[otw_shortcode_info_box border_type=”bordered” border_color_class=”otw-red-border” border_style=”bordered” shadow=”shadow-inner” rounded_corners=”rounded-10″]দ্বিপদ নাম: Gecinulus grantia সমনাম: Picus grantia Horsfield, 1840 বাংলা নাম: ধলামাথা কাঠকুড়ালি ইংরেজি নাম: Pale-headed Woodpecker. জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস জগৎ/রাজ্যKingdom: Animalia বিভাগ/Phylum: Chordata শ্রেণী/Class: Aves পরিবার/Family: Picidae গণ/Genus: Gecinulus, Blyth, 1845; প্রজাতি/Species: Gecinulus grantia (Horsfield, 1840)[/otw_shortcode_info_box]
ভূমিকাঃ বাংলাদেশের পাখির তালিকায় Gecinulus গণে বাংলাদেশে রয়েছে এর ১টি প্রজাতি এবং পৃথিবীতে ১টি প্রজাতি। বাংলাদেশে প্রাপ্ত ও আমাদের আলোচ্য প্রজাতিটির নাম হচ্ছে ধলামাথা কাঠকুড়ালি।
বর্ণনা: ধলামাথা কাঠকুড়ালি তিন আঙুলের বাদামি কাঠঠোকরা (দৈর্ঘ্য ২৫ সেমি, ডানা ১৩ সেমি, ঠোঁট ২.৬ সেমি, লেজ ৮.৩ সেমি)। প্রাপ্তবয়স্ক পাখির পিঠ অনুজ্জ্বল লাল-বাদামি ও দেহতল মেরুন থেকে মেরুন-বাদামি; ঘাড় ও ঘাড়ের পাশ সোনালী জলপাই-হলুদ; ডানার বাদামি প্রান্ত-পালকে পীতাভ-পাটল বর্ণের ডোরা রয়েছে; ফ্যাকাসে ডোরাসহ বাদামি লেজ; ও অনুজ্জ্বল মেরুন থেকে মেরুন-বাদামি পেট। এর ঠোঁট পাণ্ডুর বর্ণের, গোড়া ফ্যাকাসে; চোখ লালচে-বাদামি; পা ও পায়ের পাতা জলপাই রঙের এবং নখরগুলো শিং-বাদামি। ছেলে ও মেয়েতে পাখিতে পার্থক্য শুধু তাদের মাথার চাঁদির বর্ণে: ছেলেপাখির গাঢ় লাল-পাটল বর্ণ ও মেয়েপাখির সোনালী-জলপাই। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির অনুজ্জ্বল মাথা, বাদামি দেহতল ও মাথার চাঁদিতে লাল রঙ ছাড়া দেখতে মেয়েপাখির মত। ৩টি উপ-প্রজাতির মধ্যে G. g. grantia বাংলাদেশে পাওয়া যায়।
স্বভাব: ধলামাথা কাঠকুড়ালি বাঁশ বন ও আর্দ্র পাতাঝরা বনে বিচরণ করে; একা বা জোড়ায় দেখা যায়। গাছের কাণ্ড, বাঁশ, পতিত কাঠের গুঁড়ি ও ভূমি থেকে খাবার সংগ্রহ করে; খাদ্যতালিকায় রয়েছে পোকামাকড়, বিশেষ করে পিঁপড়া ও গুবরে পোকার ছানা। ছোট্ট লাফ দিয়ে এরা গাছের এক ডাল থেকে অন্য ডালে যায় এবং এক গাছ থেকে অন্য গাছে তরঙ্গাকারে ওপর-নিচ করে ওড়ে চলে; উঁচু থেকে ক্রমান্বয়ে নিচু, ৫-৬টি অনুনাসিক স্বরে ডাকে: চেইক-চেইক-চেইক-চেইক…; বিরক্তি প্রকাশ করতে হ্রস্ব ও তীক্ষ্ণ শব্দে ডাকে: কেরেক-কেরেক-কেরেক…। মার্চ-মে মাসের প্রজনন ঋতুতে গাছের কাটা অংশেরপচাগোড়ায় গর্ত খুঁড়ে বাসা বাঁধে এবং নতুন প্রবেশ-পথ তৈরি করে পরপর কয়েক বছর বাসাটি ব্যবহার করে। মেয়েপাখি ৩টি ডিম পাড়ে; ডিম সাদা, মাপ ২.৫×১.৯ সেমি।
বিস্তৃতি: ধলামাথা কাঠকুড়ালি বাংলাদেশের বিরল আবাসিক পাখি; চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের চিরসবুজ বনে পাওয়া যায়। হিমালয়ের পূর্বাঞ্চল ও চীনের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এর বৈশ্বিক বিস্তৃতি রয়েছে; দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ভারত, ভুটান, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, লাওস ও ভিয়েতনামে রয়েছে।
অবস্থা: ধলামাথা কাঠকুড়ালি বিশ্বে বিপদমুক্ত এবং বাংলাদেশে অপ্রতুল-তথ্য শ্রেণিতে রয়েছে। বিগত তিন প্রজন্ম ধরে এদের সংখ্যা কমেছে, তবে দুনিয়ায় এখন ১০,০০০-এর অধিক পূর্ণবয়স্ক পাখি আছে, তাই এখনও আশঙ্কাজনক পর্যায়ে এই প্রজাতি পৌঁছেনি। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত (Least Concern LC) বলে ঘোষণা করেছে।[২] বাংলাদেশের ১৯৭৪[১] ও ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত।[৩]
আলোকচিত্রের ইতিহাস: আলোকচিত্রে ব্যবহৃত ধলামাথা কাঠকুড়ালির ছবি তুলেছেন রোইং, অরুণাচল প্রদেশ থেকে সন্দীপন ভট্টাচার্য জানুয়ারি ২০১৬-তে।
তথ্যসূত্র:
১. ইনাম আল হক ও এম. কামরুজ্জামান, (আগস্ট ২০০৯)। “পাখি”। আহমাদ, মোনাওয়ার; কবির, হুমায়ুন, সৈয়দ মোহাম্মদ; আহমদ, আবু তৈয়ব আবু। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ ২৬ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা – ৪১। আইএসবিএন 984-30000-0286-0।
২. “Gecinulus grantia“, http://www.iucnredlist.org/details/22681525/0, The IUCN Red List of Threatened Species। সংগ্রহের তারিখ: ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮।
৩. বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত সংখ্যা, জুলাই ১০, ২০১২, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পৃষ্ঠা-১১৮৪৫২।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।