[otw_shortcode_info_box border_type=”bordered” border_color_class=”otw-red-border” border_style=”bordered” shadow=”shadow-inner” rounded_corners=”rounded-10″]বৈজ্ঞানিক নাম: Coturnix coturnix (Linnaeus, 1758) সমনাম: Tetrao coturnix Linnaeus, 1758 বাংলা নাম: পাতি বটেরা, বাত্রি (আলী) ইংরেজি নাম: Common Quail জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস জগৎ/রাজ্য Kingdom: Animalia বিভাগ/Phylum: Chordata শ্রেণী/Class: Aves পরিবার/Family: Phasianidae গণ/Genus: Coturnix, Bonnaterre, 1791; প্রজাতি/Species: Coturnix coturnix (Linnaeus, 1758)[/otw_shortcode_info_box]
ভূমিকা: বাংলাদেশের পাখির তালিকায় Coturnix গণে মোট যে তিনটি প্রজাতি পাওয়া যায় সেগুলো হলও, ১. রাজ বটেরা, ২. বৃষ্টি বটেরা ও ৩. পাতি বটেরা। আমাদের আলোচ্য হলো নিম্নোক্ত পাতি বটেরা।
বর্ণনা: পাতি বটেরা বাদামি রঙের গোলগাল ভূচর পাখি (দৈর্ঘ্য ২০ সেমি, ওজন ১০০ গ্রাম, ডানা ১০ সেমি, ঠোঁট ১.৫ সেমি, পা ২.৭ সেমি, লেজ ৩.৭ সেমি)। পুরুষ ও স্ত্রীপাখির চেহারায় কিছু ভিন্নতা আছে। পুরুষপাখির পিঠে লালচে-বাদামি ও কালো ডোরা এবং বল্লমের মত দাগ আছে; পীতাভ ভ্রু-রেখা ও মাথার চাঁদিতে পীতাভ ডোরা; গলায় অস্পষ্ট কালচে নোঙর চিহ্ন; লালচে পীতাভ বুকে উজ্জ্বল ছিটা-দাগ; বাদামি বগলে কালো ছিটা-দাগ; এবং দেহতলের বাকি অংশ হালকা পীতাভ। স্ত্রীপাখির থুতনি ও গলায় হালকা পীতাভ ও বুকে কালো তিল থাকে। অপ্রাপ্তবয়ষ্ক পাখি স্ত্রীপাখির মত, তবে রং অনুজ্জ্বল। ৪টি উপ-প্রজাতির মধ্যে C. c. coturnix বাংলাদেশে পাওয়া যায়।
স্বভাব: পাতি বটেরা সাধারণত উঁচু তৃণভূমি, খামার ও ঘন ঘাসের চারণভূমিতে বিচরণ করে; জোড়ায় অথবা পারিবারিক দলে বিচরণ করে। তৃণভূমি ও শস্যক্ষেতে আস্তে আস্তে হেঁটে এরা খাবার খুঁজে বেড়ায়; খাদ্যতালিকায় রয়েছে ঘাসবীজ, শস্যদানা ও পোকামাকড়। আত্মরক্ষার জন্য ওড়ার চেয়ে দৌড়ে পালানো ও ঝোপের আড়াল থেকে এরা পছন্দ করে। তাড়া দিলে পালাবার সময় ডাক দেয়: চাক-চাক-চাক-চাক..; অন্য সময় উচ্চ স্বরে শিস্ দেয়; এবং গান গায়: হুইট-হুইট-টিট…। মার্চ-জুলাই মাসের প্রজনন মৌসুমে পুরুষপাখি সকাল ও সন্ধ্যায় ‘গান’ গেয়ে প্রজনন এলাকা প্রতিষ্ঠা করে। এরা তৃণভূমি বা খামারে মাটির গর্তে লতাপাতা দিয়ে বাসা বানিয়ে ডিম পাড়ে। ডিমগুলো তামাটে বাদামি অথবা হলদে-পীতাভ বা লালচে-বাদামি, সংখ্যায় ৫-১৩টি, মাপ ৩.০ – ২.৩ সেমি। ১৬-১৮ দিনে ডিম ফোটে।
বিস্তৃতি: পাতি বটেরা বাংলাদেশের বিরল পরিযায়ী পাখি; শীতে রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের তৃণভূমিতে দেখা গেছে; অতীতে ঢাকা এবং সিলেট বিভাগে পাওয়া যেত। পাতি বটেরা ইউরোপ থেকে পশ্চিম এশিয়ার অর্ধেক পর্যন্ত বিস্তৃত। শ্রীলংকা ও ভুটান ছাড়া শীতকালে সমগ্র ভারত উপমহাদেশ ও আফ্রিকাতে দেখা যায়।
অবস্থা: পাতি বটেরা বিশ্বে ও বাংলাদেশে বিপদমুক্ত বলে বিবেচিত। বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এই পাখি প্রজাতিটি সংরক্ষিত।[২]
বিবিধ: পাতি বটেরার বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ বটেরা (ল্যাটিন: coturnix = বটেরা )।
তথ্যসূত্র:
১. সাজেদা বেগম, (আগস্ট ২০০৯)। “পাখি”। আহমাদ, মোনাওয়ার; কবির, হুমায়ুন, সৈয়দ মোহাম্মদ; আহমদ, আবু তৈয়ব আবু। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ ২৬ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা -০০। আইএসবিএন 984-30000-0286-0।
২. বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত সংখ্যা, জুলাই ১০, ২০১২, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পৃষ্ঠা-১১৮৪৪৮।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।