মহা ডেনড্রোবিয়াম দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার অর্কিড

অর্কিড

মহা ডেনড্রোবিয়াম

বৈজ্ঞানিক নাম: Dendrobium nobile Lindl., Gen. Sp.Orch. Pl.: 24 (1830). সমনাম: Dendrobiurn coerulescens Wall. (1838), Dendrobiur lindleyanum Griff. (1851), Dendrobium nobile Lindl. var. formosanum Reichb. f. (1883), Callista nobilis (Lindl.) 0. Kuntze (1891), Dendrobium nobile virginale Rolfe, Dendrobium nobile var. alboluteum Huyen & Aver.. ইংরেজী নাম: জানা নেই । স্থানীয় নাম: জানা নেই। জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস জগৎ/রাজ্য: Plantae বিভাগ: Angiosperms অবিন্যাসিত: Monocots বর্গ: Asparagales পরিবার: Orchidaceae গণ: Dendrobium প্রজাতি: Dendrobium nobile

মহা ডেনড্রোবিয়াম (বৈজ্ঞানিক নাম: Dendrobium nobile) অর্কিড পরিবারের ডেন্ড্রোবিয়াম গণের বিরুৎ। এর সৌন্দর্যের কারণে এরা জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনানুসারে রক্ষিত অর্কিডের তালিকায় তফসিল-৪ অনুযায়ী এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।

বর্ণনা:

মহা ডেনড্রোবিয়াম উদ্ভিদ বৃক্ষাশ্রয়ী বা শৈলাশ্রয়ী, বৃহদাকার ঝাড় সৃষ্টি করে, মূল গুচ্ছাকার, কাষ্ঠল। কান্ড গুচ্ছাকার, ঘন, পাদদেশ স্ফীত, সীথে আবৃত, শশ্রুময়, ঢেউখেলানো থেকে কিঞ্চিৎ আঁকাবাকা, প্রান্তসহ খাজকাটা, সন্ধিত, হলুদাভ, ৫০ সেমি পর্যন্ত লম্বা, ২.৫ – ৩.৫ x ০.৫-১.২ সেমি, সীথ নলাকার, ২৪ সেমি লম্বা। পাতা আয়তাকার থেকে চমসাকার, খাতা, বহু-শিরাল, অবৃন্তক, চর্মবৎ, দ্বি-সারি, স্থায়ী, ৭.০-১৩.৫ x ১-৩ সেমি।

পুষ্পমঞ্জরী পার্শ্বীয়, পর্ব থেকে উৎপন্ন হয়, ২৪টি পুষ্প বিশিষ্ট, মঞ্জরীদন্ড ক্রমসরু, পাদদেশ সহপত্রী, প্রতিটি পর্ব ১টি পুষ্প বিশিষ্ট, ০.৬-১.৫ সেমি লম্বা, মঞ্জরীদন্ড এবং মঞ্জরীপত্র ডিম্বাকার, ঝিল্লিময়, পুষ্পক মঞ্জরীপত্র আয়তাকার-ডিম্বাকার, স্থূলা, শুষ্ক ঝিল্লি সদৃশ,নলাকার, ৭-৮ মিমি লম্বা। পুষ্প বিভিন্ন ধরণের, মোমের আস্তরণ বিশিষ্ট, সুগন্ধিময়, আড়াআড়িভাবে ৬-৮ সেমি, বৃত্যংশ এবং পাপড়ির পাদদেশ সাদা এবং উপরের দিকটা ক্রমশ বিবর্ণ বেগুনি বর্ণের, লিপের পাদদেশ খয়েরি বর্ণের, ক্রমশ হলুদ বা সাদা এবং বিবর্ণ বেগুনি থেকে বেগুনি কিনারা বিশিষ্ট। বৃত্যংশ আয়তাকার-বল্লমাকার, প্রায় তীক্ষা বা স্থূলাগ্র, ৭-শিরাল, ৩.০-৪.৫ x ০.৮-১.৬ সেমি, পার্শ্বীয় বৃত্যংশ সমূহ পাদদেশে যুক্ত হয়ে মেন্টাম গঠন করে, মেন্টাম খাটো, স্থূলা, ৩-৪ মিমি লম্বা। পাপড়ি ডিম্বাকারআয়তাকার, স্থূলা, কিনারা কিঞ্চিৎ ঢেউখেলানো, ৭শিরাল, ৩-৪ x ১.৬-২.৫ সেমি। লিপ সরল, খাটো বৃন্ত বিশিষ্ট, পাদদেশ পৃষ্ঠাবর্তী, ডিম্বাকার-আয়তাকার, উপরের পৃষ্ঠ এবং নিম্ন পৃষ্ঠ রোমশ, কিনারা অখন্ড, ৩.০-৪.৫ x ২৩ সেমি। কলাম তীক্ষাগ্র স্টেলিডিয়া বিশিষ্ট, ৭-৯ মিমি লম্বা, পরাগ টুপির সম্মুখ ভাগ অণু একচ। ফুল ধারণ ও মার্চ-মে (Pearce and Cribb, 2002).

আবাসস্থল ও চাষাবাদ:

উষ্ণ ও ঘন বড় পাতার অরণ্যে বৃক্ষাশ্রয়ী, নদীর পাথুরে উপত্যকা, সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ৩৩০-২০০০  মিটার উচ্চতায়। মূলাকার কান্ডসহ কান্ড পৃথকীকরণের মাধ্যমে প্রজাতির বিস্তার লাভ করে। গৃহের শোভাবর্ধের জন্য চাষ করা হয়।

বিস্তৃতি:

ভারত, মায়ানমার, ভুটান, চীন, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনাম। বাংলাদেশে এই প্রজাতিটি ঢাকা শহর থেকে রিপোর্ট করা হয়েছে (Seidenfaden, 1985).

অর্থনৈতিক ব্যবহার ও গুরুত্ব: সুদৃশ্য পুষ্পের জন্য প্রজাতিটির উদ্যানতাত্বিক গুরুত্ব আছে।

জাতিতাত্বিক ব্যবহার:

প্রজাতিটি চীনা ম্যাটেরিয়া মেডিকায় একটি বহুমূল্য ঔষধ হিসেবে বিবেচিত, ন্যূনপক্ষে Han Dynasty (200 B.C.-A.D. 200) এর পর থেকে (Kimura and Migo, 1936).  

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ১২তম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) মহা ডেনড্রোবিয়াম প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের সংকটের কারণ দেখা হয়েছে পোষক বৃক্ষ ধ্বংস এবং বাংলাদেশে এটি মহাবিপন্ন হিসেবে বিবেচিত। ১৯৪৫ সনের পর আর কোন সংগ্রহের রেকর্ড নেই। বাংলাদেশে হাসি-মুখোশী ডেনড্রোবিয়াম সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে প্রজাতিটি পুনরায় খুঁজে পেতে ত্বরিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।[১]

তথ্যসূত্র:

১. এম কে হুদা (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস”  আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ১০ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৫০। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিপিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Maja Dumat

আরো পড়ুন:  ফাইশ্যা উদাল বাংলাদেশের রক্ষিত মহাবিপন্ন উদ্ভিদ

Leave a Comment

error: Content is protected !!