ভূমিকা: মিষ্টি কুমড়া (বৈজ্ঞানিক নাম: Cucurbita maxima) বাংলাদেশের প্রায় সব জেলাতে জন্মে। এছাড়াও ভেষজ চিকিৎসায় কাজে লাগে।
মিষ্টি কুমড়া-এর বর্ণনা:
বর্ষজীবী আরোহী বীরুৎ। কান্ড বেলনাকার, প্রলম্বিত, খাঁজযুক্ত। আকর্ষ ২-৬ খন্ডিত, সামান্য কুর্চ যুক্ত পত্র মোটামুটি তাম্বুলাকার, ৬ – ১৯ x ৭-৩০ সেমি, ৫ খন্ডিত, খন্ড সরু গোলাকার, রুক্ষরোম যুক্ত, প্রান্ত সূক্ষ্ম দন্তুর, বৃন্ত ১০-২০ সেমি লম্বা, রোমশ। উদ্ভিদ সহবাসী।
পুংপুষ্প: মঞ্জরী দন্ড ১০-১৬ সেমি লম্বা, রোমশ, বৃতিনল মুগুর আকৃতির, ৫-১০ মিমি লম্বা, খন্ড ৫টি, রৈখিক, রোমশ, দলমন্ডল হলুদ, নলাকৃতি, ৪-৭ সেমি লম্বা, ঘন্টাকার, খন্ড ৫টি, ডিম্বাকৃতি গোলাকার, ২-৩ সেমি লম্বা, শীর্ষ স্থূলাগ্র, প্রান্ত কুঞ্চিত, পাশ্চামুখী বক্র, পুংকেশর ৩টি, পুংদন্ড ৫-৮ মিমি লম্বা, রোমশ বিহীন বা মূলীয় অংশ রোমশ, পরাগধানী ১২-১৬ মিমি লম্বা, যুক্ত।
স্ত্রীপুষ্প : মঞ্জরীদন্ড ৫-৭ সেমি লম্বা, একল, বৃতি ও দলমন্ডল পুংপুষ্পের বৃতি ও দলমন্ডলের অনুরূপ, বন্ধ্যা পুংকেশর ৩টি, গর্ভাশয় ডিম্বাকার, গর্ভদন্ড খাটো, গর্ভমুন্ড ২-খন্ডিত। ফল বৃহৎ, আকার, আকৃতি ও রং পরিবর্তনশীল, রসালো অংশ আঁশ যুক্ত। বীজ ২০-২৪ x ১২-১৪ মিমি, ডিম্বাকার, অস্পষ্ট প্রান্ত, সাদা বা হলুদ।
ক্রোমোসোম সংখ্যা : 2n = ৪০ (Whitaker, 1930).
আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার:
মুক্ত রৌদ্রকরোজ্জ্বল ভূখন্ড। ফুল ও ফল ধারণ সময়কাল মার্চ-অক্টোবর। বীজ দ্বারা বংশ বিস্তার হয়।
মিষ্টি কুমড়া-এর বিস্তৃতি:
বিশ্বের উষ্ণ ও নাতিশীতোষ্ণ দেশ সমূহে চাষকরা হয়। আদিনিবাস বলিভিয়া, দক্ষিণ পেরু এবং উত্তর আর্জেন্টিনা। বাংলাদেশের সর্বত্র চাষাবাদ করা হয়।
ভেষজ ব্যবহার:
পাতা, ফুল ও ফল সবজিরূপে খাওয়া হয়। কচি কান্ড ও পাতা সালাদরূপে উত্তম। বীজ কৃমিনাশক, মূত্রবর্ধক ও টনিক। ফোড়া ও পোড়া ঘায়ে ফলের রসালো অংশ ব্যবহার করা হয়। বীজ থেকে উৎপন্ন তেল স্নায়ুরোগে উপকারী।
জাতিতাত্ত্বিক ব্যবহার:
গিনির অধিবাসীরা ফলের রসালো অংশ সেঁক দেয়া ও শীতলতা দানকারী রূপে ব্যবহার করে। পোড়া ও স্ফীত অঙ্গেও তারা ফলের নরম অংশ দ্বারা প্রলেপ দেয়।
অন্যান্য তথ্য:
বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ৭ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) মিষ্টি কুমড়া প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত।
বাংলাদেশে মিষ্টি কুমড়া সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির চাষাবাদ প্রয়োজন নেই।
তথ্যসূত্র:
১. এম অলিউর রহমান (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ৭ম (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৩১০-৩১১ আইএসবিএন 984-30000-0286-0
বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Fernando Lopez-Anido – Universidad Nacional Rosario, Argentina
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।