বৈজ্ঞানিক নাম: Varanus bengalensis
বাংলা নামঃ বাংলা গুই,
ইংরেজি নামঃ Bengal Monitor.
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্যঃ Animalia
বিভাগঃ Chordata
শ্রেণীঃ Reptilia
বর্গ: Squamata, Oppel, 1811
পরিবারঃ Varanidae, Gray, 1827
গণঃ Varanus Merrem, 1820
প্রজাতিঃ Varanus bengalensis(Daudin, 1802)
পরিচিতি: বাংলাদেশের সরীসৃপের তালিকায় বাংলা গুই এক চমৎকার প্রাণি। এরা দুর্দান্ত সাহসী, জল-স্থল-বৃক্ষে চলতে সমান পারদর্শী। তুখোড় দৌড়বিদ ও বুদ্ধিমান গুইসাপের ইংরেজি নাম Bengal Monitor বৈজ্ঞানিক নাম Varanus bengalensis. শুধু শরীরের মাপ ১৭৫ সেন্টিমিটার লেজটি১০০ সেন্টিমিটার। দিবাচর। পানিরতলায় ডুব দিয়ে থাকতে পারে দীর্ঘ সময়। বড়গাছের মাথায় চড়তে পারে। বিষধর সাপ লেজ ধরে গাছে আছড়ে মেরে ফেলে ।
কথ্যভাষায় ‘গুইল’ হিসেবে পরিচিত এই প্রাণির ভিন্ন একটি নাম শুনলাম আমাদের প্রো-উপাচার্য অধ্যাপক আফসার আহমদের কাছ থেকে। নাটক ও নাট্যতত্ত্বের এই শিক্ষক বললেন, মধ্যযুগের কবি মুকুন্দরাম চক্রবর্তীর চণ্ডিমঙ্গল কাব্যে এই প্রাণিকে ‘গোধিকা’ বলা হয়েছে। কিছু দেবত্বও আরোপ করা হয়েছে গোধিকার উপর। প্রাণিকূলকে সুরক্ষা দেন দেবী। চণ্ডিকাব্যে দেখা যায়, ব্যাধ কালকেতু ‘স্বর্ণগোধিকা’ ধরেছে পুড়িয়ে খাওয়ার জন্য। কিন্তু দেবী স্বয়ং গোধিকার ছদ্মবেশ ধারণ করেছেন ব্যাধের হাত থেকে এই নিরীহ প্রাণিকে রক্ষা করতে। ছোটবেলায় শোনা আমাদের নেত্রকোনা অঞ্চলের ছড়া, “গুইল মারে না ভালা মাইনষে, গুইল মারে গুলাম জাতে” — নিশ্চয়ই মঙ্গলকাব্যে বিধৃত বিপন্ন প্রাণিকুলকে রক্ষার মতো আরও একটি লোকজ প্রয়াস।
স্বভাব ও আবাসস্থলঃ প্রিয় আশ্রয়স্থল বন-বাগানের ভেতরের মাটির গর্ত, গোরস্থানের পুরোনো কবরের ভেতরটা, ইটের পাঁজা, ঘন ঝোপঝাড়ের তলা ইত্যাদি। খাদ্য তালিকায় আছে: মাছ, ব্যাঙ, ইঁদুর, পাখি ও পাখির ছানা, কাঁকড়া অঞ্জন ইত্যাদি। বয়স বেশি হলে বুদ্ধি বাড়ে—বাড়ে কৌশল, একেবারে ‘ঘড়েল’ হয়ে যায়। এ রকম ঘড়েল গুইসাপ পানিতে ডুব দিয়ে এগিয়ে সাঁতার কাটতে থাকা হাঁস ও হাঁসের ছানাসহ অন্যান্য পানিতে ভাসা পাখি ধরে দেয় ডুব। শিকার না মরা পর্যন্ত ডুব দিয়েই থাকে। পরে ডাঙায় উঠে খায়। এরা অনেক সময় গরু-ছাগলের মড়াও খায়। লম্বা জিভ বের করে উইপোকাসহ অন্যান্য পোকা খায়। ২৫-৩০টি ডিম পাড়ে। বাচ্চা ফোটে আট-দশ মাস পর। ছোট বাচ্চা দেখতে খুব সুন্দর। উপকারী এই প্রাণীটি মানুষ ও পরিবেশের মহাবন্ধু। এরা যে তল্লাটে চরে, সে তল্লাটে বিষধর সাপ থাকে না। এ জন্যই মানুষ এদের ভালোবাসে। এরাও নির্ভয়ে ঘুরে মানুষের আশপাশে—বন্ধু যেন হতে চায় মানুষের।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।
After reading your blog post, I understand that this article is good enough. Thanks for the article. I wish that your articles will help to save the species of Bangladesh.