[otw_shortcode_info_box border_type=”bordered” border_color_class=”otw-red-border” border_style=”bordered” shadow=”shadow-inner” rounded_corners=”rounded-10″]দ্বিপদ নাম: Alcedo hercules সমনাম: বাংলা নাম: ব্লাইদের মাছরাঙা, ইংরেজি নাম: Blyth’s Kingfisher. জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস জগৎ/রাজ্য Kingdom: Animalia বিভাগ/Phylum: Chordata শ্রেণী/Class: Aves পরিবার/Family: alcedinidae গণ/Genus: Alcedo, Linnaeus, 1758; প্রজাতি/Species: Alcedo hercules Laubmann, 1917[/otw_shortcode_info_box]
ভূমিকা: বাংলাদেশের পাখির তালিকায় Alcedo গণে বাংলাদেশে রয়েছে এর ৩টি প্রজাতি এবং পৃথিবীতে ১৫টি প্রজাতি। বাংলাদেশে প্রাপ্ত প্রজাতি ৩টি হচ্ছে ১.পাতি মাছরাঙা, ২. ব্লাইদের মাছরাঙা ও ৩. নীলকান মাছরাঙা,আমাদের আলোচ্য প্রজাতিটির নাম হচ্ছে নীলকান মাছরাঙা।
বর্ণনা: ব্লাইদের মাছরাঙা বনবাসী এক রক্তচক্ষু মাছশিকারি (দৈর্ঘ্য ২০ সেমি, ডানা ১০ সেমি, ঠোঁট ৫ সেমি, পা ১ সেমি, লেজ ৪.৫ সেমি। প্রাপ্তবয়ষ্ক পাখির পিঠ কালচে নীল ও দেহতল কমলা; মাথার ঘন সবুজ চাঁদিতে পাথালি নীল ফুটকির লাইন; কাঁধ-ঢাকনি ও ডানা কালচে সবুজাভ-নীল; ডানার পালক-ঢাকনিতে নীল ফুটকি; ডানার অন্যসব পালকের তুলনায় ডানার প্রান্তপালক কালচে। ওড়ার সময় এর উজ্জ্বল নীল পিঠ, পাছা ও লেজ নজরে পড়ে; গলা সাদা এবং বুক, পেট ও অবসারণী কমলা রঙের; ঘাড়ের পাশে সাদা ফুটকি আছে। ছেলেপাখির ঠোঁটের পুরোটাই কালো কিন্তু মেয়েপাখির ঠোঁটের নিচের ভাগ লালচে। ছেলে ও মেয়ে উভয়েরই মুখ ও চোখ রক্ত-লাল এবং পা ও পায়ের পাতা প্রবাল-লাল।
স্বভাব: ব্লাইদের মাছরাঙা প্রশস্ত পাতাওয়ালা গ্রীষ্মম-লীয় চিরসবুজ ও উপ-গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বনের প্রবহমান নদীতে বিচরণ করে; সাধারণত একাকী বসে থাকতে দেখা যায়। পানির পাশে পাথরে অথবা ডালে এরা বসে থাকে এবং হঠাৎ ঝাঁপ দিয়ে পানি থেকে শিকার ধরে আনে; খাদ্যতালিকায় রয়েছে মাছ ও জলজ পোকামাকড়। পানির ওপর ক্ষুদ্র ঝোপের মধ্যে লুকিয়ে বসতে এরা পছন্দ করে; ভয় পেলে ওড়ে না গিয়ে বরঙ ঝোঁপের ভিতর লুকিয়ে যায়; মাঝে মাঝে জোরে ও তীক্ষ্ণ সুরে ডাকে: চী-চিচী..। মার্চ-জুন মাসের প্রজনন ঋতুতে জলাশয়ের খাড়া পাড়ে গর্ত খুঁড়ে বাসা বানিয়ে এরা ডিম পাড়ে। ডিমগুলো সাদা, সংখ্যায় ৪-৬টি; মাপ ২.৬ × ২.১ সেমি। ছেলে ও মেয়ে উভয়ই বাসার সব কাজ করে।
বিস্তৃতি: ব্লাইদের মাছরাঙা বাংলাদেশের অনিয়মিত পাখি; শীতকালে হাইল হাওরে দেখা গেছে বলে একটি তথ্য আছে। উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে আরম্ভ করে নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার এবং চীনের দক্ষিণাঞ্চল, লাওস ও ভিয়েতনামে এর বৈশ্বিক বিস্তৃতি রয়েছে।
অবস্থা: ব্লাইদের মাছরাঙা বিশ্বে প্রায়-বিপদগ্রস্ত ও বাংলাদেশে বিপন্ন বলে বিবেচিত। বিশ্ব এদের মোট সংখ্যা পরিমাপ করা হয় নি, যদিও চীনে প্রজননক্ষম সংখ্যা ১০০ জোড়ার কম মনে করা হয়। বিগত দিনে যেহেতু এদের সংখ্যা কমার প্রবণতা দেখা গেছে তাই আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে প্রায়-বিপদগ্রস্ত (Near Threatened NT) বলে ঘোষণা করেছে।[২] বাংলাদেশের ১৯৭৪[১] ও ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত।[৩]
বিবিধ: ব্লাইদের মাছরাঙার বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ হারকিউলিস-এর মাছরাঙা (ল্যাটিন: : alcedo = মাছরাঙা; গ্রীক: hercules = হারকিউলিস, গ্রীক বীর)।
আলোকচিত্রের ইতিহাস: পশ্চিম কামেং অরুণাচল প্রদেশ, ভারত থেকে দুর্লভ এই ছবিটি এপ্রিল ২০১৫-তে তুলেছেন Rofikul Islam.
তথ্যসূত্র:
১. ইনাম আল হক ও এম. কামরুজ্জামান, (আগস্ট ২০০৯)। “পাখি”। আহমাদ, মোনাওয়ার; কবির, হুমায়ুন, সৈয়দ মোহাম্মদ; আহমদ, আবু তৈয়ব আবু। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ ২৬ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা – ৫১। আইএসবিএন 984-30000-0286-0।
২. “Alcedo hercules“, http://www.iucnredlist.org/details/22683024/0, The IUCN Red List of Threatened Species। সংগ্রহের তারিখ: ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮।
৩. বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত সংখ্যা, জুলাই ১০, ২০১২, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পৃষ্ঠা-১১৮৪৫৪।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।