ভারতে ২০১২ সালের প্রথম ৯ মাসে ৬৯ বাঘ ও ৩৯ গণ্ডারের মৃত্যু

ভারতে জাতীয় বন্য প্রাণী সপ্তাহ শুরু হয়েছে গত ১ অক্টোবর থেকে। তবে এবারের কর্মসূচিতে আশঙ্কার ছায়া ফেলেছে সেখানকার সর্বশেষ পরিসংখ্যান। জাতীয় বন্য প্রাণী বোর্ডের হিসাবে চলতি ২০১২ সালের বছরের প্রথম ৯ মাসে ভারতে ৬৯টি বাঘ মারা পড়েছে আর গণ্ডার মরেছে ৩৯টি। এসব প্রাণীদের বেশির ভাগই মারা পড়েছে চোরা শিকারিদের হাতে কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগে।

ভারতের জাতীয় বন্য প্রাণী বোর্ড জানিয়েছে, ২০১১ সালের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে বাঘের মৃত্যু হয়েছে পাঁচ গুণ বেশি। ২০০১ সালের পর এটাই সবচেয়ে বেশি বাঘের মৃত্যুর ঘটনা। সে বছর ৭২টি বাঘ মারা পড়েছিল। বোর্ডের সদস্য কিশোর রিতে বলেন, ৬৯টি বাঘের মধ্যে ৪১টির মৃত্যু হয়েছে চোরা শিকারিদের হাতে। সংরক্ষিত বনাঞ্চলের প্রত্যন্ত এলাকায় শিকারিরা এসব বাঘ হত্যা করেছে। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাবে এ ঘটনা ঘটেছে।

২০১০ সালে জাতীয় বাঘ সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষ (এনটিসিএ) বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধির কথা জানিয়েছিল। সে সময় ভারতে বাঘ ছিল এক হাজার ৭০৬টি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছিল মহারাষ্ট্র ও উত্তরাখণ্ডে। তবে কর্ণাটক ও তামিলনাড়ুতে বাঘ শিকারের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে বলেও এ সংস্থাটি সতর্ক করে দিয়েছিল।

আন্তর্জাতিক বাজারে একটি মৃত বাঘের দাম কমপক্ষে ৩০ লাখ রুপি। নেপাল ও মিয়ানমার দিয়ে শিকারিরা এসব বাঘ পাচার করে। চলতি বছর বন্যা ও চোরা শিকারিদের জন্য মারাত্মক হুমকির মধ্যে ছিল আসামের কাজীরাঙ্গা জাতীয় উদ্যানের (কেএনপি) গণ্ডার। গত জুন ও সেপ্টেম্বরে সেখানে পানিতে ডুবে ২৮টি গণ্ডারের মৃত্যু হয়েছে। আর ১১টি মারা পড়েছে শিকারিদের হাতে।

১৯১০ সাল থেকে দেশি গণ্ডারের সংখ্যার প্রবণতা

২০১০ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী কাজীরাঙ্গায় দুই হাজার ২৯০টি গণ্ডার ছিল। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর কালোবাজারে গণ্ডারের শিংয়ের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। একেকটি শিং কমপক্ষে ৪০ লাখ রুপিতে বিক্রি হয়।

ভারতের পরিবেশ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, বন্যার পর তারা যে বিধিনিষেধ জারি করেছিল তা মানা হয়নি। বন্য প্রাণী রক্ষার জন্য আসাম রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে যা যা করা সম্ভব তারা সবই করেছে। তবে তাদের লোকবলের অভাব রয়েছে।

আরো পড়ুন:  জাভাদেশীয় গণ্ডার বাংলাদেশের বিলুপ্ত স্তন্যপায়ি

আন্তর্জাতিক বন্যপ্রাণী সুরক্ষা সংস্থা দ্বারা প্রচারিত একটি দলিলে বলা হয়েছে, “ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়া হচ্ছে বাঘের মূল গন্তব্যস্থল, যেখানে বাঘের দেহের অংশগুলির উপর ভিত্তি করে চীনা ওষুধগুলি তৈরি করা হয়।”।

তথ্যসূত্র:

১. Chetan Chauhan & Digambar Patowary, “India loses 39 rhinos, 69 tigers in just a year” হিন্দুস্তান টাইমস; ৬ অক্টোবর ২০১২; ইউআরএল: https://www.hindustantimes.com/delhi-news/india-loses-39-rhinos-69-tigers-in-just-a-year/story-WCnRQpE39zhnNcmEuVvMJL.html.

Leave a Comment

error: Content is protected !!