দাগি বসন্ত বৌরী বিশ্বে বিপদমুক্ত এবং বাংলাদেশের সুলভ আবাসিক পাখি

[otw_shortcode_info_box border_type=”bordered” border_color_class=”otw-red-border” border_style=”bordered” shadow=”shadow-inner” rounded_corners=”rounded-10″]দ্বিপদ নাম: Psilopogon lineatus সমনাম: Bucco lineatus, Megalaima lineata বাংলা নাম: দাগি বসন্তবৌরী ইংরেজি নাম: Lineated Barbet. জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস জগৎ/রাজ্যKingdom: Animalia বিভাগ/Phylum: Chordata শ্রেণী/Class: Aves পরিবার/Family: Captonidae গণ/Genus: Psilopogon, Gray, 1842; প্রজাতি/Species: Psilopogon lineatus (Vieillot, 1816)[/otw_shortcode_info_box]

ভূমিকা: বাংলাদেশের পাখির তালিকায় Megalaima গণে বাংলাদেশে রয়েছে এর ৫টি প্রজাতি এবং পৃথিবীতে ২৪টি প্রজাতি। বাংলাদেশে প্রাপ্ত প্রজাতিগুলো হচ্ছে ১. নীলগলা বসন্ত, ২. নীলকান বসন্ত, ৩. সেকরা বসন্ত, ৪. দাগি বসন্ত ও ৫. বড় বসন্ত। আমাদের আলোচ্য প্রজাতিটির নাম হচ্ছে দাগি বসন্ত।

বর্ণনা: দাগি বসন্ত বা দাগি বসন্তবৌরী সবুজ রঙের মাঝারি আকারের বৃক্ষচারী পাখি (দৈর্ঘ্য ২৮ সেমি, ওজন ১৫৫ গ্রাম, ডানা ১৩ সেমি, ঠোঁট ৩.২ সেমি, পা ৩ সেমি, লেজ ১৮.৫ সেমি)। প্রাপ্তবয়স্ক পাখির দেহের পুরোটাই ঘাস-সবুজ; মাথা ও বুকের পালকে ফ্যাকাসে ডোরা রয়েছে; মাথা ও কাঁধ-ঢাকনিতে পীতাভ সাদাটে ডোরা; থুতনি ও গলা সাদাটে; এবং বুকে পীতাভ সাদা ডোরা আছে। ঠোঁট ফিকে হলুদ; চোখ বাদামি, চোখের পাতা গাঢ় হলুদ; পা ও পায়ের পাতা মেটে হলুদ থেকে কমলা-হলুদ। ছেলে ও মেয়েপাখির চেহারা অভিন্ন। ২টি উপ-প্রজাতির মধ্যে M. l. hodgsoni বাংলাদেশে পাওয়া যায়।

স্বভাব: দাগি বসন্ত সব ধরনের বন, খোলা বনভূমি, উদ্যান ও গ্রামে বিচরণ করে; সাধারণত একা, জোড়ায় বা বিচ্ছিন্ন দলে দেখা যায়। ফলদ গাছ ও ঝোপে খাদ্য খায়; খাদ্যতালিকায় রয়েছে ফল, ফুলের মধু, উইপোকা, লার্ভা, টিকটিকি ও গেছো ব্যাঙ। গ্রীষ্মকালে এরা অবিরাম ডাকাডাকি করে; জোর গলায় বন কাঁপিয়ে ডাকে: কুরক… এবং পুক্রো… পুক্রো…। মার্চ-জুন মাসের প্রজনন ঋতুতে ভূমি থেকে ৩-১২ মিটার উঁচুতে গাছের ডালে গর্ত খুঁড়ে বাসা বানিয়ে ডিম পাড়ে। ডিমগুলো সাদা; সংখ্যায় ২-৪টি ; মাপ ৩.২×২.৩ সেমি। বাসার যাবতীয় কাজ ছেলে ও মেয়ে মিলে করে। ১৪-১৫ দিনে ডিম ফোটে।

আরো পড়ুন:  সেকরা বসন্ত বৌরী বিশ্বে বিপদমুক্ত এবং বাংলাদেশের সুলভ আবাসিক পাখি

বিস্তৃতি: দাগি বসন্ত বাংলাদেশের সুলভ আবাসিক পাখি; সকল বিভাগের সব বনভূমিতে বসবাস করে। ভারতের হিমালয়ের পাদদেশ থেকে নেপাল ও ভুটান থেকে মিয়ানমারের পূর্বভাগ, থাইল্যান্ড, ইন্দোচীন, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় এর বৈশ্বিক বিস্তৃতি রয়েছে।

অবস্থা: দাগি বসন্ত বিশ্বে ও বাংলাদেশে বিপদমুক্ত বলে বিবেচিত। গত ২০ বছরে বা তিন প্রজন্মে  এই প্রজাতির পাখির সংখ্যা দ্রুততার সাথে সর্বাধিক হ্রাস পেয়েছে। এদের আবাসস্থল ধ্বংসের কারণেও এদের চলাচলের পরিসীমা কমে গেছে এবং সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে বিপদগ্রস্ত বলে ঘোষণা করেছে।[২] বাংলাদেশের ১৯৭৪[১] ও ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত।[৩]

বিবিধ: দাগি বসন্ত পাখির বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ দাগি গলাবাজ (গ্রীক: Megalos = বড়, laimos = গলা; ল্যাটিন: lineatus = রেখা)।

তথ্যসূত্র:

১. মো: আনোয়ারুল ইসলাম ও এম. কামরুজ্জামান, (আগস্ট ২০০৯)। “পাখি”। আহমাদ, মোনাওয়ার; কবির, হুমায়ুন, সৈয়দ মোহাম্মদ; আহমদ, আবু তৈয়ব আবু। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ ২৬ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা – ৫১। আইএসবিএন 984-30000-0286-0।

২. “Psilopogon lineatus“, http://www.iucnredlist.org/details/22681600/0,  The IUCN Red List of Threatened Species। সংগ্রহের তারিখ: ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮।

৩. বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত সংখ্যা, জুলাই ১০, ২০১২, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পৃষ্ঠা-১১৮৪৫২।

Leave a Comment

error: Content is protected !!