রসুন সারা দুনিয়ায় ব্যবহৃত জনপ্রিয় সবজি মসলা

বৈজ্ঞানিক নাম: Allium sativum L., Sp. Pl. 1: 297 (1753).

সমনাম: জানা নেই।

ইংরেজি নাম: গার্লিক।

স্থানীয় নাম: রসুন।

জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস

জগৎ/রাজ্য: Plantae

বিভাগ: Angiosperms

অবিন্যাসিত: Monocots

বর্গ: Liliales

গোত্র: Liliaceae

গণ: Allium

প্রজাতি: Allium cepa L., Sp. PI. 1: 300 (1753).

বর্ণনা: রসুন লিলিয়াসি পরিবারের এলিয়াম গণের একটি ঋজু বীরুৎ। কান্ড অতিশয় ক্ষুদ্র, চাকতি সদৃশ, উদ্ভিদবিজ্ঞানের ভাষায় বাল্ব রূপে পরিচিত, মূলীয় অংশে অনেক অস্থানিক মূল। মূলীয় পত্রাবরণ দ্বারা ছদ্ম বায়বীয় কান্ড তৈরি হয়। পত্র সরল, মূলজ, পরিণত অবস্থায় ৪-১০ টি, দ্বিসারী, রোমশ বিহীন, ফলক রৈখিক, প্রায় ৫০ সেমি লম্বা। পুষ্পবিন্যাস আম্বেল, ভৌমদন্ড দৃঢ়, পুষ্পপুটাংশ ৬টি, ২ আবর্তে সজ্জিত, বিযুক্তদল, সবুজাভ সাদা। পুংকেশর ৬টি। গর্ভপত্র ৩টি, যুক্ত, গর্ভাশয় ৩-কোষী, অমরাবিন্যাস অক্ষীয়, গর্ভদন্ড খাটো, গর্ভমুণ্ড সুচ্যগ্র। ফল বীজ বিহীন। ফুল ও ফল ধারণ ঘটে ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল।

ক্রোমোসোম সংখ্যা: 2n = ১৬ (Kumar and Subramaniam, 1986)।

আবাসস্থল: মাঝামাজি উঁচু জায়গার দো-আঁশ মাটি রসুন। চাষাবাদের জন্য উপযুক্ত (PH ৬-৭ বা ততোধিক)।

বিস্তৃতি: আদি নিবাস সেন্ট্রাল এশিয়া (তিয়েন শাং)। এখানে এর পূর্বপুরুষ A. longicuspis Regd. স্থানিক । শীতকালে বাংলাদেশের সর্বত্র চাষাবাদ হয়। প্রধান উৎপাদনকারী দেশ চীন, মিশর, ভারত, সাউথ কোরিয়া, থাইল্যান্ড ও তুরস্ক।

অর্থনৈতিক ব্যবহার/গুরুত্ব/ক্ষতিকর দিক: রান্নার মসলা এবং ইউনানী ও আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় এর চলিত প্রয়োগ রয়েছে। এতে আছে সালফার মিশিত যৌগ এলিন যা মানুষের রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে, এটি ক্যান্সার রোগেরও উপসম করে। এর অন্যান্য ভেষজ গুণের মধ্যে উল্লেখযোগ্য এটি বায়ুনাশক, মূত্রবর্ধক, কামোদ্দীপক, এছাড়া রক্তের শর্করা কমাতেও এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। রসুন ক্ষত, কুষ্ঠ, কাশি, অর্শ, বাত ও বহুমূত্র রোগের উপশমেও ব্যবহার করা হয় (Ghani, 2003)। এশিয়ার বহুদেশে চাটনি, আচার প্রভৃতি তৈরিতে রসুন গুরুত্বপূর্ণ। রসুনের ভেষজ উপকারিতা সম্বন্ধে বিস্তারিত জানতে পড়ুন

আরো পড়ুন:  ওল কচু দক্ষিণ এশিয়ার বর্ষজীবী ভেষজ কন্দজাতীয় গুল্ম

রসুন খাওয়ার উপকারিতা

জাতিতাত্বিক ব্যবহার: অজীর্ণ ও পেট ব্যথায় বাংলাদেশের বিভিন্ন গ্রামের অধিবাসীরা রসুন ব্যবহর করে থাকেন। বাতের ব্যথায় রসুন তেলের সাথে গরম করে মালিশ করা হয়। তরুণ সর্দিতেও রসুন মিশ্রিত গরম তেল কপালে মালিশ করার প্রথা প্রচলিত। রান্না দ্রব্যাদি পচন রোধেও রসুনের ব্যবহার রয়েছে।

বংশ বিস্তার: কোয়া থেকে অঙ্গজ উপায়ে বংশ বৃদ্ধি।

প্রজাতিটির সংকটের কারণ: বর্তমানে বিপদের সম্ভাবনা নেই।

সংরক্ষণ ও বর্তমান অবস্থা: আশংকা মুক্ত (lc)।

গৃহীত পদক্ষেপ: সংরক্ষণের কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় নি।

প্রস্তাবিত পদক্ষেপ: স্থানীয় রসুন চাষীদের সংরক্ষণ প্রয়োজন।

তথ্যসূত্র:

১. আশরাফুল হক ও এম এ হাসান, (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস”  আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ১১ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৩৫৫। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

Leave a Comment

error: Content is protected !!