জীবন (ইংরেজি: Life) হচ্ছে সেসব জীবিত বস্তু যেগুলোর ভেতরে এমন কিছু বৈশিষ্ট্য দেখায় যা প্রতিক্রিয়া, বৃদ্ধি, বিপাক, শক্তির রূপান্তর এবং প্রজননকে অন্তর্ভুক্ত করে। প্রোটোপ্লাজমের ক্রিয়াকলাপকে জীবন বলা হয়। বিজ্ঞান জীবনকে বস্তুর গতির একটা বিশেষ প্রকাশ বলে মনে করে। জীবনের একটি বৈশিষ্ট্য এই যে, জীবন বিভিন্ন প্রকার জীবদেহের মধ্যে বিধৃত। জীবন বিকাশের একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জন্মলাভ করে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় এবং নিজের ধারাকে রক্ষাকারী অনুরূপ জীবনের সৃষ্টি করে আবার অ-জীবে রূপান্তরিত হয়।
জীবনের বিকাশের অপর একটি বৈশিষ্ট্য এই যে, জীব একদিকে জীবের সঙ্গে এবং অপরদিকে অজীব পরিবেশের সঙ্গে ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ার পারস্পরিক সম্পর্কের মাধ্যমে বিবর্তিত হয়ে, সহজ থেকে জটিলতর এক জীবজগতের সৃষ্টি করেছে। সহজ থেকে জটিলতার বিবর্তনের এই ধারার সর্বাধিক জটিল বিকাশ ঘটেছে মনুষ্য জীবদেহে।
জীবদেহের একটি মৌলিক চরিত্র হচ্ছে তার অভ্যন্তরস্থ সার্বক্ষণিক সৃষ্টি এবং ধ্বংসের প্রক্রিয়া। জীবদেহমাত্রই বীজকোষের সমাহার। জীবদেহে সর্বক্ষণই একদিকে এক জীবকোষের বিভাজনে অপর জীবকোষের সৃষ্টি হচ্ছে এবং অপরদিকে ক্ষয়প্রাপ্ত জীবকোষের মৃত্যু ঘটছে। জীবকোষের এই সার্বক্ষণিক ক্ষয়বৃদ্ধিকেই অনেকে জীবনের সহজ সংজ্ঞা বলে নির্দিষ্ট করেছেন। জীবের সঙ্গে অজীবের পার্থক্য কি বস্তুর অণুর একটি বিশেষ সংবদ্ধতা কিংবা বস্তর অতিরিক্ত জীবন নামক কোনো অতুলনীয় শক্তির মধ্যে নিহিত? এ তর্কের কোনো চূড়ান্ত মীমাংসা হয় নি।
তথ্যসূত্র:
১. সরদার ফজলুল করিম; দর্শনকোষ; প্যাপিরাস, ঢাকা; জুলাই, ২০০৬; পৃষ্ঠা ২৬৫-২৬৬।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।