[otw_shortcode_info_box border_type=”bordered” border_color_class=”otw-red-border” border_style=”bordered” shadow=”shadow-inner” rounded_corners=”rounded-10″]দ্বিপদ নাম: Micropternus brachyurus সমনাম: Picus brachyurus Vieillott, 1818, Celeus brachyurus বাংলা নাম: খয়রা কাঠকুড়ালি ইংরেজি নাম: Rufous Woodpecker. জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস জগৎ/রাজ্যKingdom: Animalia বিভাগ/Phylum: Chordata শ্রেণী/Class: Aves পরিবার/Family: Picidae গণ/Genus: Micropternus; প্রজাতি/Species: Micropternus brachyurus (Vieillott, 1818)[/otw_shortcode_info_box]
ভূমিকাঃ বাংলাদেশের পাখির তালিকায় Micropternus গণে বাংলাদেশে রয়েছে এর ১টি প্রজাতি এবং পৃথিবীতেও ১টি প্রজাতি। বাংলাদেশে প্রাপ্ত ও আমাদের আলোচ্য প্রজাতিটির নাম হচ্ছে; খয়রা কাঠকুড়ালি।
বর্ণনা: খয়রা কাঠকুড়ালি লালচে বাদামি শরীরে কালো ডোরা পড়া কাঠঠোকরা (দৈর্ঘ্য ২৫ সেমি, ওজন ১০৫ গ্রাম, ডানা ১২.৫ সেমি, ঠোঁট ২.৮ সেমি)। প্রাপ্তবয়স্ক পাখির পিঠের স্পষ্ট কালো পাথালি ডোরা ছাড়া দেহের পূরোটাই লাল-বাদামি মেশানো; মাথার চূড়া লোমশ এবং কাঁধ-ঢাকনি, ডানা, লেজ ও বগলে কালো পাথালি ডোরা রয়েছে; গলার পালকে ফ্যাকাসে প্রান্তদেশ থাকায় আঁইশের মত দেখায়। এর চোখের তলে অর্ধ-চন্দ্রাকৃতির উজ্জ্বল লাল পট্টি আছে; চোখ বাদামি-লাল; মুখ ধূসর-পাটল; ঠোঁট কালো; পা ও পায়ের পাতা নীলচে-সবুজ এবং নখর কালো। মেয়েপাখির কান-ঢাকনি ফ্যাকাসে-পীতাভ; এবং ছেলেপাখির তুলনায় মেয়ে কিছুটা ছোট। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির বুকে ও তলপেটে স্পষ্ট পাথালি ডোরা ও অর্ধ-চন্দ্রাকৃতি দাগ থাকে। ৯টি উপ-প্রজাতির মধ্যে M. b. phaioceps বাংলাদেশে আছে।
স্বভাব: খয়রা কাঠকুড়ালি আর্দ্র পাতাঝরা বন, শালবন, বাঁশবন, বাগান ও লোকালয়ে বিচরণ করে; একা বা জোড়ায় দেখা যায়। গাছের বাকল, পিঁপড়ার বাসা অথবা উইপোকার ঢিবি থেকে খাবার সংগ্রহ করে; খাদ্যতালিকায় রয়েছে পিঁপড়া, উইপোকা, পিউপা, বন্য ডুমুর এবং ফুলের মিষ্টি রস। জোড়ার পাখির সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য এরা নাকি সুরে ডাকে: কুয়িন-কুয়িন-কুয়িন..। এপ্রিল-মে মাসে প্রজনন ঋতুতে ছেলেপাখিরা গাছে আঘাত করে ড্রাম বাজায় এবং দ্রুত ওড়ে ডানায় ভন ভন আওয়াজ তোলে। এরা সাধারণত গাছে পিঁপড়ার বাসার একাংশ খুঁড়ে নিজেদের বাসা বানিয়ে ডিম পাড়ে। ডিমগুলো সাদা, সংখ্যায় ২-৩টি; মাপ ২.৮×২.০ সেমি।
বিস্তৃতি: খয়রা কাঠকুড়ালি বাংলাদেশের সুলভ আবাসিক পাখি; সব বিভাগের চিরসবুজ, পাতাঝরা বন এবং গ্রামীণ কুঞ্জবনে দেখা যায়। চিন, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়াসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এর বৈশ্বিক বিস্তৃতি রয়েছে।
অবস্থা: খয়রা কাঠকুড়ালি বিশ্বে ও বাংলাদেশে বিপদমুক্ত বলে বিবেচিত। বিগত তিন প্রজন্ম ধরে এদের সংখ্যা কমেছে, তবে দুনিয়ায় এখন ১০,০০০-এর অধিক পূর্ণবয়স্ক পাখি আছে, তাই এখনও আশঙ্কাজনক পর্যায়ে এই প্রজাতি পৌঁছেনি। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত (Least Concern LC) বলে ঘোষণা করেছে।[২] বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত।[৩]
বিবিধ: খয়রা কাঠকুড়ালির বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ খাটো-লেজ সবুজ কাঠঠোকরা (গ্রীক : keleos = সবুজ কাঠঠোকরা , brakhus = ছোট, ouros = লেজ ওয়ালা )।
তথ্যসূত্র:
১. ইনাম আল হক ও এম. কামরুজ্জামান, (আগস্ট ২০০৯)। “পাখি”। আহমাদ, মোনাওয়ার; কবির, হুমায়ুন, সৈয়দ মোহাম্মদ; আহমদ, আবু তৈয়ব আবু। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ ২৬ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা – ৪১। আইএসবিএন 984-30000-0286-0।
২. “Micropternus brachyurus“, http://www.iucnredlist.org/details/22681314/0, The IUCN Red List of Threatened Species। সংগ্রহের তারিখ: ২ সেপ্টেম্বর ২০১৮।
৩. বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত সংখ্যা, জুলাই ১০, ২০১২, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পৃষ্ঠা-১১৮৪৫১।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।