চিনা ঢেকিয়া দক্ষিণ এশিয়ায় জন্মানো ভেষজ ফার্ন

ফার্ন

চিনা ঢেকিয়া

বৈজ্ঞানিক নাম: Bolbitis sinensis (Bak.) K Iwats., Acta Phytotax. Geobot. 18:49 (1959). সমনাম: Acrostichum sinensis Bak. (1906). ইংরেজি নাম: বলবাইটিস। স্থানীয় নাম: ঢেকিয়া, চিনা ঢেকিয়া।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae. বিভাগ: Angiosperms. অবিন্যাসিত: Edicots. বর্গ: Polypodiales. পরিবার: Dryopteridaceae. গণ: Begonia  প্রজাতির নাম: Bolbitis sinensis.

ভূমিকা: চিনা ঢেকিয়া (বৈজ্ঞানিক নাম: Bolbitis sinensis) বোলবিটাস গণের এক প্রকারের ফার্ন। এই প্রজাতি বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ায় জন্মে।

চিনা ঢেকিয়া-এর বর্ণনা:

গ্রন্থিক ২-৪ সারি পত্রদন্ড বিশিষ্ট, গ্রন্থিকন্দে শল্ক ৬.০ x ১.৫-২.০ মিমি পর্যন্ত, অস্বচ্ছ অথবা প্রায় পুরু পার্শ্বায় প্রাচীর যুক্ত কোষ বিশিষ্ট, বাদামী অথবা কালচে।

অনুর্বর পাতা পক্ষল, ৩৫-১৪৫ সেমি লম্বা, পত্রদন্ড ১০-৩৫ সেমি লম্বা, গোড়ার কাছে ১.৫-৪.০ মিমি পুরু, পত্রফলক ১-৫, মধ্যাংশের নিচে সবচাইতে চওড়া, ২০-১১৫ X ১০-৩৫ সেমি,

অগ্রস্থ খন্ড ব্যতীত ১২-৮০ সেমি, অগ্রস্থ খন্ড ৮৩৫ সেমি লম্বা, কোমল, গাঢ় সবুজ, মসৃণ, সব চাইতে নিচের অংশ ব্যতীত পত্রক অক্ষ সাধারণতঃ সরু ডানাযুক্ত, পত্রক একাত্তর হতে বিপরীত, ১৪-৪০, ৬৫ মিমি পর্যন্ত দূরে দূরে,

কেন্দ্রীয় পত্রক মধ্যাংশের কাছে সাধারণতঃ সরু ডানাযুক্ত, পত্রক একাত্তর হতে বিপরীত, ১৪-৪০, ৬৫ মিমি পর্যন্ত দূরে দূরে, কেন্দ্রীয় পত্রক মধ্যাংশের কাছে সাধারণতঃ সব চাইতে চওড়া, ৫.৫-২১.০ X ১.৫-৫.০ সেমি, গোড়া প্রতিসম, চওড়া কলকাকার হতে সকর্ণ,

প্রান্ত কস্টার দিকে ১/৩-২/৩ খন্ডিত, শীর্ষ গোলাকার অথবা দীর্ঘাগ্রী, খন্ড দূরে দূরে হতে কিছুটা অধিক্রমিত, গোড়ায় প্রায় ৬-৮ মিমি চওড়া, প্রান্ত সাধারণতঃ অখন্ড,

কখনো কখনো সূক্ষ্ম সভঙ্গ-ক্রকচ, শীর্ষ গোলাকার, সবচাইতে নিচের দুইটি পত্রক বহুমুখী বাকা অথবা বাকা নয়, কেন্দ্রীয় পত্রকের অনুরূপ।

অথবা এর গোড়ামুখী পার্শ্ব পক্ষবৎ খন্ডিত অথবা পুনরায় পক্ষল, ১-৮ মিমি বৃন্তযুক্ত, অগ্রস্থ খন্ড সরু ত্রিকোণাকার, শীর্ষ সাধারণতঃ হয় প্রলম্বিত অথবা বেত্রদন্ডের মত, উভয় পার্শ্বে গৌণ শিরা ৪-৬।

আরো পড়ুন:  গন্ধবেণা, গন্ধ তৃণ বা লেমন ঘাস বাংলাদেশে জন্মানো ভেষজ তৃণ

উর্বর পাতা ১৮-৮৫ সেমি লম্বা, পত্রদন্ড ৮-৫০ সেমি লম্বা, পত্রফলক ৮-৪০ X ২-১৩ সেমি, অগ্রস্থ খন্ডব্যতীত ৫-৩৫ সেমি, অগ্রস্থ খন্ড ১.৫-৭.০ সেমি লম্বা, পত্রক ১২-৩৫, ৭০ মিমি পর্যন্ত দূরে দূরে,

কেন্দ্রীয় পত্রক ১.৩-৬.০ x ০.৪-১.২ সেমি, প্রান্ত অখন্ড হতে সামান্য খন্ডিত, বিশেষ করে গোড়ার অংশে রেণুস্থলী সাধারণতঃ শিরার উপর অথবা শিরার কাছে সন্নিবিষ্ট রেণু মসৃণ ভাজযুক্ত-তরঙ্গিত পেরিস্পোর বিশিষ্ট।

ক্রোমোসোম সংখ্যা: n = ৪১ (Hennipman, 1977)।

আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার:

চিরহরিৎ অরণ্যে মাটি অথবা শিলায়, কখনো কখনো নিচু পরাশ্রয়ী। বংশবিস্তার হয় গ্রন্থিক এবং রেণু দ্বারা।

চিনা ঢেকিয়া-এর বিস্তৃতি:

চীন, ভারত, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, ক্যামবোডিয়া এবং জাভা । বাংলাদেশে চট্টগ্রাম জেলা থেকে এই প্রজাতি সংগ্রহ করা হয়েছে (Mirza et al., 2000)।

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ৫ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) চিনা ঢেকিয়া প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, আবাসস্থল ধ্বংসের কারণে বাংলাদেশে এটি সংকটাপন্ন।

বাংলাদেশে চিনা ঢেকিয়া সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির যথাস্থানে সংরক্ষণের প্রয়োজন।

তথ্যসূত্র:

১. মমতাজ মহল মির্জা (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ৭ম (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৩৬৫-৩৬৬। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

Leave a Comment

error: Content is protected !!