স্মিউ হাঁস বিশ্বে বিপদমুক্ত এবং বাংলাদেশের অনিয়মিত পাখি

[otw_shortcode_info_box border_type=”bordered” border_color_class=”otw-red-border” border_style=”bordered” shadow=”shadow-inner” rounded_corners=”rounded-10″]দ্বিপদ নাম: Mergellus albellus (Selby, 1840) সমনাম: Mergus merganser Linnaeus, 1758 বাংলা নাম: স্মিউ হাঁস ইংরেজি নাম: Smew জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস জগৎ/রাজ্যKingdom: Animalia বিভাগ/Phylum: Chordata শ্রেণী/Class: Aves পরিবার/Family: Anatidae গণ/Genus: Mergellus, Selby, 1840; প্রজাতি/Species: Mergellus albellus (Selby, 1840)[/otw_shortcode_info_box]

ভূমিকাঃ বাংলাদেশের পাখির তালিকায় Mergellus গণে পৃথিবীতে ১টি প্রজাতি রয়েছে এবং বাংলাদেশে রয়েছে এর ১টি প্রজাতি। পৃথিবীর ও বাংলাদেশের একমাত্র প্রজাতিটি হচ্ছে স্মিউ হাঁস।

বর্ণনা: স্মিউ হাঁস বর্গাকার মাথাওয়ালা খুদে হাঁস (দৈর্ঘ্য ৪৬ সেমি, ওজন ৬৮০ গ্রাম, ডানা ১৯ সেমি, ঠোঁট ৩ সেমি, পা ৩ সেমি, লেজ ৭.৫ সেমি)। ছেলে ও মেয়েহাঁসের মধ্যে চেহারায় পার্থক্য রয়েছে। প্রজননকালে ছেলেহাঁসের ঠোঁটের গোড়া ও চোখের মাঝামাঝি অংশ কালো, ঘাড়ে কালো ছিটা-দাগ এবং সাদা ন্যুচাল ঝুঁটি পুরো দেহ সাদা; ডানা কালচে ও বুকের পাশে কালো ডোরা; দেহের পাশ ও লেজ ধূসর; চোখ লালচে এবং ঠোঁট, পা ও পায়ের পাতা ফ্যাকাসে বর্ণের। মেয়েহাঁসের তামাটে-লাল টুপি; ঘাড় ও ঝুঁটি ছাড়া ধূসর-বাদামি দেখায়; গলা সাদা ও পেট সাদাটে; সাদাটে নখর সমেত ঠোঁট সীসা ও ধূসর রঙে মেশানো; কালো পায়ের পর্দাসহ পা ও পায়ের পাতা সবুজ। প্রজননকাল ছাড়া ছেলেহাঁসের কালো পাছা ও ডানার মধ্য-পালকের ওপর বড় সাদা পট্টি ছাড়া দেখতে মেয়েহাঁসের মত। অপ্রাপ্তবয়স্ক হাঁস পাণ্ডুর বর্ণের।
স্বভাব: স্মিউ হাঁস হাওর, বিল, নদী, হ্রদও জলাধারে বিচরণ করে; ছোট ছোট দলে দেখা যায়। পানির তলে ডুব দিয়ে এরা খাবার খোঁজে; আহার্য তালিকায় রয়েছে চিংড়ি ও শামুক-জাতীয় প্রাণী, জলজ পোকামাকড়, লার্ভা, কেঁচো এবং লতাপাতা। মুহুর্মুহু সুচালো ডানা চালিয়ে এরা দ্রুত শব্দহীনভাবে ওড়ে চলে; প্রজনন ঋতু ছাড়া সাধারণত নীরব থাকে; কদাচ ব্যাঙের মত নিচু গলায় ডাকে অথবা শিস দেয়। এপ্রিল-মে মাসের প্রজনন ঋতুতে সাইবেরিয়ায় পানির কাছাকাছি গাছের প্রাকৃতিক কোটরে বা কৃত্রিম বাক্সে বাসা তৈরি করে এরা ডিম পাড়ে। ডিমগুলো পীতাভ বা হালকা পীতাভ; সংখ্যায় ৭-৯টি, মাপ ৫.২ × ৩.৭ সেমি। ২৬-২৮ দিনে ডিম ফোটে।

আরো পড়ুন:  বড় স্কপ বিশ্বে বিপদমুক্ত এবং বাংলাদেশের অনিয়মিত পাখি

বিস্তৃতি: স্মিউ হাঁস বাংলাদেশের অনিয়মিত পাখি; শীতকালে সিলেট বিভাগেরহাওরে দেখা পাওয়ার একটি তথ্য রয়েছে। ইওরেশিয়ায় বিশেষ করে ইউরোপ থেকেভারত, পাকিস্তান, নেপাল, চিন ও জাপানে এর বৈশ্বিক বিস্তৃতি রয়েছে।

অবস্থা: স্মিউ হাঁস বিশ্বে বিপদমুক্ত বলে বিবেচিত। বিগত তিন প্রজন্ম ধরে এদের সংখ্যা কমেছে, তবে দুনিয়ায় এখন ১০,০০০-এর অধিক পূর্ণবয়স্ক পাখি আছে, তাই এখনও আশঙ্কাজনক পর্যায়ে এই প্রজাতি পৌঁছেনি। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত (Least Concern LC) বলে ঘোষণা করেছে।[২] বাংলাদেশের ১৯৭৪[১] ও ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত।[৩]

বিবিধ: স্মিউ হাঁসের বৈজ্ঞানিক নাম Mergellus albellus -এর অর্থ সাদা জলার পাখি (ল্যাটিন:Mergus = জলার পাখি, প্লিনির উল্লেখানুসারে, albus = সাদা ) ।

তথ্যসূত্র:

১. এম আনোয়ারুল ইসলাম ও এম. কামরুজ্জামান, (আগস্ট ২০০৯)। “পাখি”। আহমাদ, মোনাওয়ার; কবির, হুমায়ুন, সৈয়দ মোহাম্মদ; আহমদ, আবু তৈয়ব আবু। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ ২৬ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা – ৩৬-৩৭। আইএসবিএন 984-30000-0286-0।

২. “Mergellus albellus“, http://www.iucnredlist.org/details/22680465/0,  The IUCN Red List of Threatened Species। সংগ্রহের তারিখ: ৩০ আগস্ট ২০১৮।

৩. বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত সংখ্যা, জুলাই ১০, ২০১২, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পৃষ্ঠা-১১৮৪৫১।

Leave a Comment

error: Content is protected !!