[otw_shortcode_info_box border_type=”bordered” border_color_class=”otw-red-border” border_style=”bordered” shadow=”shadow-inner” rounded_corners=”rounded-10″]দ্বিপদ নাম: Aythya ferina সমনাম: Anas ferina Radde, Linnaeus, 1758 বাংলা নাম: পাতি ভুতিহাঁস, ইংরেজি নাম: Common Pochard. জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস জগৎ/রাজ্যKingdom: Animalia বিভাগ/Phylum: Chordata শ্রেণী/Class: Aves পরিবার/Family: Anatidae গণ/Genus: Aythya, Boie, 1822; প্রজাতি/Species: Aythya ferina (Linnaeus, 1758)[/otw_shortcode_info_box]
ভূমিকাঃ বাংলাদেশের পাখির তালিকায় Aythya গণে পৃথিবীতে রয়েছে ১২টি প্রজাতি এবং বাংলাদেশে রয়েছে ৫টি প্রজাতি। সেগুলো হচ্ছে, ১. বেয়ারের ভুতিহাঁস, ২. পাতি ভুতিহাঁস, ৩. টিকি হাঁস, ৪. বড় স্কপ ও ৫. মরচেরঙ ভুতিহাঁস। আমাদের আলোচ্য এই হাঁসটি হচ্ছে পাতি ভুতিহাঁস।
বর্ণনা: পাতি ভুতিহাঁস গম্বুজ-মাথা রূপালি হাঁস ( দৈর্ঘ্য ৪৮ সে.মি, ওজন ৮২০ গ্রাম, ডানা ২১ সেমি, ঠোঁট ৪.৬ সেমি, পা ৩.৭ সেমি, লেজ ৬.৫ সেমি)। প্রজননকালে ছেলেহাঁসের দেহের উপরিভাগ রূপালি-ধূসর ও দেহতলের বেশীর ভাগই ধূসরাভ-সাদা; মাথা তামাটে, পিঠ রূপালি-ধূসর ও কোমর কালো; ডানায় অনুজ্জ্বল ধূসর ছোট দাগ, লেজের উপরের ও নিচের ঢাকনি কালো; বগল ও ওড়ার পালক রূপালি-ধূসর; এবং বুক ও অবসারণী কালো; চোখ হলুদ, পা স্লেট-নীল, ও ঠোঁট কালো। প্রজননকাল ছাড়া ছেলেহাঁসের পিঠ বাদামি-ধূসর এবং দেহতল কালচে বাদামি; বুক বাদামি-কালো ও বগল বাদামি-ধূসর। মেয়েহাঁসের দেহের উপরিভাগ পীতাভ বাদামি-ধূসর এবং অনুজ্জ্বল দারুচিনি রঙের মাথা, ঘাড় ও দেহতল; পিঠ ও বগল পীতাভ বাদামি।
স্বভাব: পাতি ভুতিহাঁস হাওর, বিল, হ্রদ,ও লেগুনের খোলা অংশে বিচরণ করে; সাধারণতবড় বড় ঝাঁকে দেখা যায়। সাঁতার দিয়ে ও অগভীর পানিতে ডুব দিয়েপানির নিচে গিয়ে নিমজ্জিত উদ্ভিদ থেকে খাবার সংগ্রহ করে। খাদ্যতালিকায়রয়েছে লতাপাতা, কুঁড়ি, কচিকাণ্ড, বীজ, কেঁচো, চিংড়ি, শামুক-জাতীয় প্রাণী, জলজ পোকামাকড় এবং তাদের লার্ভা। বসন্তকালের প্রজনন ঋতুতে ইউরোপ, মধ্যএশিয়া ও সাইবেরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে ছেলেহাঁসেরা মৃদু স্বরে হিস হিস শব্দেশিস্ দেয় ও মেয়েহাঁস জোর গলায় ডাকে: র্কর… র্কর… র্কর…; এবং নল ওলম্বা ঘাসের মধ্যে মাটিতে নল ও নরম পালকের বাসা বানিয়ে ডিম পাড়ে।ডিমগুলো জলপাই রঙের, সংখ্যায় ৬-১৪টি, মাপ ৬.০× ৪.২ সেমি।
বিস্তৃতি: পাতি ভুতিহাঁস বাংলাদেশের সুলভ পরিযায়ী পাখি; শীতে চট্টগ্রাম, ঢাকা, রাজশাহী ও সিলেট বিভাগের নদী, হাওর ও বিলে বিচরণ করে। আফ্রিকা, ইউরোপ ও এশিয়ায় এর বৈশ্বিক বিস্তৃতি রয়েছে। এশিয়া মহাদেশে পাকিস্তান, ভারত, নেপাল, ভুটান, চীন ও ফিলিপাইনে রয়েছে।
অবস্থা: পাতি ভুতিহাঁস বিশ্বব্যাপী বিপদগ্রস্ত (Vulnerable) পাখি। এই প্রজাতির প্রজনন ঋতু এবং শীতকাল উভয় সময়ে একটি বড় পরিসীমা আছে, এবং এদের সংখ্যাও যথেষ্ট বড়। কিন্তু নতুন তথ্য দেখায় যে এদের সংখ্যা দ্রুততার সাথে সর্বাধিক হ্রাস পেয়েছে, এবং এর ফলে এটি বিপদগ্রস্ত হয়ে উঠেছে।[২] বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত।[৩]
বিবিধ: পাতি ভুতিহাঁসের বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ বানিয়ো সিন্ধুবিহঙ্গ (গ্রীক: aithuia = সামুদ্রিক পাখি – এরিস্টটলের উল্লেখানুসারে ; ল্যাটিন: ferinus = বন্য)।
তথ্যসূত্র:
১. ইনাম আল হক ও এম কামরুজ্জামান, (আগস্ট ২০০৯)। “পাখি”। আহমাদ, মোনাওয়ার; কবির, হুমায়ুন, সৈয়দ মোহাম্মদ; আহমদ, আবু তৈয়ব আবু। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ ২৬ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা – ২৮-২৯। আইএসবিএন 984-30000-0286-0।
২. “Aythya ferina“, http://www.iucnredlist.org/details/22680358/0, The IUCN Red List of Threatened Species। সংগ্রহের তারিখ: ২৯ আগস্ট ২০১৮।
৩. বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত সংখ্যা, জুলাই ১০, ২০১২, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পৃষ্ঠা-১১৮৪৫০।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।