[otw_shortcode_info_box border_type=”bordered” border_color_class=”otw-red-border” border_style=”bordered” shadow=”shadow-inner” rounded_corners=”rounded-10″]দ্বিপদ নাম: Nettapus coromandelianus সমনাম: Anas coromandelianus Gmelin 1789 বাংলা নাম: ধলা বালিহাঁস, ভূলিয়া হাঁস (আলী) ইংরেজি নাম: Cotton Pigmy Goose জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস জগৎ/রাজ্যKingdom: Animalia বিভাগ/Phylum: Chordata শ্রেণী/Class: Aves পরিবার/Family: Anatidae গণ/Genus: Nettapus, Brandt, 1836; প্রজাতি/Species: Nettapus coromandelianus (Gmelin 1789)[/otw_shortcode_info_box]
ভূমিকা: বাংলাদেশের পাখির তালিকায় Nettapus গণে বাংলাদেশে ও পৃথিবীতে ১টি প্রজাতি রয়েছে। বাংলাদেশ ও পৃথিবীর প্রজাতিটি হচ্ছে ধলা বালিহাঁস বা ভূলিয়া হাঁস।
বর্ণনা: ধলা বালিহাঁস খাটো ঠোঁটওয়ালা খুদে হাঁস (দৈর্ঘ্য ৩৩.৫ সেমি, ওজন ২৫০ গ্রাম, ডানা ১৫.৫ সেমি, ঠোঁট ২.৮ সেমি., পা ২.৪ সেমি, লেজ ৭.৩ সেমি)। পুরুষ ও স্ত্রী হাঁসের চেহারায় পার্থক্য আছে। পুরুষ হাঁসের মাথার চাঁদি ও পিঠ কালচে-বাদামি; মুখ, ঘাড় ও দেহতল সাদা; গলায় স্পষ্ট কালো বলয় ও ডানায় সাদা ডোরা; চোখ লালচে-বাদামি; ও ঠোঁট কালো। স্ত্রী হাঁসের দেহতল অনুজ্জ্বল ফিকে সাদা; ডানার প্রান্তÍ সাদা; চোখ বরাবর কালো কাজলের মত চক্ষু-রেখা; চোখ বাদামি; ঠোঁট কালচে জলপাই বা বাদামি, ঠোঁটের নিচের ভাগ ও ঠোঁটের সঙ্গমস্থল হলুদাভ। পুরুষ ও স্ত্রীহাঁসের উভয়েরই পা ও পায়ের পাতা কালচে-বাদামির বা কালো রঙের। অপ্রাপ্তবয়স্ক হাঁস স্ত্রীহাঁসের অনুরূপ; তবে চক্ষু-রেখা প্রশস্ততর এবং দেহতলের রঙে পার্থক্য আছে। ২টি উপ-প্রজাতির মধ্যে N. C. coromandelianus বাংলাদেশে দেখা যায়।
স্বভাব: ধলা বালিহাঁস জলজ উদ্ভিদ-ভরা হ্রদ, বড় পুকুর, অগভীর লেগুন, হাওর ও জলাবদ্ধ ধানখেতে বিচরণ করে; সাধারণত ৫-১৫ টি হাঁসের ছোট দলে দেখা যায়। পানিতে ভাসমান জলজ উদ্ভিদ থেকে এরা খাবার গ্রহণ করে; খাদ্যতালিকায় রয়েছে জলজ উদ্ভিদের কচিকাণ্ড ও বীজ, চিংড়ি ও কাঁকড়া-জাতীয় প্রাণী, পোকামাকড় ও এদের লার্ভা। এরা পত-পত শব্দে ডানা ঝাপটে দ্রুত ওড়ে চলে এবং তীক্ষ্ণ স্বরে গোঙানো ডাক দেয়: গ্যাহ গ্যাগি-গ্যাহ অথবা কুওয়াক, কুওয়াক-কুওয়াকিডাক। জুন-সেপ্টেম্বর মাসে প্রজনন ঋতুতে পানির ধারে কাছে কোন গাছের কাণ্ডে প্রাকৃতিক গর্তে অথবা দালানকোঠার ফাঁকে বাসা বানিয়ে ডিম পাড়ে। ডিমগুলো মুক্তার মত সাদা, সংখ্যায় ৬-১৪ টি, মাপ ৪.২×৩.২ সেমি। ১৫-১৬ দিনে ডিম ফোটে।
বিস্তৃতি: ধলা বালিহাঁস বাংলাদেশের দুর্লভ আবাসিক পাখি; প্রধানত চট্টগ্রাম, ঢাকা, খুলনা, রাজশাহী ও সিলেট বিভাগের পুকুর ওহ্রদে দেখা যায়।অস্ট্রেলিয়ার উত্তরাঞ্চল থেকে উত্তর-পশ্চিম এশিয়া পর্যন্তÍ এর বৈশ্বিকবিস্তৃতি রয়েছে; এশিয়া মহাদেশে চিন, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, এবং ভুটানব্যতীত পুরো ভারত উপমহাদেশে আছে।
অবস্থা: ধলা বালিহাঁস বিশ্বে ও বাংলাদেশে বিপদমুক্ত বলে বিবেচিত। বিগত তিন প্রজন্ম ধরে এদের সংখ্যা কমেছে, তবে দুনিয়ায় এখন ১০,০০০-এর অধিক পূর্ণবয়স্ক পাখি আছে, তাই এখনও আশঙ্কাজনক পর্যায়ে এই প্রজাতি পৌঁছেনি। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত (Least Concern LC) বলে ঘোষণা করেছে।[২] বাংলাদেশের ১৯৭৪[১] ও ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত।[৩]।
বিবিধ: ধলা বালিহাঁসের বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ করোম্যান্ডল-এর শোরগোল করা হাঁস (গ্রিক : Netta = হাঁস, ops = ডাকাডাকি, coromandelianus = কোলাম্যানডেলাম, পূর্ব ভারতের প্রাচীন দ্রাবিড় রাজ্য)।
তথ্যসূত্র:
১. মনিরুল এইচ খান, (আগস্ট ২০০৯)। “পাখি”। আহমাদ, মোনাওয়ার; কবির, হুমায়ুন, সৈয়দ মোহাম্মদ; আহমদ, আবু তৈয়ব আবু। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ ২৬ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা – ২৮-২৯। আইএসবিএন 984-30000-0286-0।
২. “Nettapus coromandelianus“, http://www.iucnredlist.org/details/22680090/0, The IUCN Red List of Threatened Species। সংগ্রহের তারিখ: ২৯ আগস্ট ২০১৮।
৩. বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত সংখ্যা, জুলাই ১০, ২০১২, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পৃষ্ঠা-১১৮৪৫০।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।