[otw_shortcode_info_box border_type=”bordered” border_color_class=”otw-red-border” border_style=”bordered” shadow=”shadow-inner” rounded_corners=”rounded-10″]দ্বিপদ নাম: Dinopium shorii সমনাম: Picus shorii Vigors, 1832 বাংলা নাম: হিমালয়ী কাঠঠোকরা ইংরেজি নাম: Himalayan Goldenback (Himalayan flameback). জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস জগৎ/রাজ্যKingdom: Animalia বিভাগ/Phylum: Chordata শ্রেণী/Class: Aves পরিবার/Family: Picidae গণ/Genus: Dinopium, Rafinesque, 1814; প্রজাতি/Species: Dinopium shorii (Vigors, 1832)[/otw_shortcode_info_box]
ভূমিকাঃ বাংলাদেশের পাখির তালিকায় Dinopium গণে বাংলাদেশে রয়েছে এর ৩টি প্রজাতি এবং পৃথিবীতে ৪টি প্রজাতি। বাংলাদেশে প্রাপ্ত প্রজাতি তিনটি হচ্ছে, ১. বাংলা কাঠঠোকরা, ২. পাতি কাঠঠোকরা ও ৩. হিমালয়ী কাঠঠোকরা। আমাদের আলোচ্য প্রজাতিটির নাম হচ্ছে হিমালয়ী কাঠঠোকরা।
বর্ণনা: হিমালয়ী কাঠঠোকরা তিন আঙুলে গাছ আঁকড়ে চলা কাঠঠোকরা (দৈর্ঘ্য ৩১ সেমি, ওৎন ১১০ গ্রাম, ডানা ১৫.৮ সেমি, ঠোঁট ৪ সেমি, লেজ ১০ সেমি)। প্রাপ্তবয়স্ক পাখির পিঠ সোনালী-হলুদ এবং সাদা দেহতলে কালো খাড়া দাগ; ফুটকিহীন কালো ঘাড়; পিঠ সোনালী-হলুদ; কোমর উজ্জ্বল লাল; লেজ কালো; গলার মাঝখানটা বাদামি-পীতাভ। এর চোখ ও ঘাড়ের মধ্যে ফ্যাকাসে-বাদামি মধ্যভাগসহ বিভক্ত অস্পষ্ট কালো ডোরা রয়েছে; চোখের পিছন থেকে প্রশস্ত সাদা ভ্রু পিছনের দিকে চলে গেছে; কালো চোখের ডোরা চোখ থেকে ঘাড়, সাদা বর্ণ ঠোঁটের গোড়া থেকে ঘাড়ের তল পর্যন্ত বিস্তৃত; চোখ লালচে-বাদামি, ঠোঁট কালচে এবং পা ও পায়ের পাতা ফ্যাকাসে। ছেলে ও মেয়েপাখির চেহারার পার্থক্য শুধু তাদের মাথার চাঁদি ও চূড়ায়; ছেলেপাখির চাঁদি ও চূড়া উজ্জ্বল লাল, আর মেয়েপাখির কপাল ও চাঁদির সামনের ভাগ বাদামি-কালো এবং চাঁদি ও চূড়া লম্বা সাদা ডোরাসহ কালো। ২টি উপ-প্রজাতির মধ্যে D. s. shorii বাংলাদেশে পাওয়া যায়।
স্বভাব: হিমালয়ী কাঠঠোকরা অর্ধ-চিরসবুজ ও প্রশস্ত পাতা ওয়ালা পত্রঝরা বনেবিচরণ করে; সাধারণত একা, জোড়ায় বা পারিবারিক দলে দেখা যায়। মাটিতেলাফিয়ে বা গাছের কাণ্ডের চারদিকে ঘুরে খাবার সংগ্রহ করে; খাদ্যতালিকায়রয়েছে পিঁপড়া ও নানা জাতের পোকা। খাওয়ার সময় এরা বারংবার ডাকে: ক্লাক – ক্লাক – ক্লাক..। মার্চ-মে মাসের প্রজনন ঋতুতে ছেলেপাখি মেয়েপাখিরপাশাপাশি ওড়ে চলে এবং বার বার ডাকে: কি-কি-কি-কি …; তারপর গাছের কাণ্ডে বাবড় ডালে গর্ত খুঁড়ে বাসা বানিয়ে ডিম পাড়ে। ডিম সাদা, সংখ্যায় ৩টি; মাপ ২.৯×২.০ সেমি। ছেলে ও মেয়ে উভয়ই বাসার সব কাজ করে।
বিস্তৃতি: হিমালয়ী কাঠঠোকরা বাংলাদেশের বিরল আবাসিক পাখি; ঢাকা ও সিলেট বিভাগের বনে বিচরণ করে। ভারত, নেপাল, ভুটান ও হিমালয় থেকে মিয়ানমার পর্যন্ত দক্ষিণ এশিয়ায় এর বৈশ্বিক বিস্তৃতি রয়েছে।
অবস্থা: হিমালয়ী কাঠঠোকরা বিশ্বে বিপদমুক্ত এবং বাংলাদেশে অপ্রতুল-তথ্য শ্রেণিতে রয়েছে। বিগত তিন প্রজন্ম ধরে এদের সংখ্যা কমেছে, তবে দুনিয়ায় এখন ১০,০০০-এর অধিক পূর্ণবয়স্ক পাখি আছে, তাই এখনও আশঙ্কাজনক পর্যায়ে এই প্রজাতি পৌঁছেনি। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত (Least Concern LC) বলে ঘোষণা করেছে।[২] বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত।[৩]
বিবিধ: হিমালয়ী কাঠঠোকরার বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ শোরের বলীয়ান (গ্রীক : deinos = শক্তিমান, opos = চেহারা; shorii = ফ্রেডেরিক জন শোরের সম্মানে, ১৭৯৯-১৮৩৭)।
তথ্যসূত্র:
১. ইনাম আল হক ও এম. কামরুজ্জামান, (আগস্ট ২০০৯)। “পাখি”। আহমাদ, মোনাওয়ার; কবির, হুমায়ুন, সৈয়দ মোহাম্মদ; আহমদ, আবু তৈয়ব আবু। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ ২৬ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা – ৪১। আইএসবিএন 984-30000-0286-0।
২. “Dinopium shorii“, http://www.iucnredlist.org/details/22681496/0, The IUCN Red List of Threatened Species। সংগ্রহের তারিখ: ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮।
৩. বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত সংখ্যা, জুলাই ১০, ২০১২, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পৃষ্ঠা-১১৮৪৫২।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।