[otw_shortcode_info_box border_type=”bordered” border_color_class=”otw-red-border” border_style=”bordered” shadow=”shadow-inner” rounded_corners=”rounded-10″]দ্বিপদ নাম: Aythya marila সমনাম: Anas marila, Linnaeus, 1761 বাংলা নাম: বড় স্কপ ইংরেজি নাম: Greater Scaup (Scaup Duck). জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস জগৎ/রাজ্যKingdom: Animalia বিভাগ/Phylum: Chordata শ্রেণী/Class: Aves পরিবার/Family: Anatidae গণ/Genus: Aythya, Boie, 1822; প্রজাতি/Species: Aythya marila (Linnaeus, 1761)[/otw_shortcode_info_box]
ভূমিকা: বাংলাদেশের পাখির তালিকায় Aythya গণে পৃথিবীতে রয়েছে ১২টি প্রজাতি এবং বাংলাদেশে রয়েছে ৫টি প্রজাতি। সেগুলো হচ্ছে, ১. বেয়ারের ভুতিহাঁস, ২. পাতি ভুতিহাঁস, ৩. টিকি হাঁস, ৪. বড় স্কপ ও ৫. মরচেরঙ ভুতিহাঁস। আমাদের আলোচ্য এই হাঁসটি হচ্ছে বড় স্কপ।
বর্ণনা: বড় স্কপ বা বড় স্কাউপ বাদামি রঙের বড় মাথাওয়ালা হাঁস (দৈর্ঘ্য ৪৬ সেমি, ওজন ১ কেজি, ডানা ২২ সেমি, ঠোঁট ৪.৩ সেমি, পা ৩.৫ সেমি, লেজ ৫.৫ সেমি)। প্রজননকালে ছেলেহাঁসের মাথা ও লেজ ছাড়া পিঠ ধূসর এবং দেহতল বিশেষ করে বুকের নিচের অংশ ও বগল সাদা; কালচে মাথায় সবুজ ও বেগুনি আভা; ঠোঁট কালো, ঠোঁটের ‘কাঁটা’ ধূসর নীল; চোখ সোনালী ও হলুদে মেশানো; কালচে পায়ের পর্দাসহ পা ও পায়ের পাতা ধূসরাভ-নীল। প্রজননকাল ছাড়া ছেলেহাঁসের মাথা, ঘাড় ও বুক বাদামি-কালো। অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলেহাঁসের দেহে ফুটকি থাকে; হালকা নানা রঙের ছাপসহ মাথা ও ঘাড় কালচে বাদামি; বুক পীতাভ-বাদামি, বগল বাদামি ও পেট সাদাটে বর্ণের। মেয়েহাঁসের পিঠ ও বগল ধূসর-সাদা; কপালে ও ঠোঁটের গোড়ার চারদিকে স্পষ্ট সাদা পট্টি রয়েছে। ২টি উপ-প্রজাতির মধ্যে A. m. marila বাংলাদেশে পাওয়া যায়।
স্বভাব: বড় স্কপ হাওর, বিল, হ্রদ, নদী ও উপকুলের লেগুনে বিচরণ করে; শীতের আবাসে নানা জাতের হাঁসের ঝাঁকে মিশে থাকে। সাঁতার কেটে, মাথা ডুবিয়ে অথবা ডুব দিয়ে পানির নিচে গিয়ে জলজ উদ্ভিদ থেকে খাদ্য সংগ্রহ করে; খাদ্যতালিকায় রয়েছে শামুক, ঝিনুক, জলজ পোকামাকড়, বীজ ও জলজ উদ্ভিদ। বসন্তে প্রজননকালে তুন্দ্রাঞ্চলে ছেলেহাঁস কোমল গলায় শিস দেয় এবং মেয়েহাঁস যান্ত্রিক শব্দে ডাকে: র্আর-র্আর-র্আর…; এবং মাটিতে বাটির মত খাদওয়ালা গর্ত করে তাতে ঘাস দিয়ে বাসা বানিয়ে ডিম পাড়ে। ডিম বাদামি-জলপাই ও পীত রঙের, সংখ্যায় ৫-১৩টি; মাপ ৬.২ × ৪.৩ সে,মি। ২৩-২৭ দিনে ডিম ফোটে; এবং ৪০-৪৫ দিনে ছানার ডানায় ওড়ার পালক গজায়।
বিস্তৃতি: বড় স্কপ বাংলাদেশের অনিয়মিত পাখি; শীতকালে সিলেট বিভাগের টাঙ্গুয়া ও এর কাছাকাছি হাওরে মাঝে মাঝে দেখা যায়। আমেরিকা, ইউরোপ ও এশিয়ায় বিস্তৃত। এশিয়াতে ভারত ও পাকিস্তানে এর বৈশ্বিক বিস্তৃতি রয়েছে।
অবস্থা: বড় স্কপ বিশ্বে বিপদমুক্ত বলে বিবেচিত। বিগত তিন প্রজন্ম ধরে এদের সংখ্যা কমেছে, তবে দুনিয়ায় এখন ১০,০০০-এর অধিক পূর্ণবয়স্ক পাখি আছে, তাই এখনও আশঙ্কাজনক পর্যায়ে এই প্রজাতি পৌঁছেনি। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত (Least Concern LC) বলে ঘোষণা করেছে।[২] বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত।[৩]।
বিবিধ: বড় স্কপের বৈজ্ঞানিক নাম Aythya marila – এর অর্থ ধূসর সিন্ধুবিহঙ্গ (গ্রীক:Aythya = সামুদ্রিক পাখি, এরিস্টটলের উল্লেখানুসারে ; marile = ধূসর) ।
তথ্যসূত্র:
১. ইনাম আল হক ও এম কামরুজ্জামান, (আগস্ট ২০০৯)। “পাখি”। আহমাদ, মোনাওয়ার; কবির, হুমায়ুন, সৈয়দ মোহাম্মদ; আহমদ, আবু তৈয়ব আবু। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ ২৬ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা – ২৮-২৯। আইএসবিএন 984-30000-0286-0।
২. “Aythya marila“, http://www.iucnredlist.org/details/22680398/0, The IUCN Red List of Threatened Species। সংগ্রহের তারিখ: ২৯ আগস্ট ২০১৮।
৩. বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত সংখ্যা, জুলাই ১০, ২০১২, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পৃষ্ঠা-১১৮৪৫০।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।