বৈজ্ঞানিক নাম: Amyda cartilaginea
সমনাম: Testudo cartilaginea
বাংলা নাম: পাহাড়ি তরুণাস্থি কাছিম,
ইংরেজি নাম: Asiatic Softshell Turtle.
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
শ্রেণী: Reptilia
পরিবার: Trionychidae
গণ: Amyda
প্রজাতি: Amyda cartilaginea
ভূমিকা: বাংলাদেশের কচ্ছপের তালিকায় মোট ২৯ প্রজাতির কচ্ছপ, কাইট্টা ও কাছিম আছে। এদের মধ্যে আমাদের আলোচ্য পাহাড়ি তরুণাস্থি কাছিম হচ্ছে একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং মহাবিপন্ন প্রজাতি।
বর্ণনা: আমাদের মিঠাপানির গঙ্গা তরুণাস্থি কাছিম এবং ধুম তরুণাস্থি কাছিমের মতো দেখতে, কিন্তু আকারে বেশ ছোট ও চ্যাপ্টা আকৃতির এ কাছিমের দৈর্ঘ্য সর্বোচ্চ ৮৩ সেন্টিমিটার। এর খোলসের ওপরের অংশের সামনের প্রান্তে অবস্থিত এক সারি গোলাকার গুটিকা (টিউবারকল) এবং সরু ও লম্বা নাক দেখে সহজেই অন্য সব কাছিম প্রজাতি থেকে আলাদা করে চেনা যায়। এ কাছিমের ওপরের অংশ ধূসর থেকে জলপাই রঙা এবং নিচের অংশ সাদা অথবা হালকা ধূসর হয়ে থাকে। কম বয়সী কাছিমের ওপরের অংশে অনেক কালো ও হলদে ফোটা এবং উঁচু উঁচু লম্বাটে দাগ থাকে, যা বয়স বাড়ার সময় পর্যায়ক্রমে খোলসের ওপরের চামড়ার সঙ্গে মিশে যায়।
স্বভাব ও আবাসস্থল: নিশাচর পাহাড়ি তরুণাস্থি কাছিমের প্রধান খাবার পাহাড়ি নদী ও জলাশয়ের মাছ, ব্যাঙ, ব্যাঙাচি, চিংড়ি ও পোকামাকড়। এরা নদী বা জলাশয়ের ধারে গর্ত খুঁড়ে বছরে তিন-চারবার পাঁচ থেকে ৩০টি করে ডিম পাড়ে। ডিম ফুটে বাচ্চা বের হতে সময় লাগে ১৩০-১৪০ দিন।
বিস্তৃতি: এই কাছিম প্রজাতির বিস্তৃতি মিয়ানমার ও ভারতের মিজোরাম রাজ্য থেকে শুরু করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সুমাত্রা, জাভা ও বর্নিও দ্বীপ পর্যন্ত। বাংলাদেশে এ প্রজাতির কাছিম প্রথম পাওয়া নিশ্চিত করেন মনিরূল খান নভেম্বর ২০১১ তে।
অবস্থা: বিশ্বব্যাপী এই প্রজাতির কাছিম সঙ্কটাপন্ন এবং বাংলাদেশে মহাবিপন্ন। বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনানুসারে রক্ষিত বন্যপ্রাণীর তালিকায় তফসিল-১ অনুযায়ী এ প্রজাতি সংরক্ষিত।
মন্তব্য: যেসব দেশে এই কাছিম পাওয়া যায়, সব দেশের মানুষ একে শিকার করে মাংসের জন্য। বাংলাদেশের যে দুর্গম এলাকায় এ কাছিম পাওয়া গেছে, সেখানেও তার ব্যতিক্রম নয়। স্থানীয় ম্রো সম্প্রদায়ের লোকজন এই কাছিম শিকার করে। তাঁরা নদীর তলায় কাদামাটি ও ছোট পাথরের মধ্যে বর্শা গেঁথে গেঁথে লুকিয়ে থাকা কাছিমের অবস্থান শনাক্ত করেন। এভাবে কাছিম শিকার চলতে থাকলে বাংলাদেশে কাছিম নির্বংশ হতে খুব বেশি দিন সময় লাগবে না।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।