বর্ণনা: দেশি চিতল মাছে দেহ লম্বা ও গভীরভাবে চাপা হয়, পিঠের অগ্রভাগ দৃঢ়ভাবে কুঁজো ও মাথা চাপা। এর লেজ লম্বা এবং অনেকটাই চাপা। চিতলের মুখ বড় চোখের কিনারার পিছন পর্যন্ত প্রসারিত হয়। নিচের চোয়ালে দাঁত মোটামুটিভাবে ছোট, প্রসারিত এবং পার্শ্বীয়ভাবে বাঁকা। মাছটি ১০০ সেমির মতো বেশি লম্বা হয় ।
বসবাস: দেশি চিতল মাছ পানির তলদেশে থাকে। চিতল অন্য ছোট মাছকে শিকার করে খায়। এছাড়াও এরা পানির পোকামাকড়, শামুক, চিংড়ি খেয়ে বাঁচে। পোনা থাকা অবস্থায় ছোট ছোট পোকামাকড় ও জলজ উদ্ভিদের নরম অংশ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। বাংলাদেশের স্বাদুপানির নদী, হ্রদ, বিল, ডোবা, নালা এবং পুকুরে বাস করে। প্রতি বছর জুন থেকে জুলাই মাসে স্রোতযুক্ত পানি এমনকি পুকুর ও বিলে এদের প্রজনন ঘটে। সাধারণত পানির তলায় কাদাযুক্ত স্থানে বাসা তৈরি করে থাকে ভালবাসে। এই মাছের ডিম বড় আকৃতির। একটি স্ত্রী চিতল মাছ এক প্রজনন ঋতুতে প্রায় ৫,০০০-১০,০০০টি ডিম দেয় এবং ডিমগুলো ফুটে পোনা বের হতে ৫ থেকে ৬ দিন সময় লাগে।
বিস্তৃতি: দেশি চিতল মাছ ভারত ও পাকিস্তানের সিন্দু, গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র এবং মহানন্দা নদীতে, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন এবং সমগ্র বাংলাদেশে পাওয়া যায়।
চাষাবাদ: দেশি চিতল প্রজাতিটি দেশের বাজারে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে রেখেছে এবং সারা বছরই বাজারে প্রচুর পরিমাণে দেখা যায়। কৃত্রিম প্রজনন ও চাষ পদ্ধতি নিয়ে এখনও তেমন কোনো কার্যকর কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এরা শিকারী মাছ হওয়ায় জলজ খাদ্যচক্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে এবং মাছ চাষের পুকুর থেকে অবাঞ্চিত মাছ দূর করতে ও সাহায্য করে।
বর্তমান অবস্থা এবং সংরক্ষণ: IUCN Bangladesh (2000) এর লাল তালিকায় এটি বিপন্ন প্রাণী হিসাবে চিহ্নিত। যদি ও বাসস্থান ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে তথাপি এখনও এই প্রজাতিটি সারা দুনিয়ায় প্রায় বিপদগ্রস্ত (Near threatened) হিসেবে বিবেচিত।
মন্তব্য: টাঙ্গাইল জেলার কিছু সংখ্যক গ্রাম্য মানুষ বৃহৎ আকারের চিতল মাছ খায় না। তারা বিশ্বাস করে যে, যখন এই মাছগুলির বয়স খুব বেশি হয় তখন তারা বিবাহিত হিন্দু মহিলাদের মতো কপালে সিঁদুর বহন করে এবং ভূতে পরিণত হয়। এই ভূত মাছ খেলে দুঃখ কষ্ট দেখা দিতে পারে। তাছাড়া গর্ভবর্তী মহিলাদের জন্য এটি সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ, কেননা তাতে জরায়ুতে অবস্থিত বাচ্ছার বৃদ্ধি ব্যহত হয় বলে মনে করা হয়। C. chitala মাছের মাংসে নিকোটিনিক এসিড থাকে যা মারাত্মক চর্মরোগের প্রতিষেধক হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
তথ্যসূত্র:
১. আলম, এম মনজুরুল (অক্টোবর ২০০৯)। “স্বাদুপানির মাছ”। আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; আবু তৈয়ব, আবু আহমদ; হুমায়ুন কবির, সৈয়দ মোহাম্মদ এবং অন্যান্য। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ ২৩ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃ: ৩–৪। আইএসবিএন 984-30000-0286-0
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।
Hi,Greeting of the day! This article is good enough to know on the species. My ideas are very affordable. Let me know what you think.Warm Regards. Lena.