বাসন্তী লটকনটিয়া বিশ্বে বিপদমুক্ত এবং বাংলাদেশের দুর্লভ আবাসিক পাখি

[otw_shortcode_info_box border_type=”bordered” border_color_class=”otw-red-border” border_style=”bordered” shadow=”shadow-inner” rounded_corners=”rounded-10″]দ্বিপদ নাম: Loriculus vernalis সমনাম: Psittacus vernalis Sparrman, 1787 বাংলা নাম: বাসন্তী লটকনটিয়া ইংরেজি নাম: Vernal Hanging Parrot, (Indian Lorikeet). জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস জগৎ/রাজ্য Kingdom: Animalia বিভাগ/Phylum: Chordata শ্রেণী/Class: Aves পরিবার/Family: Psittacidae গণ/Genus: Loriculus, Blyth, 1850; প্রজাতি/Species: Loriculus vernalis (Sparrman, 1787)[/otw_shortcode_info_box]

ভূমিকা: বাংলাদেশের পাখির তালিকায় Loriculus গণে বাংলাদেশে রয়েছে ১টি প্রজাতি এবং পৃথিবীতে রয়েছে এর ১২টি প্রজাতি। বাংলাদেশে প্রাপ্ত এবং আমাদের আলোচ্য প্রজাতিটির নাম হচ্ছে বাসন্তী লটকনটিয়া।

বর্ণনা: বাসন্তী লটকনটিয়া লাল ঠোঁট ও সবুজ দেহের ছোট্ট গোলগাল টিয়া (দৈর্ঘ্য ১৪ সেমি, ডানা ৯.৬ সেমি, ঠোঁট ১.৩ সেমি, পা ১.১ সেমি, লেজ ৪.৩সেমি)। এর লালকোমর, লেজউপরি-ঢাকনি ও গলার নীলকান্তমণি রঙের পট্টি ছাড়াপুরো দেহ সবুজ; লালচে-কমলা অথবা প্রবাল-লাল ঠোঁটের আগা হলুদ; চোখবাদামি-পীতাভ কিংবা হলুদাভ-সাদা বা ধূসরাভ-খাকি; পা ও পায়ের পাতাফিকে-কমলা কিংবা ফিকে হলুদাভ-স্লেট এবং নখর শিঙ-বাদামি। মেয়েপাখির গলারঅপর্যাপ্ত নীলকান্তমণি পট্টির সাহায্যে ছেলে থেকে আলাদা করা যায়। তরুণপাখির চোখ বাদামি, কোমর লাল ও লেজের উপরি-ঢাকনি লাল-সবুজে মেশানো।

স্বভাব: বাসন্তী লটকনটিয়া আর্দ্র পাতাঝরা ও প্রশস্ত পাতাওয়ালা চিরসবুজ বনে বিচরণ করে; সচরাচর পারিবারিক দলে কিংবা সর্বাধিক ৫০টি পাখির ঝাঁকে দেখা যায়। বনের ফলদ গাছে এরা খাবার খায়; খাদ্যতালিকায় রয়েছে বন্য ডুমুরের নরম ফলত্বক, রসালো ফল, বাঁশ বীজ ও ফুলের মিষ্টি রস। ঝুলে থাকতে এরা পছন্দ করে, গাছের ডালে উল্টো ঝুলে বিচরণ করে, খাবার খায় ও বিশ্রাম নেয়; ওড়ার সময় পুনঃপুন ডাকে: চট-চট-চট..। জানুয়ারি-জুন মাসের প্রজনন ঋতুতে মরা গাছের প্রাকৃতিক গর্তে সচরাচর সবুজ পাতার পত্রফলক বিছিয়ে ১ মিটার গভীর বাসা বানিয়ে এরা ডিম পাড়ে। ডিমগুলো চকচকে সাদা, কখনও বাদামি রঙের; সংখ্যায় ৩-৪টি; মাপ ১.৯×১.৫ সেমি.।

বিস্তৃতি: বাসন্তী লটকনটিয়া বাংলাদেশের দুর্লভ আবাসিক পাখি; চট্টগ্রাম, সিলেট বিভাগের চিরসবুজ বন ও বনভূমিতে পাওয়া যায়। ভারত, নেপাল, মায়ানমার ও ইন্দোচীনসহ দক্ষিণ-পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়ায় এর বৈশ্বিক বিস্তৃতি রয়েছে।

আরো পড়ুন:  ফেনীর পরশুরাম থেকে ৪০০টি মদনা টিয়া উদ্ধার

অবস্থা: বাসন্তী লটকনটিয়া বিশ্বে ও বাংলাদেশে বিপদমুক্ত বলে বিবেচিত। বিগত তিন প্রজন্ম ধরে এদের সংখ্যা কমেছে, তবে দুনিয়ায় এখন ১০,০০০-এর অধিক পূর্ণবয়স্ক পাখি আছে, তাই এখনও আশঙ্কাজনক পর্যায়ে এই প্রজাতি পৌঁছেনি। সে কারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত (Least Concern LC) বলে ঘোষণা করেছে।[২] বাংলাদেশের ১৯৭৪[১] ও ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এই বড় কুবোকে সংরক্ষিত ঘোষণা করা হয়েছে।[৩]

বিবিধ: বাসন্তী লটকনটিয়ার বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ সবুজ লোরি (মালয়:lori = লোরি, ল্যাটিন: culus = এর; vernalis = সবুজ)।

তথ্যসূত্র:

১. কাজী জাকের হোসেন, (আগস্ট ২০০৯)। “পাখি”। আহমাদ, মোনাওয়ার; কবির, হুমায়ুন, সৈয়দ মোহাম্মদ; আহমদ, আবু তৈয়ব আবু। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ ২৬ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা – ৭৩। আইএসবিএন 984-30000-0286-0।

২. “Loriculus vernalis“, http://www.iucnredlist.org/details/22685366/0,  The IUCN Red List of Threatened Species। সংগ্রহের তারিখ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮।

৩. বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত সংখ্যা, জুলাই ১০, ২০১২, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পৃষ্ঠা-১১৮৪৫৬।

Leave a Comment

error: Content is protected !!