[otw_shortcode_info_box border_type=”bordered” border_color_class=”otw-red-border” border_style=”bordered” shadow=”shadow-inner” rounded_corners=”rounded-10″]দ্বিপদ নাম: Eudynamys scolopaceus সমনাম: Cuculus scolopaceus Linnaeus, 1758 বাংলা নাম: এশীয় কোকিল ইংরেজি নাম: Asian Koel. জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস জগৎ/রাজ্য Kingdom: Animalia বিভাগ/Phylum: Chordata শ্রেণী/Class: Aves পরিবার/Family: Cuculidae গণ/Genus: Eudynamys, Vigors and Horsfield, 1827; প্রজাতি/Species: Eudynamys scolopaceus (Linnaeus, 1758)[/otw_shortcode_info_box]
ভূমিকা: বাংলাদেশের পাখির তালিকায় Eudynamys গণে বাংলাদেশে এবং পৃথিবীতে রয়েছে এর ১টি প্রজাতি। বাংলাদেশে এবং পৃথিবীতে প্রাপ্ত ও আমাদের আলোচ্য প্রজাতিটির নাম হচ্ছে এশীয় কোকিল।
বর্ণনা: এশীয় কোকিল পার্থক্যসূচক লাল চোখের লম্বা লেজ ওয়ালা কালচে পাখি (দৈর্ঘ্য ৪৩ সেমি., ওজন ১৭০ গ্রাম, ডানা ২২ সেমি., ঠোঁট ৩.৩ সেমি., পা ৩.৫ সেমি., লেজ ২০ সেমি.)। ছেলেপাখির চেহারায় মেয়ে থেকে বেশ অমিল রয়েছে। ছেলেপাখির পুরো চকচকে কালো রঙের মধ্যে নীল ও সবুজের আমেজ থাকে। মেয়েপাখির পিঠে বাদামির ওপর সাদা ও পীতাভ চিতি। সাদা থুতনি, গলা, বুক, পেট, বগল, লেজের নিচের কোর্ভাট ও অবসারণীতে কালচে বাদামি ডোরা রয়েছে। কালচে বাদামি লেজে তীর্যক সাদা ডোরা থাকে। ছেলে ও মেয়েপাখি উভয়েরই চোখ লাল, ঠোঁট আপেল-সবুজ, পা ও পায়ের পাতা ফ্যাকাসে, নখর শিঙ-রঙা এবং পদতল সাদাটে। পীতাভ ডোরা ও কালচে চোখের রঙ ছাড়া অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখিকে পূর্ণবয়স্ক মেয়েপাখির মত দেখায়। মেয়ে ছানা পাখির মাথা, গলা ও বুক বেশ কালো। ১৩টি উপ-প্রজাতির মধ্যে E. s. malayana বাংলাদেশে পাওয়া যায়।
স্বভাব: এশীয় কোকিল বন, বৃক্ষভূমি, আবাদি জমি, গ্রামাঞ্চল, শহর, বাগান ও রাস্তার পাশের গাছে বিচরণ করে। সাধারণত একা থাকে। বেশ চুপিসারে থাকে, যতটা না দেখা যায় তার চেয়ে খুব কম এর আওয়াজ শোনা যায়। ফলদ গাছে ডুমুর ও অন্য রসালো ফল খায়। কখনও শুঁয়োপোকা, ছারপোকা ও ছোট পাখির ডিম খায়। মার্চ-জুলাই মাস প্রজনন ঋতু। পূর্বরাগের সময় ছেলেপাখি একটি মাত্র শব্দে তীক্ষ্ণ চিৎকারে বার বার ডাকে: কো-এল…। মেয়েপাখি কদাচ সাড়া দিয়ে অনুরক্তিক ভাবে ডাকে: উক-উক-উক…। বাসা তৈরি, ডিম ফোঁটানো বা ছানার যত্ন নেয় না। মেয়েপাখি কাকের বাসায় একটি ডিম পাড়ে। ডিম লালচে-বাদামি ফুসকুড়িসহ সবুজাভ-ধূসর। ১৩-২০দিনে ডিম ফোটে।
বিস্তৃতি: এশীয় কোকিল বাংলাদেশের সুলভ আবাসিক পাখি; সব বিভাগের বনে, বাগানে ও লোকালয়ে বিচরণ করে। পাকিস্তান, ভারত, নেপাল, ভুটান, শ্রীলংকা, চিনসহ দক্ষিণ থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এর বৈশ্বিক বিস্তৃতি রয়েছে।
অবস্থা: এশীয় কোকিল বিশ্বে ও বাংলাদেশে বিপদমুক্ত বলে বিবেচিত। বিগত তিন প্রজন্ম ধরে এদের সংখ্যা কমেছে, তবে দুনিয়ায় এখন ১০,০০০-এর অধিক পূর্ণবয়স্ক পাখি আছে, তাই এখনও আশঙ্কাজনক পর্যায়ে এই প্রজাতি পৌঁছেনি। সে কারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত (Least Concern LC) বলে ঘোষণা করেছে।[২] বাংলাদেশের ১৯৭৪[১] ও ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এই এশীয় কোকিলকে সংরক্ষিত ঘোষণা করা হয়েছে।[৩]
বিবিধ: এশীয় কোকিলের বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ বলবান বনচ্যাগা (গ্রীক: eudynamos = বলবান, scolopax = বনচ্যাগা, aceus = সদৃশ )।
তথ্যসূত্র:
১. মো: আনোয়ারুল ইসলাম ও সুপ্রিয় চাকমা, (আগস্ট ২০০৯)। “পাখি”। আহমাদ, মোনাওয়ার; কবির, হুমায়ুন, সৈয়দ মোহাম্মদ; আহমদ, আবু তৈয়ব আবু। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ ২৬ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা – ৭৩। আইএসবিএন 984-30000-0286-0।
২. “Eudynamys scolopaceus“, http://www.iucnredlist.org/details/22684049/0, The IUCN Red List of Threatened Species। সংগ্রহের তারিখ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮।
৩. বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত সংখ্যা, জুলাই ১০, ২০১২, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পৃষ্ঠা-১১৮৫০৯।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।