গোলাপি ডলফিন বিলুপ্তির পথে

গোলাপি ডলফিন বা Indo-Pacific Hump-backed Dolphin, যার বৈজ্ঞানিক নাম  Sousa chinensis, বাংলাদেশে দেখার কোনো রেকর্ড না থাকলেও বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণি জ্ঞানকোষে এটিকে বাংলাদেশের স্তন্যপায়ী প্রানির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ধরে নেয়া যায় এটি একদা বঙ্গোপসাগরেও পাওয়া যেত। কিন্তু এই  গোলাপি ডলফিন আজ বৈশ্বিকভাবেই মহাবিপন্ন। “গত দশকে আমরা দেখেছি ভয়ানকভাবে এই ডলফিনের পরিমাণ কমতে। ২০০৩ সালে যেখানে ১৫৮টি ডলফিন দেখা গেছিল সেখানে ২০১২ সালে দেখা গেছে মাত্র ৬১টি।” একথা বলেছেন স্যামুয়েল হুং, হংকং ডলফিন সংরক্ষণ সোসাইটির চেয়ারম্যান। খবর ইটসইন্টারেস্টিং ডট কমের

এই গোলাপি ডলফিন একটি মাঝারি আকারের ডলফিন যা দৈর্ঘ্যে ২ থেকে ২.৮ মিটার (৬.৬ থেকে ৯.২ ফুট) পর্যন্ত হতে পারে। এদের ওজন হতে পারে ১৫০ কিলোগ্রাম থেকে ২০০ কিলোগ্রাম বা ৩৩০ থেকে ৪৪০ পাউন্ড পর্যন্ত।

হংকং অঞ্চলের ডলফিন থেকে জানা যায়, এই প্রজাতির ডলফিনের বেশিরভাগই জানুয়ারী থেকে আগষ্টের মধ্যে ঘটে জন্মে থাকে। নবজাতক ছানা প্রায় ১ মিটার (৩.৩ ফুট) দৈর্ঘ্যের হয়। প্রায় ১০ বছর বয়স হলে মেয়ে ডলফিন প্রজননক্ষম হয়।

১৯৮০’র দশকের শেষদিকে এই ডলফিনের ওপর নজরদারি শুরু করেন পরিবেশবাদীরা। কিন্তু সেটি অনেক দেরি হয়ে যায়। ২০০০ সালের দিকে গোলাপি ডলফিনের মোট সংখ্যা এসে দাঁড়ায় ৮০-১৪০টিতে।

২০১৬ সালের ভেতরে যে হংকং-যুহাই-ম্যাকাও ব্রিজ তৈরি হওয়ার কথা রয়েছে তার কারণে প্রচুর পাইলিং ও অন্যান্য নির্মাণকাজের ফলে পরিবেশ দূষণ বেড়েছে। সাথে সাথে বেড়েছে এই ডলফিন বিলুপ্ত হয়ে যাবার সম্ভাবনা। আমাদের এখন অপেক্ষা শুধু আরো একটি প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যাবার। 

২০২৩ সালের ভেতরে, হংকং একটি চেপ লাপ লক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জন্য তৃতীয় রানওয়ে সম্পূর্ণ করার পরিকল্পনা করেছে। এই বিমানবন্দরটি ইতিমধ্যে বিশ্বের ব্যস্ততম এক বন্দর। সেখানে মাটির অনুপস্থিতিতে ৬৫০ হেক্টর জমি তৈরি করা হবে, যা ৫,০০০টিরও বেশি অলিম্পিকের সাঁতারের পুলগুলির সমান। এই ৬৫০ হেক্টর জমি সমুদ্র থেকে উদ্ধার করা হবে যে এলাকাটি চীনা সাদা ডলফিনের জন্য প্রধান আবাসস্থল।

আরো পড়ুন:  Whales, Dolphins and Porpoises of Bangladesh.

Leave a Comment

error: Content is protected !!