ভূমিকা: বাংলাদেশের কচ্ছপের তালিকায় মোট ২৯ প্রজাতির কচ্ছপ, কাইট্টা ও কাছিম আছে। এদের মধ্যে আমাদের আলোচ্য ত্রি-খিলা স্থল কচ্ছপ হচ্ছে একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং সংকটাপন্ন প্রজাতি।
ত্রি-খিলা স্থল কাইট্টা বর্ণনা:
ত্রি-খিলা স্থল কচ্ছপ বা ত্রিশিরা শিলা কাইট্টার দৈর্ঘ্য ১৬ সেমি। আমাদের মিঠাপানির শামুকভুক কালী কাইট্টার মতো দেখতে এই কাইট্টার কৃত্তিকাবর্ম অপেক্ষাকৃত লম্বাটে, তিন ধারবিশিষ্ট, বক্র এবং তিনটি ভোঁতা কাঁটা থাকে। এদের মাথা ছোট, তুণ্ড খর্ব; শঙ্কু আকৃতির, এবং উপরের চোয়ালের মধ্যভাগে খাঁজ থাকে। মাথার করোটি নলাকার; চোয়ালের alveolar আবরণী সরু ও ধারবিহীন। কৃত্তিকাবর্ম গাঢ় জলপাই বা ধূসর রঙের এবং হলুদ রঙের কাঁটা থাকে। বক্ষস্ত্রাণ হলদে বাদামি মাথা ও পা ধূসর কালো রঙের, কখনো হলুদ রঙের দাগ থাকে।
স্বভাব ও আবাসস্থল:
ত্রিশিরা শিলা কাইট্টা স্থলজ, সন্ধ্যাকালীন সময়ের হয়। যদিও খাদ্য হিসেবে উদ্ভিদ গ্রহণ করে তদুপরি এরা সর্বভূক। এরা ফেব্রুয়ারি-এপ্রিল ও অক্টোবর-ডিসেম্বর মাসে ডিম পাড়ে এবং পরিস্ফুটনের সময় ৬০-৭২ দিন।
বিস্তৃতি:
এই প্রজাতির বিস্তৃতি বাংলাদেশের উত্তর অঞ্চল এবং দক্ষিণ-পূর্ব অংশ টেকনাফে পাওয়া যায়। এছাড়া ভারত ও নেপালে পাওয়া যায়।
অবস্থা:
বিশ্বব্যাপী এই প্রজাতির কাছিম সঙ্কটাপন্ন এবং বাংলাদেশে বিপন্ন। বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনানুসারে রক্ষিত বন্যপ্রাণীর তালিকায় তফসিল-১ অনুযায়ী এ প্রজাতি সংরক্ষিত।
মন্তব্য:
যেসব দেশে এই কাইট্টা পাওয়া যায়, সব দেশের মানুষ একে শিকার করে মাংসের জন্য। এভাবে কাইট্টা শিকার চলতে থাকলে বাংলাদেশে ত্রিশিরা শিলা কাইট্টা নির্বংশ হতে খুব বেশি দিন সময় লাগবে না।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।