কলজেবুটি কাঠকুড়ালি বিশ্বে বিপদমুক্ত এবং বাংলাদেশের অনিয়মিত পাখি

[otw_shortcode_info_box border_type=”bordered” border_color_class=”otw-red-border” border_style=”bordered” shadow=”shadow-inner” rounded_corners=”rounded-10″]দ্বিপদ নাম: Hemicircus canente (Lesson, 1830) সমনাম: Picus canente Lesson, 1830 বাংলা নাম: কলজেবুটি কাঠকুড়ালি ইংরেজি নাম: Heart-spotted Woodpecker. জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস জগৎ/রাজ্যKingdom: Animalia বিভাগ/Phylum: Chordata শ্রেণী/Class: Aves পরিবার/Family: Picidae গণ/Genus: Hemicircus, Swainson, 1837; প্রজাতি/Species: Hemicircus canente (Lesson, 1830)[/otw_shortcode_info_box]

ভূমিকা: বাংলাদেশের পাখির তালিকায় Hemicircus গণে বাংলাদেশে রয়েছে এর ১টি প্রজাতি এবং পৃথিবীতে ২টি প্রজাতি। বাংলাদেশে প্রাপ্ত ও আমাদের আলোচ্য প্রজাতিটির নাম হচ্ছে কলজেবুটি কাঠকুড়ালি।

বর্ণনা: কলজেবুটি কাঠকুড়ালি বড় কালো টুপি পড়া কাঠঠোকরা (দৈর্ঘ্য ১৬সেমি, ওজন ৩৬ গ্রাম, ডানা ৯.৭ সেমি, ঠোঁট ২.৩ সেমি, পা ২ সেমি, লেজ ৩.২সেমি)।প্রাপ্তবয়স্ক পাখির পিঠ কালো ও পীতাভ এবং দেহতল কালচে জলপাই ওকালোয় মেশানো; ডানার গোড়ার-পালক সাদা; ডানা-ঢাকনি ও পিঠ-ঢাকনিতে ছোট ছোটপাতা আকারের কালো ছোপ রয়েছে; থুতনি, গলা ও ঘাড়ের পাশ পীতাভ-সাদা। এর ঠোঁটঘন শিং-বাদামি, মুখ তামাটে-পাটল বর্ণের ও চোখ জলপাই-বাদামি; পা, পায়েরপাতা ও নখর কালচে-স্লেট রঙের বা বাদামি-কালো। ছেলে ও মেয়েপাখির চেহারারপার্থক্য তাদের কপালের বর্ণে: ছেলেপাখির কপাল কালো ও মেয়েপাখির সাদা।অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির কপালের ও চাঁদির কালো ফুটকি এবং পালকের প্রান্তদেশেরসাদাটে অংশ ছাড়া দেখতে মেয়েপাখিরমত।

স্বভাব: কলজেবুটি কাঠকুড়ালি চিরসবুজ ও আর্দ্র পাতাঝরা বন, অপ্রধান বন ওবাঁশজঙ্গলে বিচরণ করে; সাধারণত একা বা জোড়ায় দেখা যায়। সরু ডালেরপ্রান্তদেশ বাউঁচু গাছের পাতা ঢাকা ডালে খাবার খায়; খাদ্যতালিকায়রয়েছে পিঁপড়া, উই ও অন্যান্য পোকামাকড়। ডালের চারদিকে ঘুরে অবিরাম মৃদুআঘাত করে এরা ফাটলে লুকিয়ে থাকা পোকা বের করে খায়; খাওয়া ও ওড়ার সময়দুটি তীক্ষ্ণ শব্দে বার বার ডাকে: ক্লিক – ক্লিক…; এবং দীর্ঘ, তীব্র ওমনোহর সুরে ডাকে: টুই-টুই-টিটিটিটিটিটি…।নভেম্বর-এপ্রিল মাসের প্রজননঋতুতে গাছের মৃত কাণ্ডে ১৫-২০ সেমি. দীর্ঘ গর্ত খুঁড়ে বাসা বানিয়ে ডিমপাড়ে। ডিমগুলো সাদা; সংখ্যায় ২-৩টি ; মাপ ২.৪×১.৮ সেমি।

আরো পড়ুন:  বাংলা কাঠঠোকরা বিশ্বে বিপদমুক্ত এবং বাংলাদেশের সুলভ আবাসিক পাখি

বিস্তৃতি: কলজেবুটি কাঠকুড়ালি বাংলাদেশের অনিয়মিত পাখি; কালে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে দেখা গেছে বলে দুটি তথ্য আছে। মিয়ানমার, থাইল্যান্ড ও ইন্দোচীনসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এর বৈশ্বিক বিস্তৃতি রয়েছে।

অবস্থা: কলজেবুটি কাঠকুড়ালি বিশ্বে বিপদমুক্ত এবং বাংলাদেশে অপ্রতুল-তথ্য শ্রেণিতে রয়েছে। বিগত তিন প্রজন্ম ধরে এদের সংখ্যা কমেছে, তবে দুনিয়ায় এখন ১০,০০০-এর অধিক পূর্ণবয়স্ক পাখি আছে, তাই এখনও আশঙ্কাজনক পর্যায়ে এই প্রজাতি পৌঁছেনি। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত (Least Concern LC) বলে ঘোষণা করেছে।[২] বাংলাদেশের ১৯৭৪[১] ও ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত।[৩]

বিবিধ: কলজেবুটি কাঠকুড়ালির বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ মেটে অর্ধ-লেজি (গ্রীক: hemi = অর্ধ, kerkos = লেজ; ল্যাটিন : canenti = ধূসর)।

তথ্যসূত্র:

১. ইনাম আল হক ও এম. কামরুজ্জামান, (আগস্ট ২০০৯)। “পাখি”। আহমাদ, মোনাওয়ার; কবির, হুমায়ুন, সৈয়দ মোহাম্মদ; আহমদ, আবু তৈয়ব আবু। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ ২৬ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা – ৪১। আইএসবিএন 984-30000-0286-0।

২. “Hemicircus canente“, http://www.iucnredlist.org/details/22681572/0,  The IUCN Red List of Threatened Species। সংগ্রহের তারিখ: ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮।

৩. বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত সংখ্যা, জুলাই ১০, ২০১২, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পৃষ্ঠা-১১৮৪৫২।

Leave a Comment

error: Content is protected !!