[otw_shortcode_info_box border_type=”bordered” border_color_class=”otw-red-border” border_style=”bordered” shadow=”shadow-inner” rounded_corners=”rounded-10″]বৈজ্ঞানিক নাম/Scientific Name: Francolinus Francolinus সমনাম: Tetrao Francolinus, Linnaeus, 1766 বাংলা নাম: কালা তিতির, ইংরেজি নাম/Common Name: Black Francolin. জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস জগৎ/রাজ্যKingdom: Animalia বিভাগ/Phylum: Chordata শ্রেণী/Class: Aves পরিবার/Family: Phasianidae গণ/Genus: Francolinus, Stephens, 1819; প্রজাতি/Species: Francolinus Francolinus (Linnaeus, 1766)[/otw_shortcode_info_box]
ভূমিকা: বাংলাদেশের পাখির তালিকায় Francolinus গণে তিন প্রজাতির তিতির পাওয়া যায় সেগুলো হলও ১. কালা তিতির, Black Francolin, Francolinus francolinus; ২. বাদা তিতির, Swamp Francolin, Francolinus gularis, এবং ৩. মেটে তিতির, Grey Francolin, Francolinus chinensis. এখানে আমাদের আলোচ্য পাখি কালা তিতির।
বর্ণনা: কালা তিতির বা Black Francolin ফাসিয়ানিডি গোত্র বা পরিবারের (Family) একটি সদস্য। এটি আমাদের দেশী মুরগির পরিবারের অন্তর্ভুক্ত এমনকি এর ইংরেজি নাম Francolin এর অর্থই হল খুদে মুরগি। ঠোঁটের ডগা থেকে লেজের গোড়া পর্যন্ত লম্বায় ৩৪ সেন্টিমিটার, পাখা ১৫ সেন্টিমিটার, ওজন আধা কেজির কিছুটা কম। পুরুষ কালা তিতির দেখতে বেশি সুন্দর। পিঠের দিকটায় কাজল কালোর ওপর সাদা-লালচে ফোঁটা-দাগ রয়েছে। ঠোঁট-মুখ কালো, গাল সাদা। গলা লাল রঙের। পেটের দিকটা কালো, পাখা কালো, হালকা বাদামির ওপর সাদা ফুটকি দেওয়া। মেয়ে কালা তিতিরের পিঠের দিকটা হালকা বাদামি রঙের, ঘাড়ের পেছনে লাল, কান ও চোখের উপরিভাগের রং লালাভ। গালের কাছে ও গলায় ঘিয়ে রঙের পালক রয়েছে। দেহের নিচের দিকটা সাদা-কালোয় দাগানো। মেয়ে-পুরুষ উভয়েরই চোখের রং বাদামি, ঠোঁট কালো। পা, আঙুল সিঁদুরে লাল হয়ে যায় মিলনকালীন—অর্থাৎ মার্চ থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত। শেখ ফরিদ ঘাসের বীজ, শস্যকণা, ঘাসের মোথা, খল, পোকা খেয়ে বাঁচে। ভোরবেলা অথবা সায়াহ্নে এরা বেশি তৎপর।[১]

স্বভাব: কালা তিতির সাধারণত মাটিতে থাকে এবং উঁচু ঘাসের বন, ঝোপ ঝাড়, চা বাগান, কৃষিখামারে একাকি বিচরণ করেবেড়ায়। এদের পুরুষও স্ত্রী পাখির চেহারার মধ্যে কিছু ভিন্নতা দেখাযায়।ছেলে পাখির পিঠ ঘন-কালো মাঝে মাঝে সাদা তিল থাকে মেয়ে পাখির পিঠফিকে ও বাদামি হয়ে থাকে। মার্চ-অক্টোবর মাসে প্রজননকালে লম্বা ঘাসের গোড়ায় অথবা ঘন ঝোপের নিচে মাটির খোদলে ঘাস দিয়ে বাসা বানিয়ে দিম পাড়ে। ডিমগুলো হলদে জলপাই থেকে উষ্ণ জলপাই- বাদামি। সংখ্যায় ৬-৯টি, মাপ৩.৮×৩.১সেমি। ডিম ফোটে ১৮-১৯ দিনে।
বিস্তৃতি: কালা তিতির বাংলাদেশের বিরল আবাসিক পাখি। একসময় ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিভাগের পাতাঝরা (শালও গজারি) বনে দেখা গেলেও বর্তমানে উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলিতে মাঝে মাঝে দেখা যায়। বাংলাদেশ ছাড়া তুরস্ক, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ভারতে দেখা যায়।
অবস্থা: ২০০৯ সালে এশিয়াটিক সোসাইটি কর্তৃক প্রকাশিত বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষে এটিকে বাংলাদেশে মহাবিপন্ন ও বিশ্বে বিপদ মুক্ত বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিবিধ: Francolinus গণে পৃথিবীতে ৫ প্রাজাতির পাখি রয়েছে। বাংলাদেশে রয়েছে তার ৩টি প্রাজাতি। সেগুলো হলো আমাদের আলোচ্য কালা তিতির ছাড়াও বাদা তিতির বা Swamp Francolin (Francolinus gularis) মেটে তিতির বা Grey Francolin (Francolinus pondicerianus)। পঞ্চগড় জেলায় কালা তিতিরকে শেখ ফরিদ নামে ডাকা হয়।
তথ্যসূত্র:
১. সাজেদা বেগম, (আগস্ট ২০০৯)। “পাখি”। আহমাদ, মোনাওয়ার; কবির, হুমায়ুন, সৈয়দ মোহাম্মদ; আহমদ, আবু তৈয়ব আবু। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ ২৬ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা -০০। আইএসবিএন 984-30000-0286-0।
২. বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত সংখ্যা, জুলাই ১০, ২০১২, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পৃষ্ঠা-১১৮৪৪৮।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।