পেঁয়াজ সারা দুনিয়ায় জনপ্রিয় ও ভেষজ গুণসম্পন্ন সবজি

সবজি

পেঁয়াজ

বৈজ্ঞানিক নাম: Allium cepa L., Sp. PI. 1: 300 (1753). সমনাম: জানা নেই। ইংরেজি নাম: অনিয়ন, বাল্ব অনিয়ন। স্থানীয় নাম: পিয়াজ।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস 
জগৎ/রাজ্য: Plantae বিভাগ: Angiosperms অবিন্যাসিত: Monocots বর্গ: Liliales গোত্র: Liliaceae গণ: Allium প্রজাতি: Allium cepa L., Sp. PI. 1: 300 (1753).

পেঁয়াজ-এর বর্ণনা:

পেয়াজ লিলিয়াসি পরিবারের এলিয়াম গণের একটি বর্ষজীবী বীরুৎ  প্রজাতি। এদের কান্ড ভূনিম্নস্থ, রূপান্তরিত, ক্ষুদ্র চাকতি সদৃশ, বাল্ব নামে পরিচিত। পত্র মূলজ, সরল, লম্বা বেলনাকার, ফাপা, অর্ধদ্বিসারী। পুষ্পবিন্যাস প্রান্তীয় আম্বেল, পত্র বিহীন ভৌম পুষ্প দন্ডে সজ্জিত, ঝিল্লিযুক্ত, মঞ্জরীপত্র দ্বারা আচ্ছাদিত। পুষ্প সবৃন্তক, সম্পূর্ণ, উভলিঙ্গ। পুষ্পপুট ৬টি, সামান্য অসম, মুক্ত।

পুংকেশর ৬টি, পুষ্পপুট খন্ডের মূলীয় অংশে সন্নিবেশিত, পুংদন্ড মুক্ত, নিম্নাংশ অনেকটা প্রসারিত, পরাগধানী দীর্ঘায়ত, বিদারণ অন্তর্মুখী। গর্ভপত্র ৩টি, গর্ভাশয় ৩-কোষী, অমরাবিন্যাস অক্ষীয়, গর্ভদন্ড ও গর্ভমুণ্ড ১ টি করে। ফল ঝিল্লিযুক্ত, কোষ্ঠবিদারী ক্যাপসুল। বীজ চাপা, কালো।

ক্রোমোসোম সংখ্যা: 2n = ১৬ (Kumar and Subramaniam, 1986)।

আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার: উর্বর জমিতে চাষাবাদ করা হয়। ফুল ও ফল ধারণ ঘটে ফেব্রুয়ারি থেকে জুন। বীজ ও কন্দের সাহায্যে বংশ বিস্তার।

বিস্তৃতি: আদি নিবাস সম্ভবত মধ্য এশিয়া। বর্তমানে পৃথিবীর সর্বত্র চাষাবাদ করা হয়। বাংলাদেশের সর্বত্র জন্মে।

অর্থনৈতিক ব্যবহার/গুরুত্ব/ক্ষতিকর দিক:

সম্পূর্ণ অপরিপক্ক উদ্ভিদ, পাতা, মঞ্জরীদন্ড শাক বা সবজিরূপে ব্যবহার করা হয়। প্রধান ব্যবহার্য অংশ রসালো শল্ক পত্র মূল যা ভূল করে বাল্ব বলা হয়। এগুলি সবজিরূপে গ্রহণ করা হয়, কাঁচাও ব্যবহার করা চলে। বাল্ব বা কন্দ মসলায় ব্যবহার্য। এর প্রধান উপাদান উদ্বায়ী তেল যাতে প্রচুর সালফার যৌগ বিদ্যমান।

পিয়াজ বাতের পীড়ায় ব্যবহার করা হয়, এছাড়া এটি মূত্রবর্ধক এবং জীবাণু প্রতিরোধী। বহুমূত্র রোগীদের ইনসুলিনের প্রয়োজনীয়তা হ্রাস করে। রক্তের কোলেস্টেরল কমাতেও এটি গুরুত্বপূর্ণ। পিয়াজ উত্তেজক ও কামোদ্দীপক (Ghani, 2003)। পেয়াজের ভেষজ গুনাগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পড়ুন

আরো পড়ুন:  খাড়া বিষকচু বাংলাদেশের ঝোপ-ঝাড়ে জন্মানো সংকটাপন্ন বিরুৎ

পিয়াজ বা পেয়াজের ভেষজ উপকারিতা

জাতিতাত্বিক ব্যবহার: পিয়াজের রস চুল বৃদ্ধির সহায়ক। তেলের সাহায্যে এই রস মিশ্রিত করে মাথায় মাখা হয়।

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ১১ খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) পেঁয়াজ প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে পেঁয়াজ সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির বর্তমানে সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই। 

তথ্যসূত্র:

১. এম এ হাসান, (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস”  আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ১১ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৩৫৪-৩৫৫। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিপিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Mboesch

Leave a Comment

error: Content is protected !!