[otw_shortcode_info_box border_type=”bordered” border_color_class=”otw-red-border” border_style=”bordered” shadow=”shadow-inner” rounded_corners=”rounded-10″]দ্বিপদ নাম: Psilopogon australis (Horsfield, 1821) সমনাম: Bucco australis; Megalaima australis বাংলা নাম: নীলকান বসন্তবৌরী ইংরেজি নাম: Blue-eared Barbet. জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস জগৎ/রাজ্যKingdom: Animalia বিভাগ/Phylum: Chordata শ্রেণী/Class: Aves পরিবার/Family: Captonidae গণ/Genus: Psilopogon, Gray, 1842; প্রজাতি/Species: Psilopogon australis (Horsfield, 1821)[/otw_shortcode_info_box]
ভূমিকা: বাংলাদেশের পাখির তালিকায় Megalaima গণে বাংলাদেশে রয়েছে এর ৫টি প্রজাতি এবং পৃথিবীতে ২৪টি প্রজাতি। বাংলাদেশে প্রাপ্ত প্রজাতিগুলো হচ্ছে ১. নীলগলা বসন্ত, ২. নীলকান বসন্ত, ৩. সেকরা বসন্ত, ৪. দাগি বসন্ত ও ৫. বড় বসন্ত। আমাদের আলোচ্য প্রজাতিটির নাম হচ্ছে নীলকান বসন্ত।
বর্ণনা: নীলকান বসন্ত বা নীলকান বসন্ত বৌরী ছোট আকারের সবুজ বৃক্ষচারী পাখি (দৈর্ঘ্য ১৭ সেমি., ওজন ৩৫ গ্রাম, ডানা ৮ সেমি, ঠোঁট ২ সেমি, পা ২.১ সেমি, লেজ ৪.৭ সেমি)। অতি সামান্য কিছু অংশ ছাড়া প্রায় পুরো দেহই এর ঘাস-সবুজ; মাথার দু’পাশে পিছনে ও চোখের নিচে লাল পট্টি আছে; গলা ও কান-ঢাকনি নীল, নিচের ঠোঁট থেকে গলার পাশে কালো ডোরা এবং কালো কণ্ঠ-কবচ বুকের ওপর পর্যন্ত বিস্তৃত। এর ঠোঁটের গোড়া হলুদ-সবুজ, ঠোঁট ঘন শিঙ-বাদামি; পা ও পায়ের পাতা অনুজ্জল সবুজ বা হলদে-সবুজ থেকে স্লেট-সবুজ। ছেলে ও মেয়েপাখির চেহারা অভিন্ন। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির মাথার পাশে লাল পট্টি নেই। ৭টি উপ-প্রজাতির মধ্যে M. a. cyanotis বাংলাদেশে রয়েছে।

স্বভাব: নীলকান বসন্ত ঘন প্রশস্ত পাতার চিরসবুজ বনে বিচরণ করে; একা বা জোড়ায় দেখা যায়। ঘন বনের ফলদ গাছে খাদ্য সংগ্রহ করে; খাদ্যতালিকায় রয়েছে প্রধানত ছোট ফল এবং কিছু পোকামাকড়। এরা কখনও ভূমিতে নামেনা; পূর্বরাগের সময় অবিরাম ডাকতে থাকে, বিশেষ করে গোধূলিতে; ধাতব ঝংকারসহ এর ডাক বনে বনে প্রতিধ্বনিত হয়: কু-টুরর. কু-টুরর..। এপ্রিল-জুন মাসের প্রজনন ঋতুতে ঘন বনের মৃত কাণ্ড বা শাখায় গর্ত খুঁড়ে বাসা বানিয়ে এরা ডিম পাড়ে। ডিমগুলো সাদা; সংখ্যায় ২-৪টি; মাপ ২.৪×১.৪ সেমি।
বিস্তৃতি: নীলকান বসন্ত বাংলাদেশের দুর্লভ আবাসিক পাখি; চট্টগ্রাম, ঢাকা ও সিলেট বিভাগের চিরসবুজ বনে পাওয়া যায়। ভারতের হিমালয়ের পূর্বভাগ থেকে ভুটান, নেপাল, মিয়ানমারের পূর্বভাগ, থাইল্যান্ড, ইন্দোচীন, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত এর বৈশ্বিক বিস্তৃতি রয়েছে।
অবস্থা: নীলকান বসন্ত বিশ্বে ও বাংলাদেশে বিপদমুক্ত বলে বিবেচিত। বিগত তিন প্রজন্ম ধরে এদের সংখ্যা কমেছে, তবে দুনিয়ায় এখন ১০,০০০-এর অধিক পূর্ণবয়স্ক পাখি আছে, তাই এখনও আশঙ্কাজনক পর্যায়ে এই প্রজাতি পৌঁছেনি। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত (Least Concern LC) বলে ঘোষণা করেছে।[২] বাংলাদেশের ১৯৭৪[১] ও ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত।[৩]
বিবিধ: নীলকান বসন্ত পাখির বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ দক্ষিণা গলাবাজ (গ্রীক: megalos =বড়, laimos =গলা; ল্যাটিন: australis = দক্ষিণাঞ্চল)।
আলোকচিত্রের ইতিহাস: নীলকান বসন্তবৌরীর ছবিটি Rejaul Karim তুলেছেন গারভাঙ্গা সংরক্ষিত বন, আসাম থেকে অক্টোবর ২০১৬তে।
তথ্যসূত্র:
১. ইনাম আল হক ও এম. কামরুজ্জামান, (আগস্ট ২০০৯)। “পাখি”। আহমাদ, মোনাওয়ার; কবির, হুমায়ুন, সৈয়দ মোহাম্মদ; আহমদ, আবু তৈয়ব আবু। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ ২৬ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা – ৫১। আইএসবিএন 984-30000-0286-0।
২. “Psilopogon australis“, http://www.iucnredlist.org/details/22726122/0, The IUCN Red List of Threatened Species। সংগ্রহের তারিখ: ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮।
৩. বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত সংখ্যা, জুলাই ১০, ২০১২, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পৃষ্ঠা-১১৮৪৫২।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।