ঘৃতকুমারী বা ঘৃতকাঞ্চন বা তরুণী জনপ্রিয় ঔষধি উদ্ভিদ

ঔষধি উদ্ভিদ

ঘৃতকুমারী

বৈজ্ঞানিক নাম: Aloe vera, (L.) Burm.f. সমনাম: Aloe barbadensis Mill. Aloe barbadensis var. chinensis Haw. Aloe chinensis (Haw.) Baker. Aloe elongata Murray. Aloe flava Pers. Aloe indica Royle, Aloe lanzae Tod. Aloe maculata Forssk. (illegitimate). Aloe perfoliata var. vera L. Aloe rubescens DC. Aloe variegata Forssk. (illegitimate). Aloe vera Mill. (illegitimate). Aloe vera var. chinensis (Haw.) A. Berger. Aloe vera var. lanzae Baker. Aloe vera var. littoralis J.Koenig ex Baker. Aloe vulgaris Lam. সাধারণ নাম: Aloe vera, Medicinal aloe, Burn plant. বাংলা নাম: ঘৃতকুমারী বা ঘৃতকাঞ্চন
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae বিভাগ: Angiosperms অবিন্যাসিত: Monocots বর্গ: Asparagales পরিবার: Asphodelaceae গণ: Aloe প্রজাতি: Aloe vera, (L.) Burm.f.

ঘৃতকুমারী লিলিয়াসি পরিবারের অ্যালো গণের একটি বিরুত জাতীয় উদ্ভিদ। এদের বৈজ্ঞানিক নাম Aloe vera. সারা দুনিয়ায় অ্যালো ভেরা নামে পরিচিত এই উদ্ভিদটির বাংলা নাম ঘৃতকুমারী বা ঘৃতকাঞ্চন বা তরুণী। এই গাছটির ভেষজ গুণাগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পড়ুন

ঘৃতকুমারীর ঔষধি গুণাগুণ

ঘৃতকুমারী ভারতের নানা স্থানের বাগানে চাষ করা হয়, তাছাড়া দক্ষিণ ভারতের অনেক স্থানে জঙ্গলের ধারে নানা ধরনের অর্থাৎ নানা জাতীয় ঘৃতকুমারী দেখা যায়, সেগুলি অযত্নে বেড়ে ওঠে। এছাড়া কোনো সৌখিন লোকেরা বাগান সাজাবার জন্যও এই গাছ লাগিয়ে থাকেন, এমন কি টবেও বসানো হয়। পাশ্চাত্য উদ্ভিদবিজ্ঞানীদের মতে এই গাছের আদিম বাসস্থান আরব ও সক্রোটা দ্বীপ; তবে একে এতটা গণ্ডিভুক্ত করা সমর্থন করা যায় না, কেননা অর্থববেদে এই গাছের সমীক্ষা রয়েছে। সে সুক্তটি এই ভেষজ আলোচনার মধ্যে দেওয়া হলো।

এ সম্বন্ধে আর একটা কথা বলার আছে, আর যদি ধরা যায় বর্তমান ভারত বা জম্বুদ্বীপ বিশাল অশ্বক্রান্তার (বর্তমান এশিয়া) অংশবিশেষ, তা হ’লে এ ভেষজটি যে পাশ্চাত্য (পশ্চাতে আগত) এ কথাটার প্রসঙ্গই ওঠে না।

আরো পড়ুন:  ঘৃতকুমারী, ঘৃতকাঞ্চন, অ্যালোভেরা বা তরুণী ঔষধি গুণ সম্পন্ন বিরুৎ

ঘৃতকুমারী বর্ষজীবী বীরুৎ। এই গাছ এক থেকে দেড় ফুট উঁচু হয়, পাতাগুলি পুরু, কিন্তু পাতার নিচের দিকটা আংশিক বৃত্তাকার, উপরের দিকটা সমান, পুরু পাতার দুই ধার করাতের মত কাটা, ভিতরের মাংসল শাঁস পিচ্ছিল লালার মতো; এর একটা উৎকট গন্ধও আছে, তার উপর তিক্তস্বাদ। এর হলুদ রংয়ের যে আঠা বা নির্যাস বের হয়, সেইটাই শুকিয়ে মুসম্বর তৈরি হয়।

এই গাছের পুষ্পদন্ডটি সরু, লাঠির ন্যায়, ফলে লেবু রংয়ের, শীতের শেষে ফুল ও ফল হয়। এটির বোটানিকাল নাম Aloe indica Royle এর পূর্ব নাম ছিলও Aloe barbadensis Mill, একে Aloe vera বলা হয়। এটি Liliaceae ফ্যামিলিভুক্ত। আর একটা কথা এখানে জানাই যে, কাথিয়াবাড় অঞ্চলের জাফিরাবাদে যে প্রজাতির ঘৃতকুমারী পাওয়া যায়, সেটির বোটানিকাল নাম Aloe abyssinica Lam.[১]

একই গোত্রের অন্য একটি জাত হলো ঘৃতকাঞ্চন।  এই দুয়ের মধ্যে পার্থক্য হলও  ঘৃতকুমারীর পাতা আনারসের পাতার মতো গোঁড়ার দিকটা চওড়া ও  কাঁটা সবুজ। কাঁটা অপেক্ষাকৃত ঘন। ঘৃতকাঞ্চনের পাতা গোড়া থেকে বিপরীতমুখী। অপেক্ষাকৃত হালকা ও সরু। গোঁড়ার দিকটা চওড়া কম ও পাতার কাঁটা তুলনামূলক কম। [২]

চাষ পদ্ধতি: অংগজ প্রজননের পদ্ধতিতে এর বংশ বিস্তার হয়ে থাকে। পার্শ্ব থেকে বের হওয়া ছোট ছোট অংগজ বংশ বিস্তারে সহায়তা করে। [৩]

বিস্তৃতি: এটির আদিম দেশ আবিসিনিয়া। বর্তমানে সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে এবং সব দেশেই পাওয়া যায়।

ব্যবহৃত অংশ: রোগ প্রতিকারে ব্যবহার হয় এর পাতার মাংসল পিচ্ছিল অংশ, ডাঁটা, মূল ও শুষ্করস (মুসব্বর)।

তথ্যসূত্রঃ

১. আয়ূর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্রচার্য, চিরঞ্জীব বনৌষধি‘ খন্ড ২, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, প্রথম প্রকাশ ১৩৮৩, পৃষ্ঠা, ৩৫।

২.  শেখ সাদী; উদ্ভিদকোষ, দিব্যপ্রকাশ, ঢাকা, প্রথম প্রকাশ ফেব্রুয়ারি ২০০৮, পৃষ্ঠা, ১৪৭।

২. এ বি এম জাওয়ায়ের হোসেন, ওষুধি গাছগাছড়া, গ্রন্থনা, ঢাকা, প্রথম প্রকাশ ফাল্গুন ১৪১১, পৃষ্ঠা, ৩৫।

আরো পড়ুন:  মুথা ঘাস বাংলাদেশের সর্বত্রে জন্মানো ভেষজ প্রজাতি

Leave a Comment

error: Content is protected !!