[otw_shortcode_info_box border_type=”bordered” border_color_class=”otw-red-border” border_style=”bordered” shadow=”shadow-inner” rounded_corners=”rounded-10″]দ্বিপদ নাম: Picus flavinucha সমনাম: Chrysophlegma flavinucha বাংলা নাম: বড় হলদেকুড়ালি ইংরেজি নাম: Greater Yellownape. জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস জগৎ/রাজ্যKingdom: Animalia বিভাগ/Phylum: Chordata শ্রেণী/Class: Aves পরিবার/Family: Picidae গণ/Genus: Picus, Linnaeus, 1758; প্রজাতি/Species: Picus flavinucha Gould, 1834[/otw_shortcode_info_box]
ভূমিকাঃ বাংলাদেশের পাখির তালিকায় Picus গণে বাংলাদেশে রয়েছে এর ৫টি প্রজাতি এবং পৃথিবীতে ১৫টি প্রজাতি। বাংলাদেশে প্রাপ্ত প্রজাতি চারটি হচ্ছে, ১. মেটেমাথা কাঠকুড়ালি, ২. ছোট হলদেকুড়ালি, ৩. বড় হলদেকুড়ালি ৪. দাগিবুক কাঠকুড়ালি ও ৫. দাগিগলা কাঠকুড়ালি। আমাদের আলোচ্য প্রজাতিটির নাম হচ্ছে বড় হলদেকুড়ালি।
বর্ণনা: বড় হলদেকুড়ালি সুদর্শন ঘাড়-ঝুটি পড়া কাঠঠোকরা (দৈর্ঘ্য ৩৩ সেমি, ওজন ১৮৫ গ্রাম,ডানা ১৭ সেমি, ঠোঁট ৪.২ সেমি, পা ৩ সেমি, লেজ ১২ সেমি)। প্রাপ্তবয়স্ক পাখির পিঠ হলদে সবুজ ও দেহতল জলপাই-ধূসর; মাথা ও ঘাড়ের পিছনে সোনালী-হলুদ ঝুটি, ডানার মধ্য-পালকে প্রশস্ত লাল ও কালো ডোরা; লেজ কালো; এবং ঘাড়ের পিছনে বাদামি। ঠোঁট হলদে-ধূসর, গোড়া কালচে ও আগা গজদন্তের মত; চোখ বাদামি-গাঢ় লাল; পা ও পায়ের পাতা ধূসর-সবুজ বা ফ্যাকাসে এবং নখর ফ্যাকাসে। ছেলে ও মেয়েপাখির চেহারায় পার্থক্য থুতনি ও গলার রঙয়ে, ছেলেপাখির ক্ষেত্রে যা হলুদ আর মেয়েপাখির ক্ষেত্রে লাল-বাদামি। ছেলেপাখি মেয়েপাখির চেয়ে ওজনে কিছুটা বেশি। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির ঘাড় ফ্যাকাসে, পীতাভ বা সাদা গলায় কালো চিতি এবং বেশ ধূসর পেট। ৭টি উপ-প্রজাতির মধ্যে P. f. flavinucha বাংলাদেশে পাওয়া যায়।
স্বভাব: বড় হলদেকুড়ালি প্রশস্ত পাতার চিরসবুজ ও পাতাঝরা বন, পর্বতেরপাদদেশের বন, প্যারাবন ও চা বাগানে বিচরণ করে; জোড়ায় বা ছোট পারিবারিকদলে থাকে; মাঝে মাঝে পেঙ্গা ও ফিঙের সহযোগী হয়ে শিকার করে। গাছের বাকলথেকেইএরা খাদ্য সংগ্রহ করে; খাদ্যতালিকায় রয়েছে পিঁপড়া, গাছ ছিদ্রকারীপোকা, উইপোকা, ফুল ও ফলের রস। জোড়ার পাখির সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য এরাকরুণ চীৎকারের মত ডাকে: পী-উ.. , বা কিউ.., বা চ্যাঙ্ক…। মার্চ-মে মাসেরপ্রজনন ঋতুতে সার বনে ছেলেপাখি মেয়েপাখিরপশ্চাদ্বাবন করে, ঠোঁটওপরমুখি করে ও শরীর কাঁপায়। বনের বড় গাছের কাণ্ডে অথবা ওপরমুখি শাখায় গর্তবানিয়ে বাসা করে ডিম পাড়ে। ডিমগুলো সাদা, সংখ্যায় ৩-৪টি, মাপ ২.৮×২.২সেমি।
বিস্তৃতি: বড় হলদেকুড়ালি বাংলাদেশের সুলভ আবাসিক পাখি; চট্টগ্রাম, খুলনা ও সিলেট বিভাগের চিরসবুজ ও প্যারাবনে পাওয়া যায়। ভারত, নেপাল, ভুটান, চীন ও ইন্দোনেশিয়াসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এর বৈশ্বিক বিস্তৃতি রয়েছে।
অবস্থা: বড় হলদেকুড়ালি বিশ্বে ও বাংলাদেশে বিপদমুক্ত বলে বিবেচিত। বিগত তিন প্রজন্ম ধরে এদের সংখ্যা কমেছে, তবে দুনিয়ায় এখন ১০,০০০-এর অধিক পূর্ণবয়স্ক পাখি আছে, তাই এখনও আশঙ্কাজনক পর্যায়ে এই প্রজাতি পৌঁছেনি। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত (Least Concern LC) বলে ঘোষণা করেছে।[২] বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত।[৩]
বিবিধ: বড় হলদেকুড়ালির বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ সোনাঘাড় কাঠঠোকরা (গ্রীক : pikos = কাঠঠোকরা, ল্যাটিন: flavus = সোনালী, nucha = ঘাড়)।
তথ্যসূত্র:
১. ইনাম আল হক ও এম. কামরুজ্জামান, (আগস্ট ২০০৯)। “পাখি”। আহমাদ, মোনাওয়ার; কবির, হুমায়ুন, সৈয়দ মোহাম্মদ; আহমদ, আবু তৈয়ব আবু। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ ২৬ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা – ৪১। আইএসবিএন 984-30000-0286-0।
২. “Chrysophlegma flavinucha“, http://www.iucnredlist.org/details/22681437/0, The IUCN Red List of Threatened Species। সংগ্রহের তারিখ: ২ সেপ্টেম্বর ২০১৮।
৩. বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত সংখ্যা, জুলাই ১০, ২০১২, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পৃষ্ঠা-১১৮৪৫২।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।