ঘণ্টাফুল দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহে জন্মানো আলংকারিক বিরুৎ

বিরুৎ

ঘণ্টাফুল

বৈজ্ঞানিক নাম: Campanumoea lancifolia (Roxb.)। Merr., Enum. Philipp. FI. Pl. 3: 587 (1923). সমনাম: Campanula lancifolia Roxb. (1824), Campanumoea celebica Blume (1826), Cyclocodon adantus Griff. (1854). ইংরেজি নাম: Large Bellflower, Great Bellflower. স্থানীয় নাম: ঘণ্টা ফুল ।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae. বিভাগ: Angiosperms. অবিন্যাসিত: Edicots. বর্গ: Arecales. পরিবার: Campanulaceae. গণ: Campanumoea  প্রজাতির নাম: Campanumoea lancifolia.

ভূমিকা: ঘণ্টাফুল (বৈজ্ঞানিক নাম Campanumoea lancifolia) ক্যাম্পানুলেসি পরিবারের বিরুৎ বিশেষ। দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহে জন্মে। নানা প্রকার ভেষজ গুণ আছে এই গাছে।

ঘণ্টাফুল-এর বর্ণনা:

রোম বিহীন বীরুৎ, ১২০ সেমি পর্যন্ত উঁচু, শাখা। প্রশাখা লালাভ সবুজ, ঝুলন্ত, প্রায়শ মাটির ওপর পতিত। পত্র প্রতিমুখ, সবৃন্তক, বৃন্ত ১.৫-১০.৫ মিমি লম্বা, রোম বিহীন থেকে খর রোমাবৃত,

পত্র ফলক ১.০-১১.৫ x ০.৫৪.৫ সেমি, উপবৃত্তাকৃতি-ডিম্বাকার থেকে ভল্লাকার, মূলীয় অংশ কর্তিতাগ্র থেকে লেজ বিশিষ্ট, শীর্ষাংশ সূক্ষ্মাগ্র থেকে দীর্ঘাগ্র, প্রান্ত দেঁতো।

পুষ্প একল বা দ্ব্যগ্র শাখা যুক্ত নিয়ত বিন্যাসে সন্নিবিষ্ট, পুষ্পবৃন্ত ৩-২২ মিমি লম্বা, রোম বিহীন, মঞ্জরীপত্র ১.৫-২.৫ মিমি লম্বা, ফলে ৪ মিমি পর্যন্ত বর্ধিত।

বৃতি গভকটি, রোম বিহীন, ভল্লাকার থেকে রৈখিক, দূর ব্যবধানে দেঁতো, দীর্ঘাগ্র। দলমন্ডল সাদা পরে ফিকে হলুদে পরিণত, চোঙ্গাকৃতি, নালি ২.০-২.৫ মিমি লম্বা, খন্ড ১.৫-৩.০ x ২.৫ মিমি, প্রশস্ত কৌণিক ডিম্বাকার, সূক্ষ্মাগ্র।

পুংকেশর ৫ টি, মুক্ত। গর্ভাশয় অর্ধঅধোগর্ভ, অর্ধগোলাকার থেকে গোলাকার, ৫-৬ প্রকোষ্ঠী, ব্যাস ৩-৬ মিমি, গর্ভদন্ড ২.০-৩.৫ মিমি লম্বা, গর্ভমুন্ডীয় খন্ড ৫-৬ টি, ১.৫-২.০ মিমি, সরু, দীর্ঘায়ত। ফল বেরি, ৬-১০ মিমি ব্যাস যুক্ত, গোলাকার, বীজ ক্ষুদ্র।

আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার:

ভিজা জায়গার উন্মুক্ত অরণ্য, জলাশয়ের নিকটবর্তী অঞ্চল ও পাহাড়ী ঢাল। ফুল ও ফল ধারণ সময়কাল সারাবর্ষ ব্যাপী। বংশ বিস্তার হয় বীজ দ্বারা।

ঘণ্টাফুল-এর বিস্তৃতি:

ভারত, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, মায়ানমার, ফিলিপাইন ও পাপুয়া নিউগিনি। বাংলাদেশের সিলেট, হবিগঞ্জ, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলায় পাওয়া যায়।

আরো পড়ুন:  গন্ধবেণা, গন্ধ তৃণ বা লেমন ঘাস বাংলাদেশে জন্মানো ভেষজ তৃণ

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ৭ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) ঘণ্টা ফুল প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত।

বাংলাদেশে ঘণ্টা ফুল সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির বর্তমানে সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই।

তথ্যসূত্র:

১. এ বি এম রবিউল ইসলাম ও এ বি এম এনায়েত হোসেন (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ৭ম (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ১৫৮। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Vinayaraj

Leave a Comment

error: Content is protected !!