[otw_shortcode_info_box border_type=”bordered” border_color_class=”otw-red-border” border_style=”bordered” shadow=”shadow-inner” rounded_corners=”rounded-10″]দ্বিপদ নাম: Picumnus innominatus সমনাম: নেই বাংলা নাম: তিলা কুটিকুড়ালি ইংরেজি নাম: Speckled Piculet জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস জগৎ/রাজ্যKingdom: Animalia বিভাগ/Phylum: Chordata শ্রেণী/Class: Aves পরিবার/Family: Picidae গণ/Genus: Picumnus, Temminck, 1825; প্রজাতি/Species: Picumnus innominatus Burton,১৮৩৬ [/otw_shortcode_info_box]
ভূমিকাঃ বাংলাদেশের পাখির তালিকায় Sasia গণে বাংলাদেশে রয়েছে এর ১টি প্রজাতি এবং পৃথিবীতে ২৭টি প্রজাতি। বাংলাদেশে প্রাপ্ত ও আমাদের আলোচ্য প্রজাতিটির নাম হচ্ছে তিলা কুটিকুড়ালি।
বর্ণনা: তিলা কুটিকুড়ালি কুঁজো দেহের খুদে কাঠঠোকরা (দৈর্ঘ্য ১০ সেমি, ডানা ৬ সেমি, ঠোঁট ১.১ সেমি, পা ১.৩ সেমি, লেজ ৩.৩ সেমি)। প্রাপ্তবয়স্ক পাখির পিঠ হলদে-সবুজ ও দেহতল সাদাটে; বগলে ছোট দাগ ও বগলের পিছনের দিকের খাড়া চিতি গুলো ডোরায় রূপ নিয়েছে; চোখের উপরে ও নিচে দুটি মোটা সাদা দাগ, তার মধ্যে জলপাই রঙের একটি মোটা দাগ আছে; চোখের নিচের সাদা দাগের তলে কালচে ডোরা আছে। এর চোখ লালচে-বাদামি থেকে বাদামি; ঠোঁট ঘন স্লেট-কালো; পা ও পায়ের পাতা অনুজ্জ্বল ফ্যাকাসে। ছেলে ও মেয়েপাখির মাথার চাঁদির রঙে পার্থক্য আছে: মেয়েপাখির চাঁদির পুরোটাই হলুদ-জলপাই; ছেলেপাখির দুরঙা: কপাল ও চাঁদির সামনের অংশ অনুজ্জ্বল কমলা এবং চাঁদির অবশেষ হলুদ-জলপাই। ৩টি উপ-প্রজাতির মধ্যে P. i. malayorum বাংলাদেশে রয়েছে।
স্বভাব: তিলা কুটিকুড়ালি প্যারাবন, আর্দ্র পাতাঝরা ও অর্ধ-চিরসবুজ বন ও বাঁশতলের ঝোপেবিচরণ করে; সাধারণত একা ও জোড়ায় দেখা যায়। গাছের চিকন শাখা আঁকড়ে ধরে এবং চারদিকে ঘুরে খাবার সংগ্রহ করে; খাদ্যতালিকায় রয়েছে পিঁপড়া, লার্ভা, পিউপা ইত্যাদি। ভোরে ও গোধূলিতে এরা বেশি কর্মচঞ্চল থাকে; মাঝে মাঝে তীক্ষ্ণ স্বরে ডাকে: স্পিট, স্পিট… । জানুয়ারি-এপ্রিল মাসের প্রজনন ঋতুতে ছেলেপাখিরা শরীর ঝাঁকিয়ে মেয়েপাখিকে অনুসরণ করে এবং মরা শাখে বা বাঁশে আঘাত করে: বরর-র-র,বরর-র-র ..; এবং বনের বাঁশে বা ছোট গাছের মরা ডালে গর্ত খুঁড়ে বাসা বানিয়ে এরা ডিম পাড়ে। ডিমগুলো সাদা, সংখ্যায় ৩-৪টি; মাপ ১.৪ × ১.২ সেমি। ১১দিনে ডিম ফোটে।
বিস্তৃতি: তিলা কুটিকুড়ালি বাংলাদেশের বিরল আবাসিক পাখি; খুলনা বিভাগের প্যারাবনে ও সিলেট বিভাগের চিরসবুজ বনে পাওয়া যায়। এশিয়ার ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান ও চীন থেকে ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত এর বৈশ্বিক বিস্তৃতি রয়েছে।
অবস্থা: তিলা কুটিকুড়ালি বিশ্বে ও বাংলাদেশে বিপদমুক্ত বলে বিবেচিত। বিগত তিন প্রজন্ম ধরে এদের সংখ্যা কমেছে, তবে দুনিয়ায় এখন ১০,০০০-এর অধিক পূর্ণবয়স্ক পাখি আছে, তাই এখনও আশঙ্কাজনক পর্যায়ে এই প্রজাতি পৌঁছেনি। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত (Least Concern LC) বলে ঘোষণা করেছে।[২] বাংলাদেশের ১৯৭৪[১] ও ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত।[৩]
বিবিধ: তিলা কুটিকুড়ালির বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ নামহীন কাঠঠোকরা (ফ্রেঞ্চ : picumne = কাঠঠোকরা, ল্যাটিন: innominatus = নামহীন)।
তথ্যসূত্র:
১. ইনাম আল হক ও এম. কামরুজ্জামান, (আগস্ট ২০০৯)। “পাখি”। আহমাদ, মোনাওয়ার; কবির, হুমায়ুন, সৈয়দ মোহাম্মদ; আহমদ, আবু তৈয়ব আবু। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ ২৬ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা – ৪১। আইএসবিএন 984-30000-0286-0।
২. “Picumnus innominatus“, http://www.iucnredlist.org/details/22680694/0, The IUCN Red List of Threatened Species। সংগ্রহের তারিখ: ২ সেপ্টেম্বর ২০১৮।
৩. বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত সংখ্যা, জুলাই ১০, ২০১২, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পৃষ্ঠা-১১৮৪৫১।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।