[otw_shortcode_info_box border_type=”bordered” border_color_class=”otw-red-border” border_style=”bordered” shadow=”shadow-inner” rounded_corners=”rounded-10″]দ্বিপদ নাম: Psilopogon haemacephalus সমনাম: Bucco haemacephala Muller, 1776; Megalaima haemacephala; Xantholaoema haemacephala; Bucco indicus বাংলা নাম: সেকরা বসন্ত, ছোট বসন্ত বাউরি (আলী) ইংরেজি নাম: Coppersmith Barbet, Crimson-breasted Barbet. জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস জগৎ/রাজ্যKingdom: Animalia বিভাগ/Phylum: Chordata শ্রেণী/Class: Aves পরিবার/Family: Captonidae গণ/Genus: Psilopogon, Gray, 1842; প্রজাতি/Species: Psilopogon haemacephalus (Muller, 1776)[/otw_shortcode_info_box]
ভূমিকা: বাংলাদেশের পাখির তালিকায় Megalaima গণে বাংলাদেশে রয়েছে এর ৫টি প্রজাতি এবং পৃথিবীতে ২৪টি প্রজাতি। বাংলাদেশে প্রাপ্ত প্রজাতিগুলো হচ্ছে ১. নীলগলা বসন্ত, ২. নীলকান বসন্ত, ৩. সেকরা বসন্ত, ৪. দাগি বসন্ত ও ৫. বড় বসন্ত। আমাদের আলোচ্য প্রজাতিটির নাম হচ্ছে সেকরা বসন্ত।
বর্ণনা: সেকরা বসন্ত সবুজ রঙের খুদে বৃক্ষচারী পাখি (দৈর্ঘ্য ১৭ সেমি, ওজন ৪০ গ্রাম, ডানা ৮ সেমি, ঠোঁট ১.৮ সেমি, পা ২ সেমি, লেজ ৩.৫ সেমি)। প্রাপ্তবয়স্ক পাখির গাঢ় লাল কপালসহ পিঠ ঘাস-সবুজ; গাঢ় লাল ও কালো বুকের পট্টিসহ গলা হলুদ; সবুজ ডোরাসহ দেহতলের অবশেষ ফ্যাকাসে; কালো লাইন চোখের উপরের ও নিচের হলুদ পট্টিকে পৃথক করেছে। এর ঠোঁট ঘন শিঙ-বাদামি বা কালো ও মুখ ফ্যাকাসে পাটল-ধূসর; পা ও পায়ের পাতা প্রবাল-লাল এবং নখর কালো। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির গলা কালো, বুকের পট্টি জলপাই-সবুজ, পেট ও বগলের ডোরা সমূহ সবুজ; এবং কপাল ও বুকে লালের অনুপস্থিতি রয়েছে। ৯টি উপ-প্রজাতির মধ্যে M. h. indica বাংলাদেশে রয়েছে।
স্বভাব: সেকরা বসন্ত পাতাঝরা বন, গাছপালাসমৃদ্ধ অঞ্চল, রাস্তার পাশের গাছপালা, গ্রামীণ কুঞ্জবন ও শহুরে বাগানে বিচরণ করে; সাধারণত একা, জোড়ায় বা ফলাহারী পাখিদের মিশ্র-দলে দেখা যায়। ফলদ গাছে, বিশেষ করে বটগাছে, খাবার খায়; খাদ্যতালিকায় রয়েছে প্রধানত বট, পাকুর ও অন্যান্য রসালো ফল এবং কিছু শুঁয়োপোকা ও উইপোকা। এরা দ্রুত ও সোজা উড়তে পারে; সেঁকড়ার হাতুড়ির আঘাতের মত শব্দ করে ডাকে: টক… টক… টক…। নভেম্বর-জুন মাসে প্রজননকালে গাছের শাখায় ২৫-৮০ সেমি গভীর গর্ত খুঁড়ে বাসা বানিয়ে ডিম পাড়ে। ডিমগুলো সাদা, সংখ্যায় ২-৪টি; মাপ ২.৫´১.৭ সেমি। বাসার যাবতীয় কাজ ছেলে ও মেয়ে মিলে করে।
বিস্তৃতি: সেকরা বসন্ত বাংলাদেশের সুলভ আবাসিক পাখি; দেশের সব বিভাগের সর্বত্র পাওয়া যায়। পাকিস্তান, ভারত, শ্রীলংকা, নেপাল, ভুটান থেকে ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন ও মালয়েশিয়াসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এর বৈশ্বিক বিস্তৃতি রয়েছে।
অবস্থা: সেকরা বসন্ত বিশ্বে ও বাংলাদেশে বিপদমুক্ত বলে বিবেচিত। বিগত তিন প্রজন্ম ধরে এদের সংখ্যা কমেছে, তবে দুনিয়ায় এখন ১০,০০০-এর অধিক পূর্ণবয়স্ক পাখি আছে, তাই এখনও আশঙ্কাজনক পর্যায়ে এই প্রজাতি পৌঁছেনি। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত (Least Concern LC) বলে ঘোষণা করেছে।[২] বাংলাদেশের ১৯৭৪[১] ও ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত।[৩]
বিবিধ: সেকরা বসন্ত পাখির বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ লালমাথা গলাবাজ (গ্রীক: megalos =বড়, laimos =গলা, haima = রক্ত-লাল, kephalos = মাথা)। ল্যাটিন: australis = দক্ষিণাঞ্চল)।
তথ্যসূত্র:
১. মো: আনোয়ারুল ইসলাম ও এম. কামরুজ্জামান, (আগস্ট ২০০৯)। “পাখি”। আহমাদ, মোনাওয়ার; কবির, হুমায়ুন, সৈয়দ মোহাম্মদ; আহমদ, আবু তৈয়ব আবু। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ ২৬ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা – ৫১। আইএসবিএন 984-30000-0286-0।
২. “Psilopogon haemacephalus“, http://www.iucnredlist.org/details/22681681/0, The IUCN Red List of Threatened Species। সংগ্রহের তারিখ: ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮।
৩. বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত সংখ্যা, জুলাই ১০, ২০১২, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পৃষ্ঠা-১১৮৫০৯।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।