ভূমিকা: যব (বৈজ্ঞানিক নাম: ordeum vulgare, ইংরেজী নাম: Barley.) হচ্ছে নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের ভেষজ গুণসম্পন্ন দানাদার শস্য। এটি বাংলাদেশের প্রচলিত ও পরিচিত খাদ্যশস্য।
যব-এর বর্ণনা:
বর্ষজীবী তৃণ, কান্ড ৬০-১২০ সেমি লম্বা, খাড়া, রোমশ বিহীন। পত্রফলক রৈখিক, ৫-৪০ x ০.৪-১.৫ সেমি, চ্যাপ্টা, গোড়ায় ২টি কর্ণসদৃশ অভিক্ষেপযুক্ত, অনুফলক ১-৩ মিমি লম্বা, কর্তিতাগ্র, আবরণ শিথিল, রোমশ বিহীন, রেখাযুক্ত।
পুষ্প বিন্যাস প্রান্তীয় একল স্পাইক, ৬-১২ সেমি লম্বা, প্রথমে খাড়া পরবর্তীতে বক্র, মঞ্জরী অক্ষের বিপরীত পার্শ্বে স্পাইকলেট, মঞ্জরী অক্ষ অনুরোমশ প্রান্তযুক্ত। স্পাইকলেট একত্রে ৩টি করে জন্মে, ১ পুষ্পিকাবিশিষ্ট বা পার্শ্বীয় স্পাইকলেট অসম্পূর্ণ, কেন্দ্রীয় স্পাইকলেট ৮-১২ মিমি লম্বা, অবৃন্তক। ঘুম ২টি, স্থায়ী, ৭-৮ মিমি লম্বা, তুরপুর আকার, ১-শিরাল। পাশ্বীয় পুষ্পিকা উভলিঙ্গ বা পুং, কেন্দ্রীয় পুষ্পিকা উভলিঙ্গ। লেমা ভল্লাকার, ৯-১১ x ৩ মিমি, ৫- শিরাল, শূক ৬-১৫ সেমি লম্বা। পেলিয়া ৮-১০ সেমি লম্বা। লডিকিউল ২টি।
পুংকেশর ৩টি, পরাগধানী ১.৫ মিমি লম্বা। গর্ভমুন্ড সাদা। ক্যারিঅপসিস ডিম্বাকার বা সরু আয়তাকার, ৮-১০ x ৩ মিমি, সম্মুখভাগে গর্ত, শীর্ষ অতিরোমশ, লেমা ও পেলিয়ার অভ্যন্তরে আবদ্ধ, জ্বণ ক্ষুদ্র।
ক্রোমোসোম সংখ্যা: ২n = ১৪, ২৮ (Fedorov, 1969)।
আরো পড়ুন: যব খাওয়ার ১২টি উপকারিতা, রেসিপি ও নিয়ম
যব-এর চাষাবাদ:
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২৩০০ মিটার পর্যন্ত উচ্চতায়। বিভিন্ন আবহাওয়ায় আবাদ হয়, কখনো জমির চারপাশে স্বল্প সময়ের জন্য টিকে থাকে। বীজ থেকে চারা জন্মে। ফুল ও ফল ধারণ কাল জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস।
বিস্তৃতি:
আদিনিবাস সম্ভবত মধ্যপাচ্য। নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের চাষাবাদকৃত শস্য। বাংলাদেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে চাষ করা হয়।
যব-এর অর্থনৈতিক ব্যবহার ও গুরুত্ব:
যব মদ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া এটি গবাদি পশুর উত্তম খাদ্য (Purseglove, 1968)। দানা শ্বাসনালীর প্রদাহ, পেত্তিক সমস্যা, হাঁপানিরোগ, আলসার, বুক ব্যথা ইত্যাদি রোগে উপকারী (Kirtikar et al., 1935)
অন্যান্য তথ্য:
বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ১২ খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) যব প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে যব সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির বর্তমানে সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই তবে যবের ব্যাপক চাষাবাদ প্রয়োজন।
তথ্যসূত্র:
১. এস নাসির উদ্দিন (আগস্ট ২০১০) “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। খন্ড ১২, পৃষ্ঠা ৩৮৫-৩৮৬। আইএসবিএন 984-30000-0286-0
বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিপিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Matt Lavin
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।