোট মাছ, ব্যাঙের ছানা ওজলজ পোকামাকড়। দ্রুত ডানা চালিয়ে পানির অল্প ওপর দিয়ে এরা যাতায়াত করে; স্থান ত্যাগ করার মূহুর্তে ঝাঁঝালো তীব্র শব্দে ডাকে: চিট-ইট-ইট..।মার্চ-জুন মাসের প্রজনন ঋতুতে জলাশয়ের তীরের খাড়া মাটির ঢিবিতে গর্তেখুঁড়ে বাসা বানিয়ে এরা ডিম পাড়ে। ডিমগুলো সাদা, সংখ্যায় ৫-৭টি; মাপ২.০ ×১.৭ সেমি.।
বিস্তৃতি: পাতি মাছরাঙা বাংলাদেশের সুলভ আবাসিক পাখি; সকল বিভাগের সব জলাশয়ে বিচরণ করে। ইউরোপ, আফ্রিকা ও এশিয়ায় এর বৈশ্বিক বিস্তৃতি রয়েছে; এশিয়ায় সমগ্র ভারত উপমহাদেশে পাওয়া যায়।
অবস্থা: পাতি মাছরাঙা বিশ্বে ও বাংলাদেশে বিপদমুক্ত বলে বিবেচিত। বিগত তিন প্রজন্ম ধরে এদের সংখ্যা কমেছে, তবে দুনিয়ায় এখন ১০,০০০-এর অধিক পূর্ণবয়স্ক পাখি আছে, তাই এখনও আশঙ্কাজনক পর্যায়ে এই প্রজাতি পৌঁছেনি। সে কারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত (Least Concern LC) বলে ঘোষণা করেছে।[২] বাংলাদেশের ১৯৭৪[১] ও ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এই পাতি মাছরাঙাকে সংরক্ষিত ঘোষণা করা হয়েছে।[৩]
বিবিধ: পাতি মাছরাঙার বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ আত্তিস-এর মাছরাঙা (ল্যাটিন: alcedo = মাছরাঙা; atthis = আত্তিস, লেস্বস নগরীর সুন্দরী, কবি সাফোর প্রিয়জন)।
তথ্যসূত্র:
১. ইনাম আল হক ও এম. কামরুজ্জামান, (আগস্ট ২০০৯)। “পাখি”। আহমাদ, মোনাওয়ার; কবির, হুমায়ুন, সৈয়দ মোহাম্মদ; আহমদ, আবু তৈয়ব আবু। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ ২৬ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা – ৫১। আইএসবিএন 984-30000-0286-0।
২. “Alcedo atthis“, http://www.iucnredlist.org/details/22683027/0, The IUCN Red List of Threatened Species। সংগ্রহের তারিখ: ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮।
৩. বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত সংখ্যা, জুলাই ১০, ২০১২, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পৃষ্ঠা-১১৮৫০৯।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।