বড় বসন্ত বৌরী বিশ্বে বিপদমুক্ত এবং বাংলাদেশের বিরল আবাসিক পাখি

[otw_shortcode_info_box border_type=”bordered” border_color_class=”otw-red-border” border_style=”bordered” shadow=”shadow-inner” rounded_corners=”rounded-10″]দ্বিপদ নাম: Psilopogon virens (Boddaert, 1783) সমনাম: Bucco virens, Megalaima virens বাংলা নাম: বড় বসন্ত ইংরেজি নাম: Great Barbet. জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস জগৎ/রাজ্যKingdom: Animalia বিভাগ/Phylum: Chordata শ্রেণী/Class: Aves পরিবার/Family: Captonidae গণ/Genus: Psilopogon প্রজাতি/Species: Psilopogon virens (Boddaert, 1783)[/otw_shortcode_info_box]

ভূমিকা: বাংলাদেশের পাখির তালিকায় Psilopogon গণে বাংলাদেশে রয়েছে এর ৫টি প্রজাতি এবং পৃথিবীতে ২৪টি প্রজাতি। বাংলাদেশে প্রাপ্ত প্রজাতিগুলো হচ্ছে ১. নীলগলা বসন্ত, ২. নীলকান বসন্ত, ৩. সেকরা বসন্ত, ৪. দাগি বসন্ত ও ৫. বড় বসন্ত। আমাদের আলোচ্য প্রজাতিটির নাম হচ্ছে বড় বসন্ত।

বর্ণনা: বড় বসন্ত বা বড় বসন্তবৌরী বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বসন্ত পাখি (দৈর্ঘ্য ৩৩ সেমি, ওজন ২৪০ গ্রাম, ডানা ১৫ সেমি, ঠোঁট ৪.৫ সেমি, পা ২.৩ সেমি, লেজ ১০.৫ সেমি)। এর পুরো মাথা ও গলা কালচে বেগুনি-নীল; পিঠ ও বুকের উপরিভাগ মেরুন-বাদামি এবং ডানা ও লেজ সবুজ; জলপাই ডোরা সমেত পেট ফ্যাকাসে ও লেজতল-ঢাকনি উজ্জ্বল লাল। বড় ফ্যাকাসে হলুদ ঠোঁটের গোড়া সামান্য সবুজাভ ও আগার কাছাকাছি কালচে; চোখ প্রায় বাদামি-গাঢ় লাল; পা ও পায়ের পাতা জলপাই ফ্যাকাসে এবং নখরগুলো শিঙ-কালো। ৪টি উপ-প্রজাতির মধ্যে সম্ভবত: M. v. magnifica বাংলাদেশে পাওয়া যায়।

স্বভাব: বড় বসন্তআর্দ্র উপ-গ্রীষ্মমণ্ডলীয় চিরসবুজ বন, পাহাড়ি ফলেরবাগান ও উপত্যকার বনভূমিতে বিচরণ করে; একা, জোড়ায় বা ছোট দলে দেখা যায়।ফুল ও ফলদ গাছে খাবার সন্ধান করে; খাদ্যতালিকায় রয়েছে রসালো ফল, ফুলেরপাঁপড়ি, গুবরে পোকা, উইপোকা ও অন্য পোকামাকড়। ওড়ার ওঠার সময় এর ডানাথেকে শিস্ দেবার মত শব্দ হয়; সাধারণত দূর থেকে শুনতে পাওয়া যায় এমন উচ্চস্বরে ডাকে: পী-লিও…; এবং মাঝে মাঝে কর্কশ কণ্ঠে কান্নার সুরে ডাকে:কিয়ারর -র ; ক্রায়ি-অ্যাহ..। এপ্রিল-মে মাসের প্রজনন ঋতুতে গাছের কাণ্ডে ভূমি থেকে ৩-৫ মিটার উপরে গর্ত খুঁড়ে বাসা বানিয়ে এরা ডিম পাড়ে। ডিমগুলোসংখ্যায় ২-৩ টি; মাপ ৩.৪ × ২.৪ সেমি।

আরো পড়ুন:  দাগি বসন্ত বৌরী বিশ্বে বিপদমুক্ত এবং বাংলাদেশের সুলভ আবাসিক পাখি

বিস্তৃতি: বড় বসন্ত বাংলাদেশের বিরল আবাসিক পাখি; চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি চিরসবুজ বনে বিচরণ করে। পাকিস্তানের হিমালয়, ভারত, নেপাল ও ভুটান থেকে মিয়ানমার, চীন, থাইল্যান্ড, লাওস এবং ভিয়েতনামে এর বৈশ্বিক বিস্তৃতি রয়েছে।

অবস্থা: বড় বসন্ত বিশ্বে বিপদমুক্ত বলে বিবেচিত। বিগত তিন প্রজন্ম ধরে এদের সংখ্যা কমেছে, তবে দুনিয়ায় এখন ১০,০০০-এর অধিক পূর্ণবয়স্ক পাখি আছে, তাই এখনও আশঙ্কাজনক পর্যায়ে এই প্রজাতি পৌঁছেনি। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত (Least Concern LC) বলে ঘোষণা করেছে।[২] বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত।[৩]

বিবিধ: বড় বসন্ত পাখির বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ সবুজ গলাবাজ (গ্রীক: Megalos = বড়, laimos = গলা; ল্যাটিন: virens = সবুজ)।

তথ্যসূত্র:

১. মো: আনোয়ারুল ইসলাম ও এম. কামরুজ্জামান, (আগস্ট ২০০৯)। “পাখি”। আহমাদ, মোনাওয়ার; কবির, হুমায়ুন, সৈয়দ মোহাম্মদ; আহমদ, আবু তৈয়ব আবু। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ ২৬ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা – ৫১। আইএসবিএন 984-30000-0286-0।

২. “Psilopogon virens“, http://www.iucnredlist.org/details/22681591/0,  The IUCN Red List of Threatened Species। সংগ্রহের তারিখ: ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮।

৩. বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত সংখ্যা, জুলাই ১০, ২০১২, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পৃষ্ঠা-১১৮৪৫৩।

Leave a Comment

error: Content is protected !!