দেশি কনুর ভেষজ গুণসম্পন্ন বাহারি বিরুৎ প্রজাতি

বিরুৎ

দেশি কনুর

বৈজ্ঞানিক নাম: Crinum asiaticum L., Sp. Pl.: 419 (1753). সমনাম: Crinum toxicarium Roxb. (1832). ইংরেজি নাম: পয়জন বাল্ব, জায়েন্ট ক্রাইনাম লিলি। স্থানীয় নাম: দেশি কনুর, বড় কনুর, নাগডাল, সুখদর্শন।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae. বিভাগ: Angiosperms. অবিন্যাসিত: Rosids. বর্গ: Sapindales. পরিবার: Amaryllidaceae. গণ: Crinum  প্রজাতির নাম: Crinum asiaticum.

ভূমিকা: দেশি কনুর (বৈজ্ঞানিক নাম: Crinum asiaticum) অ্যামেরিলিডেসি পরিবারের বর্ষজীবী বিরুৎ। এর মধ্যে নানা ভেষজ গুণ আছে। এছাড়াও বাড়ি ও বাগানের শোভাবর্ধনের জন্য লাগানো হয়।

দেশি কনুর-এর বর্ণনা:

বৃহৎ শল্ককন্দ যুক্ত বহুবর্ষজীবী বীরুৎ। পত্র লম্বা, ১২ সেমি বা ততোধিক প্রশস্ত, প্রান্ত অখন্ড, পুষ্পবিন্যাস ১০-১৫ পুষ্প বিশিষ্ট আম্বেল। পুষ্প বৃহৎ, সাদা, রাত্রিতে সুগন্ধী। পুষ্পপুট খন্ড ৬, নিম্নাংশ যুক্ত হয়ে বৃহৎ, ঋজু, সবুজ নালি গঠন করে, নালি ৭-১০ সেমি লম্বা, পৃষ্ঠাবর্তী।

পুংকেশর ৬টি, পুষ্পপুট নালির মুখলগ্ন, পুংদন্ড সূত্রাকার, পরাগধানী দীর্ঘায়ত, ১.৫-২.৫ সেমি লম্বা। গর্ভপত্র ৩টি, সবুজ, গর্ভাশয় অধোগর্ভ, ৩-কোষী, গর্ভদন্ড একক, সূত্রাকার, গর্ভমুণ্ড অর্ধমুণ্ডাকার। ফল ক্যাপসুল, অনিয়মিত বিদারী। বীজ গোলাকার।

ক্রোমোসোম সংখ্যা: 2n = ২২ (Lubna et al., 2004)

আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার:

উপকূলবর্তী অঞ্চল, উদ্যান। ফুল ও ফল ধারণ সময়কাল মার্চ-আগস্ট। কন্দ দিয়ে নতুন চারা জন্মে বা বংশ বিস্তার হয়।

দেশি কনুর-এর বিস্তৃতি:

ভারতের উষ্ণাঞ্চল, শ্রীলংকা ও নেপাল। বাংলাদেশের সুন্দরবন ও চট্টগ্রামের উপকূলবর্তী অঞ্চলে ভাল জন্মে। উদ্যানেও এর চাষাবাদ চলছে।

অর্থনৈতিক ব্যবহার ও গুরুত্ব:

দৃষ্টি নন্দন পুষ্পের জন্য উদ্যানে চাষাবাদ হয়। কন্দে লাইকোরিন ক্রিনিডাইন ও হায়ামাইন (Ghani, 2003) নামক উপক্ষার বিদ্যমান। তিক্ত কন্দ রোচক ও বলবর্ধক।

কাশি উপসমে, পৈত্তিক রোগে ও মূত্রস্রাবে এটি ব্যবহৃত। বীজ রোচক, মূত্রবর্ধক ও বলবর্ধক। পত্র চর্মপীড়ায় উপকারী (Sinha, 1996)।

জাতিতাত্বিক ব্যবহার: কর্ণপীড়ায় পাতার ব্যবহার উল্লেখ আছে।

আরো পড়ুন:  আদা হচ্ছে জিঞ্জিবার গণের ছোট কন্দজ ঔষধি বীরুৎ

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ১১ খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) দেশি কনুর প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত।

বাংলাদেশে দেশি কনুর সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির বর্তমানে সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই।

তথ্যসূত্র:

১. এম এ হাসান (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ১১ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৩৬০। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Forest & Kim Starr

Leave a Comment

error: Content is protected !!