খয়রামাথা শুমচা বাংলাদেশের দুর্লভ পরিযায়ী পাখি

পাখি

খয়রামাথা শুমচা

দ্বিপদ নাম/Scientific Name: Pitta Sordida, (Müller, 1776) সমনাম: নেই বাংলা নাম: খয়রামাথা শুমচা, ছোট হালতি, সবুজাভ সুমচা বা নীলফক্কি ইংরেজি নাম/Common Name: Hooded Pitta.
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য/Kingdom: Animalia বিভাগ/Phylum: Chordata শ্রেণী/Class: Aves বর্গ: Passerformes পরিবার/Family: Pittidae গণ/Genus: Pitta প্রজাতি/Species: Pitta Sordida, (Müller, 1776)

ভূমিকা: বাংলাদেশের পাখির তালিকায় Pitta গণে বাংলাদেশে রয়েছে এর ৫টি প্রজাতি এবং পৃথিবীতে রয়েছে মোট ১৪টি প্রজাতি। বাংলাদেশে প্রাপ্ত প্রজাতিগুলোর ভেতরে একটি হচ্ছে খয়রামাথা শুমচা।

বর্ণনা: খয়রামাথা শুমচার শরীরের মাপ ১৯ সেন্টিমিটার। প্রায় লেজহীন অতি সুন্দর ও দুর্লভ পাখিটি আমাদের দেশে আসে, বাসা বানায়, ডিম-ছানা তোলে। সেই ছানারা ভালোভাবে উড়তে শেখে, তার পরে আবার ফিরতি পথ ধরে- চলে যায়। সেই দেশে, যে দেশ থেকে ওরা এসেছিল।

স্বভাব: খয়রামাথা শুমচা এ দেশে এসে হালতিরা বসবাস তথা ডিম-ছানা তোলাসহ খাদ্য সংগ্রহের জন্য বেছে নেয় ঘন গ্রামীণ বনের তলদেশটা। ছায়াছায়া-মায়ামায়া অন্ধকারাচ্ছন্ন বাগানই ওদের অতি প্রিয়। মূলত খাবার সুংগ্রহ করে মাটিতে হেঁটে লাফিয়ে। মূল খাবার পোকামাকড়-কেচো। নিয়মিত গোসল করে। বাসা করে মাটি সমান্তরালে বা মাটি থেকে অল্প ওপরে। ডিম পাড়ে পাঁচ ছয়টি।

বিস্তৃতি: খয়রামাথা শুমচা বাংলাদেশের দুর্লভ পরিযায়ী পাখি।  সারা পৃথিবীতে প্রায় ২১ লাখ বর্গ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে এদের আবাস। এদেরকে ভারত, বাংলাদেশ, সিঙ্গাপুর, নেপাল, ভুটান, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, চীন, মায়ানমার, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, লাওস, ব্রুনাই, ফিলিপাইন, এবং পাপুয়া নিউগিনিতে পাওয়া যায়।

অবস্থা: ২০০৯ সালে এশিয়াটিক সোসাইটি কর্তৃক প্রকাশিত বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষে এটিকে বাংলাদেশে দুর্লভ ও বিশ্বে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত বলে বর্ণনা করা হয়েছে। বাংলাদেশের ১৯৭৪ ও ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে এ প্রজাতি সংরক্ষিত।

অন্যান্য তথ্য: এদের ছানারা উড়তে শেখার পরে ফিরতি পথ ধরে উত্তরে যাওয়ার পথে ঢাকা শহরের বেশ কয়েকটি স্পটে দু-একদিনের যাত্রাবিরতি করে। খায়-দায়, বিশ্রাম করে। তার পরে রওনা দেয় আবার। ২০০০ সালে সাংবাদিক ও পক্ষী আলোকচিত্রী ফরহাদ মাহমুদ ঢাকার মালিবাগ থেকে একটি এ রকম কিশোর পাখির ছবি তুলেছিলেন। প্রসঙ্গত, হালতি পাখির বাসার সন্ধান আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের অন্য কোথাও পাওয়া যায়নি: একমাত্র ফকিরহাট-বাগেরহাট ছাড়া। যুগ যুগ ধরে ওরা এখানে নিয়মিত বাসা করে আসছে। ডিম-ছানা তুলছে। ২০১৪ সালেই  বাসা দেখা যায় ১৬টি।

ছবির ইতিহাস: আলোকচিত্রটি তুলেছেন থাইল্যান্ডের ব্যাংকক থেকে Jason Thompson.

তথ্যসূত্র:

১. শরীফ খান, প্রকৃতি, হালতি পাখির সন্ধানে, দৈনিক সমকাল, ১৩ অক্টোবর, ২০১৪, পৃষ্ঠা ১৬ ও ১০।

Leave a Comment

error: Content is protected !!